দেশে বিদেশি বিনিয়োগে নেদারল্যান্ডস তৃতীয়: ডিসিসিআই সভাপতি
১৫ মার্চ ২০২১ ০০:৫৬
ঢাকা: বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডসের মধ্যেকার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্পর্কের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেছেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি রিজওয়ান রাহমান। তিনি জানিয়েছেন, বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণের দিক থেকে নেদারল্যান্ডস তৃতীয়।
রিজওয়ান বলেন, ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশ-নেদারল্যান্ডস দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১ দশমিক ২৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বাংলাদেশের আমদানি ও রফতানির পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ১৩৮ দশমিক ৩৩ ও ১০৯৮ দশমিক ৬৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। তবে কোভিড-১৯ মহামারির কারণে গত অর্থবছরে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ২০১৮-১৯ অর্থবছরের চেয়ে প্রায় ১৪ শতাংশ কমেছে।
রোববার (১৪ মার্চ) বাংলাদেশে নিযুক্ত নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত হ্যারি ভ্যারওয়ে ডিসিসিআই সভাপতি রিজওয়ান রাহমানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এলে ডিসিসিআই সভাপতি এসব কথা বলেন। ঢাকা চেম্বার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সাক্ষাৎ অনুষ্ঠানে ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহসভাপতি এন কে এ মবিন, সহসভাপতি মনোয়ার হোসেন এবং নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের ফাস্ট সেক্রেটারি বাস বয় উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি বলেন, বাংলাদেশ মূলত তৈরি পোশাক, হিমায়িত মাছ এবং চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য নেদারল্যান্ডসে রফতানি করে। বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি হারে তৈরি পোশাক ও পরিবেশবান্ধব পাট ও পাটজাত প্রভৃতি পণ্য আমদানি করতে তিনি আহ্বান জানান।
রিজওয়ান রাহমান আরও বলেন, বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগের দিক থেকে নেদারল্যান্ডস তৃতীয় স্থানে রয়েছে। বর্তমানে খাদ্য, জ্বালানি, সিমেন্ট, তৈরি পোশাক ও টেক্সটাইলের মতো খাতে নেদারল্যান্ডসের উদ্যোক্তারা প্রায় ১ দশমিক ৪৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ করেছে, যা বাংলাদেশে মোট বৈদেশিক বিনিয়োগের প্রায় ৮ শতাংশ।
নদী ও পানি ব্যবস্থাপনায় নেদারল্যান্ডসের দক্ষতার বিষয়টি উল্লেখ করে ডিসিসিআই সভাপতি বিশেষ করে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বাংলাদেশের অন্যান্য বিভাগীয় শহরগুলোর পানি, পয়ঃনিষ্কাশন ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় নেদারল্যান্ডসের বেসরকারি উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগের প্রস্তাব করেন। এছাড়াও বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি, নদী ব্যবস্থাপনা ও নদী শাসন, ডিজিটাল শিল্পখাত এবং সমুদ্র অর্থনীতি অত্যন্ত সম্ভাবনায় হিসেবে উল্লেখ করে এসব খাতে বিনিয়াগে নেদারল্যান্ডসের উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
সাক্ষাতে নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত হ্যারি ভ্যারওয়ে বাংলাদেশকে স্বল্পন্নোত দেশ থেকে উত্তরণের সুপারিশ গৃহীত হওয়ার অভিনন্দন জানান। তবে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে তিনি বৈদেশিক বিনিয়োগ ও রফতানি পণ্যের বহুমুখীকরণের ওপর জোর দেন।
এছাড়াও ইউরোপীয় বাজারে বাংলাদেশের জিএসপি প্লাস সুবিধা অব্যাহত রাখার জন্য বাংলাদেশের কুটনৈতিক কার্যক্রম আরও বাড়ানো প্রয়োজন বলে মত দেন ভ্যারওয়ে। একইসঙ্গে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে ব্র্যান্ডিং কার্যক্রম সম্প্রসারণের আহ্বান জানান তিনি।
রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের কৃষি, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, পোল্ট্রি ও ডেইরী, ড্রেজিং, ফিন্যান্সিয়াল টেকনোলোজি (ফিনটেক) এবং মেরিটাইম প্রভৃতি খাত ডাচ বিনিয়োগকারীদের জন্য অত্যন্ত সম্ভাবনাময়।
সারাবাংলা/জিএস/টিআর
ডিসিসিআই সভাপতি নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত রিজওয়ান রাহমান হ্যারি ভ্যারওয়ে