নামি-দামি ব্র্যান্ডের মোড়কে নকল পণ্য, গ্রেফতার ৩
১৬ মার্চ ২০২১ ১৭:৪৬
ঢাকা: দেশে প্রচলিত বিভিন্ন নামি-দামি ব্র্যান্ডের মোড়ক নকল করে অবৈধ উপায়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য প্যাকেটজাত করে বিক্রি করে আসছিল একটি চক্র। এমন অভিযোগে ওই চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
মঙ্গলবার (১৬ মার্চ) বিকেলে সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন চক্রের কার্যক্রম এবং তাদের গ্রেফতারের বিষয়টি তুলে ধরেন অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ ওমর ফারুক।
তিনি জানান, দীর্ঘদিন বাজারে নকল পণ্য সরবরাহকারী চক্রকে ধরতে সিআইডি অভিযান অব্যাহত রেখেছিল। গতকাল সে ধারাবাহিকতায় পণ্যে নকল ও ভেজাল চক্রের তিন জনকে যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গ্রেফতার তিন জন হলেন— জাহিদুল ইসলাম (৩৫), আব্দুর কাদের (২৫) ও ইউনুছ আলী (১৯)। এসময় নকল পণ্য তৈরির মেশিন ও ভেজাল পণ্য বাজারজাত করতে প্যাকটজাত প্রায় ১৫ লাখ ৩৪ হাজার টাকা মূল্যের সরঞ্জাম ও পণ্য জব্দ করা হয়।
সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ ওমর ফারুক বলেন, গ্রেফতার চক্রটি বাজারে প্রচলিত বিভিন্ন কোম্পানির মোড়ক নকল করে ভেজাল পণ্য বাজারে ছাড়তে। তাদের তৈরি করা পণ্যটি নকল না আসল, তা জোঝার সুযোগ থাকত না সাধারণ ভোক্তার। এমনকি দোকানদাররাও বুঝতে পারত না যে এসব পণ্য নকল।
তিনি বলেন, চক্রটি নামি-দামি কোম্পানির প্যাকেটের সঙ্গে মিল রেখে নতুন মোড়ক তৈরি করত। যেমন— সার্ফ এক্সেল ডিটারজেন্টের নামের সঙ্গে মিল রেখে তারা তৈরি করেছে সুপার এক্সেল। কিন্তু প্যাকেটর রঙ ও বাকি সব তথ্য একই। খুব গভীরভাবে যাচাইবাছাই না করলে সাধারণ ভোক্তারা এটি ধরতে পারবেন না।
সিআইডি কর্মকর্তা বলেন, তারা নকল মোড়কে ভেজাল পণ্য প্যাকেটজাত করে বাজারে ছেড়েছিল— এমন বেশ কয়েকটি পণ্য জব্দ করেছে সিআইডি। তার মধ্যে মিয়াজিপুর চা নামে ৪ হাজার ৮৬৪টি প্যাকেট, সুপার এক্সেল ডিটারজেন্ট নামে ৬ হাজার ১২০ প্যাকেট, চকোচকো চকলেট ৪ হাজার পিস, পালস চকলেট ৫ হাজার ৪০০ পিস, নিউ টাইগার ডিটারজেন্ট পাউডার ৩ হাজার ৭৩৬ প্যাকেট, সুপার ড্রাই সিলিকা জেল ২৪ হাজার প্যাকেট, হাই স্পিড ললিপপ ৭৫টি, রোবু ড্রিংকস ১০০টি রোবট ড্রিংকস ৬৫টিসহ প্রায় ১২ ধরনের ভুয়া পণ্য জব্দ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে একটি মিক্সার মেশিন, একটি প্যাকিং মেশিন, সাতটি পা সিলিং মেশিন, ১৫টি সিলিকা রোল এবং চার কেজি সিলিকা গুঁড়াসহ বেশকিছু মেশিন ও কাঁচামাল জব্দ করা হয়েছে।
সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ ওমর ফারুক বলেন, সাধারণ ভোক্তাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে তারা দীর্ঘদিন ধরে এ ধরণের কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিল। কিন্ত তারা যেসব কোম্পারির নাম দিয়ে বাজারে এসব পণ্য ছেড়েছে, তার কোনো বিএসটিআইয়ের অনুমোদন নেই। অর্থাৎ তাদের কর্মকাণ্ড সম্পূর্ণ অবৈধ। তারা এমন প্রতারণা শুরুর আগে বিভিন্ন কোম্পানিতে চাকরি করত, সেখান থৈকেই এসব পণ্য তৈরির প্রক্রিয়া তারা শিখেছিল।
সিআইডি বলছে, চক্রটির সঙ্গে আরও বেশ কয়েকজন জড়িত রয়েছে বলে জানা গেছে। তাদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে এবং ভেজাল পণ্যের বিরুদ্ধে সিআইডির তৎপরতা অব্যাহত থাকলে বলে জানিয়েছেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন— সিআইডির ঢাকা মেট্টোর বিশেষ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ কামরুজ্জামান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জীবন কান্তি সরকার।
সারাবাংলা/এসএইচ/টিআর