Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আন্দোলন-সংগ্রামের কালজয়ী মহানায়ক বঙ্গবন্ধু

নৃপেন রায়, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১৭ মার্চ ২০২১ ০০:০১

ঢাকা: স্বাধীন বাংলাদেশের আন্দোলন সংগ্রামের ইতিহাসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০১তম জন্মবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী অনন্য মাইলফলক। বাংলাদেশ সৃষ্টিতে বঙ্গবন্ধুর অনন্য ভূমিকাই এই মাইলফলক তৈরির অন্যতম নিয়ামক। তার এই অবদানের কথা বাংলাদেশ যতদিন থাকবে ততদিন প্রতিধ্বনিত হবে।

উপনিবেশ-উত্তর আমলে বাংলাদেশই একমাত্র ভূখণ্ড যেখাকার মানুষ নৃতাত্ত্বিক-ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা লাভ করেছে। এর আগে এশিয়া, আফ্রিকা এবং লাতিন আমেরিকার কোথাও এ ধরনের জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের মাধ্যমে স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম হয়নি। আমাদের স্মরণীয় সাফল্য এই যে, আমরা মাত্র ২৪ বছরের মধ্যে পাকিস্তানের উপনিবেশ থেকে মুক্ত হতে পেরেছিলাম।

বিজ্ঞাপন

জনগণের মন ও চাহিদা বুঝতে পারা এবং বুঝে উপযুক্ত কর্মসূচির মাধ্যমে এগিয়ে আসাই হচ্ছে নেতৃত্বের যোগ্যতা। সেই যোগ্যতায় শেখ মুজিবুর রহমান কোনোদিন ব্যর্থ হননি। নেতৃত্বের গুণে তিনি মহান নেতায় রূপান্তরিত হয়েছেন। তিনি নিজেকে ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই করে নিয়েছেন স্বমহিমায়।

আইয়ুব খান ক্ষমতা দখলের পর বহুবার চেষ্টা করেছে দুর্নীতির দায়ে শেখ মুজিবের বিরুদ্ধে মামলা করে কারাগারে আটকে রাখতে। কিন্তু দুর্নীতির প্রমাণ না পাওয়ায় তাকে ছেড়ে দিতে হয়েছে। জেল থেকে বের হয়েই জনতার নেতা জনতার আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন। শেখ মুজিব বুঝতে পেরেছিলেন পাকিস্তানের এই অঞ্চল শোষণ-বঞ্চনার শিকার হচ্ছে। ১৯৪৭-এ পাকিস্তান যখন প্রতিষ্ঠিত হয়, বাংলার গর্ভনর তখন ব্রিটিশ সরকারকে জানিয়েছিলেন, এই যে দুই টুকরো পাকিস্তান হচ্ছে, এর পূর্ব অংশ কিন্তু ২০ বছরের বেশি পশ্চিম অংশের সঙ্গে থাকবে না। সেটার প্রতিফলন হলো- ২৫ বছরের মধ্যে স্বাধীন রাষ্ট্র হয়ে গেছে। এই যে পূর্বাঞ্চল বঞ্চিত এবং পশ্চিমের সঙ্গে থাকতে পারবে না তা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব মননে অঙ্কুরিত ছিল। যা স্বাধীনতা সংগ্রাম আন্দোলনের নেতৃত্বের মধ্য দিয়ে রূপ লাভ করে।

বিজ্ঞাপন

এ কারণে সময়ের সঙ্গে আন্দোলন-সংগ্রামের দৃঢ়চেতা, একাগ্রতা, একনিষ্ঠ নেতৃত্বগুণের ‘মুজিব ভাই’ একটি সাধারণ সম্মোধন থেকে অনন্য সাধারণ বঙ্গবন্ধু, বঙ্গবন্ধু থেকে মহানায়ক, মহানায়ক থেকে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হয়েছেন। বাঙালির স্বাধীন রাষ্ট্রীয় সত্তার প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধু। সেই হিসেবে তিনি মহানায়ক, মহান রাষ্ট্রনায়কও। একটি স্বাধীন ভূ-খণ্ডের মানবগোষ্ঠীকে তার স্বাধীন সত্তায় প্রতিষ্ঠিত করতে একজন রাষ্ট্রনায়কের যে গুণাবলী প্রয়োজন তার সব গুণই বঙ্গবন্ধুর মধ্যে ছিল। এই ভারতীয় উপমহাদেশটাই ছিল ব্রিটিশের উপনিবেশ। ব্রিটিশের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার জন্য অনেকেই লড়াই করেছেন। পরাধীনতার মুক্তি আকাঙ্ক্ষা জাগিয়ে তুলেছেন। সেই প্রক্রিয়ায় যারা নেতৃত্ব দিয়েছেন, তারা সবাই একটি সাধারণ নেতৃত্বের পর্যায় থেকে একেবারে মহান নেতার পর্যায়ে পৌঁছেছেন। বঙ্গবন্ধুও তা-ই। স্বাধীন জাতিসত্তার দাবি আদায়ে দীর্ঘ কারাবাসের মুখে দৃঢ় মনোবল বঙ্গবন্ধুকে করে তুলেছিল জীবন্ত কিংবদন্তিতে।

খোকা মুজিবের জীবনধারা গোপালগঞ্জের সাধারণ গ্রামাঞ্চল থেকে উঠে একেবারে কলকাতা পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। তখনকার মহানগরী কলকাতায় ছাত্র আন্দোলনে তিনি আত্মনিয়োগ করেন। সাধারণ মানুষের মধ্যে থাকতে থাকতে যে যোগ্যতা ও গুণাবলী গড়ে উঠেছিল, তার একটা পরিশীলিত অর্থাৎ নাগরিক চরিত্রের রূপ তাকে এভাবেই নেতৃত্বের মহানায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

দেশভাগের পর কলকাতা থেকে ঢাকায় আসেন মুজিব। ঢাকায় এসে মুসলিম লীগের শাসন ও শোষণের বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রাম। বঙ্গবন্ধু তার অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে বলেছেন, ঢাকায় এসে তাদের প্রথম কাজই ছিল সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে আন্দোলন করা। যেটাকে কেন্দ্র করে পাকিস্তান আন্দোলনটা গড়ে উঠেছিল। ১৯৪৮-৪৯ সালের দিকেই শেখ মুজিবসহ অন্যরা একটি সংগঠন গড়ে তুলেছিলেন। সেটা বঙ্গবন্ধু তার অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে লিখেছেন। তারা গণতান্ত্রিক যুবলীগ প্রতিষ্ঠা করেন। এই যুবলীগে তখন অনেকেই ছিলেন।

বঙ্গবন্ধু আসলেই বাংলার সাধারণ মানুষের নাড়ির স্পন্দন বুঝতে পেরেছিলেন। তিনি সাধারণ মানুষের চিন্তাভাবনা এবং তাদের যে দুঃখ, কষ্ট, দুর্দশা- তা থেকে মুক্ত করার আকঙ্ক্ষা থেকে সাহস করে মানুষকে আন্দোলনের পথে উদ্বেলিত করেন, আন্দোলিত করেন। শেখ মুজিব যখন ছাত্রনেতা, যুবনেতা এবং তিনিই আওয়ামী লীগের নেতা- যিনি প্রতিটি ক্ষেত্রে সেই সময়কার অন্যদের চেয়ে অনেক বেশি অগ্রসর ছিলেন।

বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলায় ছাত্রদের মিটিং চলছে, ২১ ফেব্রুয়ারি ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করা হবে কি না তা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। শেখ মুজিবুর রহমান তখন হাসপাতালে কারারুদ্ধ। ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে সিদ্ধান্ত নেয় ১৪৪ ধারা ভাঙার। কিন্তু যে রাজনৈতিক নেতারা এই আন্দোলনের জন্য সর্বদলীয় ভাষাসংগ্রাম পরিষদ করেছিলেন, তারা ওই রাতে আবার এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছিলেন। কিন্তু জেলখানা থেকে শেখ মুজিবুর রহমান হাসপাতালে থাকা অবস্থায় অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছেন। হয়তো শেখ মুজিবের ভাবনা ছিল, জনগণ যদি কোনো আন্দোলনে এগিয়ে যায়, তখন কোনো নেতা যদি সেখান থেকে পিছিয়ে পড়েন বা থেমে যান, তাহলে তিনি কিন্তু জনগণের আস্থা হারান এবং নেতৃত্বে থাকেন না। শেখ মুজিবুর রহমান জীবনে কোনোদিন এই ক্ষেত্রে ব্যর্থতার পরিচয় দেননি।

১৯৫৪ সালের নির্বাচনের আগে নানা টানাপোড়েনে এক পর্যায়ে যুক্তফ্রন্ট ভেঙে যাচ্ছিল। সেই টালমাটাল সময়ে শেখ মুজিবুর রহমান যুক্তফ্রন্টের পক্ষে সর্বাত্মক সমর্থন দিয়ে দাঁড়িয়ে যান। আবার ১৯৫৪ সালের নির্বাচনের পর যখন মুসলিম লীগ বা পাকিস্তানের স্বার্থবাদী গোষ্ঠী আদমজীতে দাঙ্গা লাগায়, সেই দাঙ্গা প্রতিরোধের জন্য প্রথম এগিয়ে এসেছিলেন একজন, তিনি শেখ মুজিবুর রহমান। এই অগ্রণী ভূমিকার জন্য শেখ মুজিব সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বঙ্গবন্ধুতে রূপান্তরিত হয়েছেন। তাই বঙ্গবন্ধু মণি সিংহ, খোকা রায়ের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, এটা (বিভক্তি) না করলে কিছু হবে না। কমিউনিস্ট নেতারাও একমত হয়েছিলেন। কিন্তু তারা বলেছিলেন, সময় এখন এসেছে কি না তারা নিশ্চিত নন। বামপন্থী নেতারা যখন ঠিক বুঝতে পারছেন না যে সময় এসেছে কি না, শেখ মুজিব তখন ঠিকই বুঝতে পেরেছিলেন, সময় যদি এখন না-ও এসে থাকে সেটাকে আনতে হবে। সে অনুযায়ীই কর্মপন্থা নিয়ে এগিয়ে গেলেন তিনি।

বঙ্গবন্ধু তার অসমাপ্ত আত্মজীবনী থেকে জানা যায়, তিনি বুঝতে পারলেন মুসলিম লীগের এই কর্তৃত্ববাদী শাসনের বিরুদ্ধে একটি সংগঠিত বিরোধীদল গড়ে তুলতে হবে। সেই বোধ থেকেই ১৯৪৯ সালে আওয়ামী লীগের জন্ম হয়। বঙ্গবন্ধু প্রথমে দলের যুগ্ম সম্পাদক, পরে ১৯৫৩ সালে সাধারণ সম্পাদক এবং ১৯৬৬ সালে সভাপতি হন। ১৯৫৪ সালের পূর্ববঙ্গ প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে মুসলিম লীগবিরোধী যুক্তফ্রন্ট (যার প্রধান দল ছিল আওয়ামী লীগ) জয়ী হলেও পাকিস্তান সরকার ৯০ দিনের মধ্যে সেই যুক্তফ্রন্ট সরকার ভেঙে দিয়ে বাঙালির ওপর কেন্দ্রের শাসন চাপিয়ে দেয়। এরপর ১৯৫৮ সালে সরাসরি সামরিক শাসন জারি করা হয়। এ ধরনের অগণতান্ত্রিক ব্যবহার বাঙালিকে স্বাধীনতার চেতনায় দারুণভাবে উজ্জীবিত করে। বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী থেকে আরও জানা যায়, তিনি আশা করেছিলেন লাহোর প্রস্তাবের ভিত্তিতে পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তাানে দুটি মুসলিমপ্রধান রাষ্ট্র গঠিত হবে। ১৯৫০ সালেই আওয়ামী লীগ এক জাতীয় কনভেনশনে শাসনতন্ত্রের রূপরেখা প্রচার করে।

১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্টের ২১ দফা ইশতেহার প্রচার করা হয়েছিল। সেখানে কেবল কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে প্রতিরক্ষা, পররাষ্ট্র ও মুদ্রা থাকার কথা বলা হয়েছিল। এ ধারাবাহিকতায় ১৯৬৬ সালের ছয় দফা আন্দেলনে এই স্বায়ত্তশাসনের দাবিকে আরও জোরালো করে। ষাটের দশকজুড়ে পাকিস্তাান সামরিক সরকারের অধীনে ছিল। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ বা সীমিত হয়েছিল। নেতাদের অনেকেই বেশিরভাগ সময় কারাগারে ছিলেন। তবে এর মধ্যেও বাঙালি জাতীয়তাবাদী আন্দোলন সফলভাবে এগিয়ে যায়।

১৯৬০-এর দশকের প্রথম থেকেই বঙ্গবন্ধুসহ কিছু তরুণ রাজনৈতিক নেতাকর্মী পাকিস্তান থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র গঠনের চিন্তা শুরু করেন। সেই পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধুর ছয় দফার দাবি পূর্ব বাংলাকে প্রায় স্বাধীন করার দাবি। ছয় দফা আন্দোলনের সময় প্রথম শ্রমিক শ্রেণি এবং শহরের বস্তিবাসীকে জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে নামতে অংশ নেন। সারাদেশে এই আন্দোলনের পেছনে ব্যাপক জনসমর্থন দেখে পাকিস্তান সরকার বুঝে ফেলেছিল যে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধুকে কারাবন্দী করা হয় এবং তার বিরুদ্ধে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দেওয়া হয়। এই কারণেই ১৯৬৯ সালের ছাত্র আন্দোলন অনিবার্য হয়ে ওঠে। ছাত্র আন্দোলন ১১ দফা দাবি উত্থাপন করে। সারাদেশে গণআন্দোলনের মুখে পাকিস্তানিরা বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়।

১৯৬৯ সালে আইয়ুব শাহীর পতনের পর জেনারেল ইয়াহিয়া ক্ষমতায় এসে ১৯৭০ সালে নির্বাচন দিতে রাজি হলেন। ১৯৬৯-৭০ সালের নির্বাচনি প্রচারণাকালে বঙ্গবন্ধু নজিরবিহীন জনসংযোগের মাধ্যমে গোটা জাতিকে স্বাধিকারের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ করে তোলেন। নির্বাচনের প্রচারের সময় বঙ্গবন্ধু পূর্ববঙ্গকে বাংলাদেশ হিসেবে উল্লেখ করতে লাগলেন এবং তার দলের পক্ষ থেকে বিভিন্ন জাতীয়তাবাদী প্রতীক ও স্লোাগান ব্যবহৃত হতে থাকল। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে জাতীয় পরিষদের ১৬৯ আসনের মধ্যে ১৬৭টি আসন পেল আওয়ামী লীগ। ফলে বঙ্গবন্ধু জাতীয় পরিষদের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা হয়ে কেন্দ্রীয় সরকার গঠনের বৈধতা পান। প্রাদেশিক পরিষদেও তার দল বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়।

১৯৭১ সালের মার্চ মাসজুড়ে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাঙালিদের নজিরবিহীন ঐক্য গড়ে ওঠে। ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু যখন অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন, তখন সারাদেশের মানুষ, এমনকি সরকারি কর্মচারীরাও সে ডাকে সাড়া দেন। মার্চের প্রথম সপ্তাহ থেকে বঙ্গবন্ধুই বাংলাদেশের কার্যত সরকারপ্রধান হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। এই অনুভূতিই তাদের মুক্তিযুদ্ধে অস্ত্র হাতে ঝাঁপিয়ে পড়তে অনুপ্রাণিত করেছিল।

১৯৬৯-৭০ সালের নির্বাচনি প্রচারণার মাধ্যমে তিনি এই স্বাধীনতার স্বপ্ন দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়েছিলেন। স্বাধীনতার বীজমন্ত্র বাংলার আকাশে-বাতাসে ধ্বনিত করতে পেরেছিলেন। তাই  ‘এক নেতা এক দেশ, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ’ স্লোগানের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে কেন্দ্র করে বাঙালির আলাদা রাষ্ট্র ও জাতিসত্তা গঠনের প্রত্যয় শপথে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ওঠে। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে জনগণের আস্থা ছিল বলেই আওয়ামী লীগ ১৯৭০ সালের নির্বাচনে অভূতপূর্ব ম্যান্ডেট পায়। এই অভূতপূর্ব জনসমর্থনের জন্যই তিনি ১৯৭১ সালে শান্তিপূর্ণভাবে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর হাত থেকে নিজের হাতে ক্ষমতা গ্রহণ করতে পেরেছিলেন। লাখ লাখ বাঙালি তার আদেশের অপেক্ষায় ছিল এবং একমাত্র তার নির্দেশই তাদের কাছে গ্রহণযোগ্য ছিল। তাই স্বাধীনতার ঘোষণা বঙ্গবন্ধুর নামেই ঘোষিত হয়েছিল। নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধও হয়েছিল তার অবর্তমানেই।

বঙ্গবন্ধুর নির্বাচনি বিজয় ও বিপুল জনসমর্থন তার নেতৃত্বে আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রামকে বৈধতা দেয়। আমরা জাতীয়তাবাদী সংগ্রামের সবচেয়ে কঠিন সময় পার করেছি ১৯৭১ সালে। লাখ লাখ মানুষ গণহত্যার শিকার হয়েছিল, মা-বোনদের উপর পাশবিক নির্যাতনের আর্তচিৎকারে আকাশ-বাতাস ভারী হয়েছিল। কিন্তু সমগ্র জাতি স্বাধীনতার লক্ষ্যে ছিল অবিচল। আর অসম্ভবকে বাস্তব রূপ দিয়েছিলেন ইতিহাসের রাখাল রাজা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

সারাবাংলা/এনআর/পিটিএম

আন্দোলন-সংগ্রাম জাতির জনক জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বঙ্গবন্ধুর ১০১তম জন্মবার্ষিকী ভাষা আন্দোলন মুক্তিযুদ্ধ স্বাধীনতা সংগ্রাম

বিজ্ঞাপন

খেজুর আমদানিতে শুল্ক কমলো
২২ নভেম্বর ২০২৪ ২১:০৮

আরো

সম্পর্কিত খবর