এক ত্যাগী নেতার বঞ্চিত হওয়ার গল্প শোনালেন নানক
১৪ মার্চ ২০২১ ১০:৫৮ | আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২১ ১২:৫৬
ঢাকা: স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয় প্রতীকে হওয়ায় প্রার্থীদের অংশগ্রহণ কমছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই স্থানীয় প্রভাবশালী নেতৃবৃন্দের পছন্দের লোক দলীয় মনোনয়ন নিয়ে রাতারাতি জনপ্রতিনিধি হয়ে যাচ্ছেন। বিপরীতে বঞ্চনার গল্প তৈরি হচ্ছে দলে। জীবনযৌবন দলের জন্য ব্যয় করেও জীবন সায়াহ্নে দলের সুদিনেও বঞ্চিত হচ্ছেন একদল ত্যাগী নেতাকর্মী। সারাবাংলাকে এমনই এক ত্যাগী নেতার বঞ্চিত হওয়ার গল্প শোনালেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক।
তার বলা গল্পটা ছিল এমন, ‘‘একবার আমার কাছে একজন স্কুল শিক্ষক আসলেন। প্রায় ২৮ বছর শিক্ষকতা করেছেন এবং প্রধান শিক্ষক হিসাবে তিনি অবসরে (রিটার্য়ারমেন্টে) গেছেন। এই ভদ্রলোক বিএনপির আমলে বিপুল ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। কিন্তু সেই ব্যক্তিটির নাম আসেনি স্থানীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের পাঠানো মনোনয়ন প্রত্যাশীদের তালিকায়। জীবন সায়াহ্নে এসে দাড়ানো বয়োবৃদ্ধ মুক্তিযোদ্ধা মানুষটি, আমার কাছে এসে কাঁদছিলেন। অঝোরে বাচ্চা ছেলের মতো কাঁদছিলেন। ওই ব্যক্তির দাবি, আমি চেয়ারম্যান হইলাম বিএনপির ক্ষমতার আমলে। গতবার আমাকে বলা হল তুমি এবার ছেড়ে দাও, আগামীবার পাবা। কিন্তু এইবার আমার নামটা দেওয়া হলো না। আমাকে মূল্যায়ন করা হলো না। আমি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলাম। আমি এক টার্ম চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছি দক্ষতা ও সততার সঙ্গে। মানুষ আমাকে চায় কিন্তু স্থানীয় প্রভাবশালী নেতারা তার নামটা পাঠাননি। এখন এই বিষয়গুলি আমাদের বোর্ডের বিবেচনায় আনতে হবে।’
এমন গল্প একটা দুইটা না, অসংখ্য। নানক বলেন, এখন একটা ট্রেন্ড হয়ে গেছে এমপি সাব, উপজেলা চেয়ারম্যান সাব বা উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রেসিডেন্ট-সেক্রেটারি তাদের ভাগিনা-ভাতিজাকে ক্ষমতায় আনতে চান। নিজেদের শক্তি বাড়াতে প্রয়োজনে বাড়ির চাকরকেও (কাজের লোক) ক্ষমতায় বসাতে চান। এটা দলের জন্য, গণতন্ত্রের জন্য, নির্বাচনের জন্য এবং শক্তিশালী স্থানীয় সরকার গঠনের ক্ষেত্রেও একটি অশুভ সংবাদ ও অশুভ পদক্ষেপ।
এসব বিষয়ে দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আলাপ করবেন জানিয়ে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, মাননীয় নেত্রী এসব বিষয়কে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করেন। গত পৌরসভা নির্বাচনে এমন অনেক বয়োজেষ্ঠ্য নেতাদের নেত্রী নমিনেশন দিয়েছেন। যারা হয়ত আর বেশিদিন বাঁচবেন না। তারা দীর্ঘদিন দল করেছেন, দলের জন্য জেল খেটেছেন, ১৫ আগস্টের পর জেল খেটেছেন, অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করেছেন। ঘর সংসার সব ধ্বংস করে দিয়েছেন, এই দলটা করতে গিয়ে। জীবন সায়াহ্নে এসে দলের কাছ থেকে কি একটি পুরস্কার পেতে পারে না?
সারাবাংলা/এনআর/এএম