তদন্ত দল ক্যাম্পাসে গিয়ে দেখল ভিসি কলিমউল্লাহ নেই
১৪ মার্চ ২০২১ ১৮:০২
রংপুর: বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহসহ তার সহযোগীদের অনিয়ম দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে শতাধিকেরও বেশি অভিযোগ তদন্ত করতে বিশ্ববিদ্যালয় এসেছেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) একটি তদন্ত দল।
অনিয়ম দুর্নীতি তদন্তে গঠিত তদন্ত কমিটি প্রধান ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দের নেতৃত্বে রোববার (১৪ মার্চ) দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন তদন্ত দল। তদন্ত দলে রয়েছেন সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. আবু তাহের। এ ছাড়াও সাচিবিক দায়িত্ব পালন করবেন ইউজিসির জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব জামাল উদ্দীন এবং আমিরুল ইসলাম। বর্তমান তদন্ত কমিটির প্রতিনিধি দল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভার কক্ষে অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে অভিযুক্তদের সাক্ষ্যগ্রহণ করছেন।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ইউজিসির তদন্ত কমিটি আসলেও বরাবরের মতো আজও বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেননি উপাচার্য। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
এর আগে, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ভিসি নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহসহ সহযোগিতাকারীদের অনিয়ম-দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতা তদন্তের জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করে ইউজিসি।
তদন্ত এসেই প্রথমে সাংবাদিকদের সঙ্গে তদন্ত নিয়ে কথা বলেন। এ সময় তদন্ত কমিটির প্রধান ড. বিশ্বজিৎ চন্দ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহসহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে শিক্ষক সমিতির দেওয়া ১৮টি, অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের দেওয়া ১১টি, শিক্ষকদের সংগঠন বঙ্গবন্ধু পরিষদের দেওয়া ৪৫ টি এবং সবশেষ অধিকার সুরক্ষা পরিষদ নামে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সংগঠনের দেতা ১১০টি অভিযোগ তদন্ত করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘অভিযোগকারীদের দেওয়া প্রমাণ ও অভিযুক্তদের সাক্ষ্য নিয়ে আমরা তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করব।’
তিনি বলেন, ‘উপাচার্য রাষ্ট্রপতির দেয়া যে নির্দেশনা ও আইন যে মানছেন না, নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগের কারণসহ অন্যান্য বিষয়গুলো রয়েছে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পোমেল বড়ুয়া বলেন, ‘উপাচার্য শিক্ষার্থীদের সাথে প্রতারণা করেছেন। বিভিন্ন আশ্বাস দিয়েছেন মুখে মুখে কিন্তু বাস্তবায়ন করেননি। তদন্ত কমিটি ক্যাম্পাসে আসলেও উপাচার্যের অনুপস্থিতি প্রমাণ করে তিনি সত্যের মুখোমুখি হতে ভয় পান।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান বলেন, ‘উপাচার্য রাষ্ট্রপতির দেওয়া যে নির্দেশনা মানেন না এটা সবার অজানা নয়। যার বিরুদ্ধে আজ তদন্ত কমিটি তদন্ত করতে এসেছে তিনিই আজ অনুপস্থিত এটি আরও একটি অনিয়ম। কারণ উপাচার্যের নৈতিক অবস্থানটি নেই যে তদন্ত কমিটির সামনে মুখোমুখি হওয়ার।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকারদলীয় শিক্ষকদের সংগঠন নীল দলের সভাপতি ড. নিতাই কুমার ঘোষ বলেন, ‘উপাচার্য যে অনিয়মগুলো করেছেন তা কেচো খুঁড়তে গিয়ে সাপ বেরিয়ে আসছে। উপাচার্যের উচিৎ অতিদ্রুত পদত্যাগ করা।’
শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি ড. তুহিন ওয়াদুদ বলেন, ‘উপাচার্য ঢাকায় বসে তার অনিয়ম দুর্নীতির বিষয়ে যেসব মিথ্যাচার করছেন তা প্রমাণিত। আজ উপাচার্যের ক্যাম্পাসে উপস্থিত থাকা নৈতিক দায়িত্ব ছিল। সরকারের উচ্চপর্যায়ের গঠিত তদন্ত কমিটি ভালো একটা তদন্ত প্রতিবেদন দেবেন আশা করছি। প্রতিবেদনের আলোকে উপাচার্যসহ দুর্নীতির সহযোগীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে এটা প্রত্যাশা করি।’
সারাবাংলা/একে