খাস জমি দখল করে ভবন নির্মাণ, উচ্ছেদের দাবি স্থানীয়দের
১৭ মার্চ ২০২১ ০৯:৫৯
রাজবাড়ী: জেলার সদর উপজেলার খানখানাপুর বাজার এলাকায় সরকারি খাস জমি দখল করে পাকা ভবন নির্মাণ করছেন পার্শ্ববর্তী মন্দির কমিটির নেতৃবৃন্দ। এরই মধ্যে ভবন নির্মাণের প্রায় ৯০ ভাগ সম্পন্ন করেছেন তারা। সরকারি খাস জমি উদ্ধার করে প্রকৃত ভূমিহীনদের মধ্যে বন্দোবস্ত দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
মঙ্গলবার (১৬ মার্চ) দুপুরে চূড়ান্ত প্রকাশিত বি,এস রেকর্ড পর্যালোচনা করে এবং স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন জানা যায়, খানখানাপুর মৌজার বি,এস ৩৩০৩ নম্বর দাগের ৫ শতাংশ সরকারি খাস জমির ওপর ‘শ্রী শ্রী অন্নপূর্ণা দেবী মন্দির’ নামে একটি মন্দির রয়েছে। মন্দিরের পাশেই ৩৩০৪ নম্বর দাগে রয়েছে আরও ২২ শতাংশ সরকারি খাস জমি। ওই জমির কিছু অংশে কাইয়ুম শেখ ও স্বপন কুমার দত্ত নামে ভূমিহীন দুই ব্যক্তি দীর্ঘ ৪০-৫০ বছর ধরে বাড়ি-ঘর নির্মাণ করে পরিবার নিয়ে বসবাস করে আসছেন। এছাড়া বাকি অংশ দীর্ঘদিন ধরে খানখানাপুর হাটের জমি হিসেবে ব্যবহার হচ্ছিল। প্রতি হাটবারে ওই জমিতে নানা ধরনের শাক-সবজির চারা, ধানের চারা ও পেঁয়াজের চারা বিক্রি হয়।
তবে, সম্প্রতি ওই ২২ শতাংশ জমির কিছু অংশ দখল করে ছাদ দিয়ে একটি ভবন নির্মাণ করছেন মন্দির কমিটির সভাপতি কাশিনাথ কুণ্ডু ও সাধারণ সম্পাদক নব কুমার দত্ত। কোনো প্রকার বন্দোবস্ত বা জেলা প্রশাসকের অনুমতি না নিয়েই তারা সরকারি খাস জমিতে ভবন নির্মাণ করছেন। এরই মধ্যে ভবন নির্মাণের প্রায় ৯০ ভাগ সম্পন্ন করেছেন তারা। এছাড়া ওই জমি থেকে বড় আকারের কয়েকটি মেহগনি গাছ কেটে বিক্রির অভিযোগও রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।
স্থানীয় কাইয়ুম শেখ বলেন, কাশিনাথ কুণ্ডু ও নব কুমার দত্তের নেতৃত্বে মন্দির কমিটির লোকজন সরকারি ২২ শতাংশ খাস জমির অনেকটাই দখল করে রেখেছেন। খাস জমির ওপর নির্মাণ করেছেন মন্দিরের গেইট। প্রতি শুক্র ও মঙ্গলবারে এখানে পেঁয়াজ, রসুন ও ধানের চারা বিক্রি হয়। সম্প্রতি তারা হাটের এ খাস জমিতে পাকা ভবন নির্মাণ করেছেন এবং ওই জমি থেকে বড় আকারের কয়েকটি মেহগনি গাছ বিক্রি করেছেন। ভবনটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলে তারা ভাড়া দিবেন। প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কেউ ভয়ে কথা বলে না। কেউ তাদের বিরুদ্ধে কথা বললে তাকে বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হতে হতে হয়।
নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে স্থানীয় কয়েকজন বলেন, আমরা চাই প্রশাসন সরকারি খাস জমি উদ্ধার করে প্রকৃত ভূমিহীনদের মধ্যে বন্দোবস্ত দিক। এতে ভূমিহীনরা উপকৃত হবে, সরকারও রাজস্ব পাবে।
এ বিষয়ে মন্দির কমিটির সভাপতি কাশিনাথ কুণ্ডু বলেন, আমরা ভবন নির্মাণের অনুমতি চেয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেছি। অনুমতি পেলে ভবন নির্মাণ করব।
জেলা প্রশাসকের অনুমতি এখনো পাননি। তাহলে ভবন নির্মাণ কাজের ৯০ ভাগ কাজ সম্পন্ন করলেন কিভাবে- এই প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি কাশিনাথ।
রাজবাড়ী সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরিফুর রহমান বলেন, আমি খবর পেয়ে ওখানে যাই। যেহেতু ওটা সরকারের খাস খতিয়ানভুক্ত জমি (খানখানাপুর মৌজার ১নং খতিয়ানের ৩৩০৪নং দাগ) এবং সেখানে উপস্থিত অনেকেই জানান খানখানাপুর হাটবারে এখানে হাট বসে। সেহেতু র্নিমাণ কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেই। ভবন নির্মাণের অনুমতির ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মহোদয় আমাকে কোনো নির্দেশনা দেননি।
সারাবাংলা/এনএস