বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আজ বাস্তব: ট্রুডো
১৭ মার্চ ২০২১ ২০:৫৮
ঢাকা: জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, সেই স্বপ্ন আজ বাস্তবে রূপ নিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে সবাইকে অভিনন্দন জানিয়ে ট্রুডো বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান এই স্বপ্ন (ভিশন) দেখেছিলেন বলেই বাংলাদেশ আজ এই বিশেষ দিনটি উদযাপন করতে পারছে। তিনি একটি স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখতেন, যা আজ বাস্তবে পরিণত হয়েছে।
বুধবার (১৭ মার্চ) জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে পাঠানো এক ভিডিওবার্তায় কানাডার প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। জনগণকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতেন বলেই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবে রূপ পেয়েছে বলেও এসময় মন্তব্য করেন তিনি।
আরও পড়ুন-
- ভারতীয়দের কাছে বঙ্গবন্ধু একজন বীর: মোদি
- সময় এখন শুধু সামনে এগিয়ে যাওয়ার: প্রধানমন্ত্রী
- জাতির জনকের স্মৃতি ও স্মারক সংরক্ষণের আহ্বান রাষ্ট্রপতির
- জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার প্রতিজ্ঞা প্রধানমন্ত্রীর
- সেদিন প্রকৃতির নিয়মে সূর্য উঠেছিল, সে সূর্যের নাম শেখ মুজিব
করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে এই উদযাপনে সশরীরে উপস্থিত হতে পারেননি বলে বার্তায় বলেন ট্রুডো। তবে ভিডিওবার্তার মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে তিনি সবার প্রতি শুভকামনা জানান।
ট্রুডো বলেন, ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে এই আনন্দ উৎসবে সামিল হয়েছি। এই আয়োজনে আমাকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য, বাংলাদেশের জাতির পিতার ১০১তম জন্মশতবার্ষিকীর এই ক্ষণে সবার সঙ্গে যুক্ত হতে পারার সুযোগ দেওয়ার জন্য আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানাই। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর এই ক্ষণে আমি বাংলাদেশের সব নাগরিককে অভিনন্দন জানাই।
ট্রুডো জানান, ১৯৮৩ সালে যখন তিনি শিশু, তখন বাবা পিয়েরে ট্রুডোর (কানাডার তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী) সঙ্গে বাংলাদেশ সফর করেছিলেন। ট্রুডো বলেন, আমার পিতার সঙ্গে শেখ মুজিবুর রহমানের দৃঢ় সম্পর্ক ছিল। ওই সময় থেকে দুই দেশ দৃঢ় সম্পর্ক বজায় রাখছে।
ওই সময়কার বাংলাদেশের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশকে মেলাতে পারছেন না উল্লেখ করে ট্রুডো বলেন, গত ৫০ বছরে বাংলাদেশ অভূতপূর্ব উন্নতি করেছে। এই সময়ে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বেড়েছে, দারিদ্র্য কমেছে, শিক্ষার হার বেড়েছে এবং স্বাস্থ্যসেবার সম্প্রসারণ ঘটেছে। এতে দেশের জনগণের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি হয়েছে। একজন ব্যক্তির কারণে ইতিহাসে দীর্ঘস্থায়ী পরিবর্তন যে সম্ভব, সেটি শেখ মুজিবুর রহমান করে দেখিয়েছেন।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের যে আমূল পরিবর্তন, এই পথযাত্রায় কানাডাও অংশীদার। আমরা বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধিতে অবদান রেখেছি। নারী ক্ষমতায়নসহ বিভিন্ন উন্নয়নে আমরা সহায়তা করছি। শিশুস্বাস্থ্য ও শিক্ষা, যুব সম্প্রদায়ের জন্য দক্ষতা বৃদ্ধিসহ অন্যান্য কাজেও বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে কানাডা অঙ্গীকারাবদ্ধ।
জনগণের স্বার্থকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়ার কারণেই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবে পরিণত হয়েছে উল্লেখ করে জাস্টিন ট্রুডো আরও বলেন, আজ যখন আমরা আমাদের সময়ের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি, তখন আমাদেরও— নেতা হিসেবে ও একজন নাগরিক হিসেবেও একই কাজ করতে হবে। একসঙ্গে কাজ করতে পারলে আমরা পরবর্তী প্রজন্মের জন্য উন্নততর একটি বিশ্ব তৈরি করতে পারব।
কানাডার জনগণের পক্ষ থেকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে অফুরন্ত শুভকামনা জানান ট্রুডো।
অনুষ্ঠানে চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিন পিং ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইউশিহিদে সুগা’র ধারণ করা ভিডিওবার্তা প্রদর্শন করা হয়। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সাংবাদিক মার্ক টালিও একটি ভিডিওবার্তা পাঠিয়েছিলেন। সেটিও প্রদর্শন করা হয় অনুষ্ঠানে।
সারাবাংলা/টিআর
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বঙ্গবন্ধুর ১০১তম জন্মবার্ষিকী