ডিএমপির নির্দেশনায় বিস্মিত বিএনপি!
১৫ মার্চ ২০২১ ১৭:০৪
ঢাকা: আগামী ১৭ থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত ১০ দিন ঢাকায় রাজনৈতিক কর্মসূচির বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) নির্দেশনায় বিস্ময় প্রকাশ করেছে বিএনপি।
সোমবার (১৫ মার্চ) গুলশানে দলটির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ বিস্ময় প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ‘রোববার (১৪ মার্চ) ডিএমপির ভারপ্রাপ্ত কমিশনারের নির্দেশনা আমাদের বিস্মিত করেছে। কারণ, সরকারি প্রোগ্রামের সঙ্গে আমাদের প্রোগ্রামের কোনো কনফোনট্রেশন নেই। তারা তাদের প্রোগ্রাম করবে, আমরা আমাদের প্রোগ্রাম করব। আমাদের রাজনৈতিক দল ও অন্যান্য সামাজিক প্রতিষ্ঠান সুর্বণজয়ন্তী পালনের জন্য যেসব অনুষ্ঠান হাতে নিয়েছে সেগুলো যেন বাধাগ্রস্থ না হয়, সেজন্য অবিলম্বে এই নির্দেশনা প্রত্যাহারের অনুরোধ জানাচ্ছি।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘শুধু তাই নয়, তিনি (মনিরুল ইসলাম) বলেছেন যে, এন্টি ন্যাশনাল প্রোগ্রামস। এটা কেন বলেছেন? কীভাবে বলেছেন?— সেটার একটা ব্যাখ্যা আমরা জানতে চাই। ‘নো ওয়ান শোড হোল্ড দেট- হি সেইড, ওয়াট হি সেইড- এন এন্টি ন্যাশনাল প্রোগ্রাম। ওয়াট ডাজ মিন বাই এন্টি ন্যাশনাল প্রোগ্রাম? উনি কী বুঝাচ্ছে এটা আমাদেরকে ব্যাখ্যা করে বলতে হবে। আমরা বুঝতে পারছি না, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপান করা বা পালন করা কি এন্টি ন্যাশনাল প্রোগ্রাম? তারা (সরকার) ছাড়া আর কেউ করতে পারবে না— এটা কোন ধরনের চিন্তাভাবনা থেকে আসছে আমরা বুঝতে পারছি না।’
১৭ মার্চ থেকে ২৬ মার্চ রাষ্ট্রীয়ভাবে নেওয়া কর্মসূচির প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এটা তো অবশ্যই সরকারি প্রোগ্রাম হবে। বিদেশ থেকে রাষ্ট্রীয় মেহমানরা আসবেন। আমরা যথা সম্ভব নিঃসন্দেহে সেটাকে সহযোগিতা করব। এটা আমাদের জাতির সন্মানের প্রশ্ন, এটা আমাদের মর্যাদার প্রশ্ন– আমরা অবশ্যই সেটাকে সেভাবে দেখব। কিন্তু হঠাৎ করে ডিএমপি থেকে এই ধরনের নির্দেশনা আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালনের যে উদ্দেশ্য, সেটাকে ব্যাহত করবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা খুব পরিষ্কার করে যে কথাটা বলতে চাই, বিএনপি হচ্ছে সত্যিকার অর্থেই স্বাধীনতার যোদ্ধাদের দল, মুক্তিযোদ্ধাদের দল। একাত্তর সালে বিএনপি ছিল না। শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন, স্বাধীনতার ঘোষক। তিনি এই দল পরে প্রতিষ্ঠা করেছেন গণতন্ত্রকে পুনঃপ্রবর্তন করবার জন্যে, প্রতিষ্ঠা করবার জন্য।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি সব সময়ই মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করে। মূল চেতনা যেটা ছিল সেটাকে বিশ্বাস করে, জনমানুষের যে আকাঙ্ক্ষা সেটাকে সামনে রেখে গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য বিএনপি কাজ করে আসছে, করেছে। বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে বিএনপি। সংসদীয় গণতন্ত্র নিয়ে এসেছে বিএনপি। বাক স্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছে বিএনপি। জনগণের যে কথা বলার অধিকার সেই অধিকার নিশ্চিত করেছে বিএনপি। গণতন্ত্রের মৌলিক বিষয়গুলো বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেছে।’
‘আমাদের দুর্ভাগ্য ৫০ বছর পর যখন আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করতে যাচ্ছি তখন বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই, মানুষের অধিকার হরণ করা হয়েছে, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। দেশে একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রবর্তন করবার জন্য একটা নীলনকশা প্রতিষ্ঠা করতে চলেছে’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটির আহবায়ক ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আবদুস সালামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বরচিত কবিতা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা কমিটির কর্মসূচি তুলে ধরেন কমিটির সদস্য সচিব আবদুল হাই শিকদার।
কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে— ১৬ থেকে ৩০ মে উপজেলা ও থানা পর্যায়ে, ১ জুলাই থেকে ৩১ সেপ্টেম্বর জেলা পর্যায়ে, অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত বিভাগীয় পর্যায়ে এবং ২০২২ সালের ২৬ মার্চ জাতীয়ভাবে সমাপনী কর্মসূচি করবে এই কমিটি। শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্কন, স্বরচিত কবিতা ও ছড়া, আবৃত্তিকারদের আবৃত্তি, শিশু-কিশোর, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে উপস্থিত বক্তৃতা এবং কুইজ প্রতিযোগিতা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্বরচিত কবিতা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা কমিটির সদস্য মজিবর রহমান সারওয়ার, নজরুল ইসলাম মনজু, ফরিদা ইয়াসমীন, রিয়াজ উদ্দিন নসু, আরিফুর রহমান মোল্লা, শায়রুল কবির খান, শাহজাহান মিয়া সম্রাট, রিটা আলী, মনিরুজ্জামান মনির, এনামুল হক জুয়েল, মিজানুর রহমান, রফিক লিটন প্রমুখ।
সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম