জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার প্রতিজ্ঞা প্রধানমন্ত্রীর
১৭ মার্চ ২০২১ ১৮:২১
ঢাকা: জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠান থেকে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলার প্রতিজ্ঞা জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে এই সোনার বাংলা গড়তে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
এখনো দেশে-বিদেশে বাংলাদেশবিরোধী অপশক্তি তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এই জন্মদিনে আসুন, সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে সব অপতৎপরতা রুখে দিয়ে আমাদের মাতৃভূমিকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যাই। আসুন, ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে সোনার বাংলা গড়ে তোলার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখি।
বুধবার (১৭ মার্চ) জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০১তম জন্মবার্ষিতে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ‘মুজিব চিরন্তন’ প্রতিপাদ্য নিয়ে আয়োজিত ১০ দিনের বর্ণিল উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত আছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত আছেন মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতি ইব্রাহিম মোহামেদ সলিহ্’। আরও উপস্থিত আছেন মালদ্বীপের ফার্স্ট লেডি ফার্স্ট লেডি ফাজনা আহমেদ।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এখন আমাদের শুধু এগিয়ে যাওয়ার পালা। পেছনে তাকানোর কোনো সুযোগ নেই। সব বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে জাতির পিতার স্বপ্নের শোষণ-বঞ্চনামুক্ত অসাম্প্রদায়িক সোনার বাংলা হিসেবে বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠা করব— এটাই আজকের প্রতিজ্ঞা।
দেশ ও মানুষের জন্য জাতির পিতার সংগ্রামের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন মানুষের জন্য। সেই সংগ্রামের পথ বেয়েই আমরা অর্জন করেছি স্বাধীনতা। যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি দেশ, শত শত বছরের পরাধীনতার গ্লানি, শোষণ-বঞ্চনার শিকার একটি জাতি— এমন একটি দেশকে বিশ্বের বুকে মর্যাদাসম্পন্ন একটি দেশ হিসেবে গড়ে তোলার কঠিন দায়িত্ব পালন করেছিলেন জাতির পিতা। অসাধ্য সাধন করেছিলেন তিনি। মহান মুক্তিযুদ্ধের পর বন্ধুপ্রতিম যেসব দেশ ও রাষ্ট্রনায়েকরা বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন, তাদের প্রতি জানাই কৃতজ্ঞতা।
শেখ হাসিনা বলেন, অনেক স্বপ্ন ছিল জাতির পিতার। তিনি সবসময় চেয়েছেন, বাংলাদেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলবেন। কিন্তু সেই সুযোগ তিনি পাননি। ঘাতকের নির্মম বুলেট পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট তাকে কেড়ে নেয় আমাদের মাঝ থেকে। এরপর অনেক সংগ্রামের পথ বেয়ে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের বুকে এগিয়ে যাচ্ছে, দেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির প্রতীক্ষার অবসান ঘটতে যাচ্ছে।
বাংলাদেশের উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার জন্য জাতিসংঘের সুপারিশের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এমন একটি সময়ে আমরা জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর এই আয়োজন উদযাপন করছি, যখন বাংলাদেশে বিশ্বের বুকে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে মর্যাদাপূর্ণ উন্নয়নশীল দেশ উন্নীত হওয়ার ক্ষেত্রে জাতিসংঘের চূড়ান্ত সুপারিশ লাভ করেছে। মাথাপিছু আয়, দারিদ্র্য হ্রাস, খাদ্য উৎপাদন, গড় আয়ুসহ সব অর্থনৈতিক সূচকেই বাংলাদেশ যোজন যোজন এগিয়ে গিয়েছে। গত ১২ বছরে সরকারে থেকে আমাদের নিরলস প্রচেষ্টা ও জনগণের সহায়তাতেই এই প্রাপ্তি। আমি জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি যে তারা আমাকে তাদের সেবা করার সুযোগ করে দিয়েছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আজকের বাংলাদেশ যে অবস্থানে পৌঁছেছে, সেখান থেকে আর অবনমন করানো বা নামানো যাবে না। আমরা করোনাভাইরাসের মতো বৈশ্বিক মহামারিও সফলভাবে মোকাবিলা করেছি। তবে আমাদের সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।
‘মুজিব চিরন্তন’ প্রতিপাদ্যে আয়োজিত ১০ দিনের অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধনী দিনে উপস্থিত থাকার জন্য বিশেষ অতিথি মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতি ইব্রাহিম মোহামেদ সলিহ্ ও ফার্স্ট লেডি ফাজনা আহমেদকে বিশেষ ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে ভিডিওবার্তা দিয়ে শুভেচ্ছা জানানোয় চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগা’র প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।
সারাবাংলা/এনআর/টিআর