‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সঙ্গে মেলবন্ধন গড়তে পারে চীনের স্বপ্ন’
১৭ মার্চ ২০২১ ২১:৫১
ঢাকা: জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে ‘সোনার বাংলা’র স্বপ্ন দেখেছেন, তার সঙ্গে চীন তাদের নবায়নের স্বপ্নের মেলবন্ধন ঘটাতে পারে বলে প্রত্যয় জানিয়েছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং।
তিনি বলেন, চীন ও বাংলাদেশ এখন পুনরুজ্জীবন ও উন্নয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তরে রয়েছে। চীন বৃহৎ জাতীয় নবায়নের স্বপ্ন দেখছে। এই স্বপ্ন জোরালোভাবে বঙ্গবন্ধুর ‘সোনার বাংলা’ স্বপ্নের সঙ্গে মেলবন্ধন গড়তে পারে।
বুধবার (১৭ মার্চ) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে দেওয়া এক ভিডিওবার্তায় তিনি এ কথা বলেন। জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে ১০ দিনব্যাপী বর্ণিল আয়োজনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এই ভিডিওবার্তা প্রচার করা হয়।
আরও পড়ুন-
- বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আজ বাস্তব: ট্রুডো
- ভারতীয়দের কাছে বঙ্গবন্ধু একজন বীর: মোদি
- সময় এখন শুধু সামনে এগিয়ে যাওয়ার: প্রধানমন্ত্রী
- জাতির জনকের স্মৃতি ও স্মারক সংরক্ষণের আহ্বান রাষ্ট্রপতির
- জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার প্রতিজ্ঞা প্রধানমন্ত্রীর
- সেদিন প্রকৃতির নিয়মে সূর্য উঠেছিল, সে সূর্যের নাম শেখ মুজিব
ভিডিওবার্তায় জাতির জনককে স্মরণ করে জিন পিং বলেন, নিজের পুরোটা জীবন তিনি দেশ ও জনগণের জন্য উৎসর্গ করেছিলেন। সে কারণেই এখনো বাংলাদেশের মানুষ শেখ মুজিবুর রহমানকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে। তিনি সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখেছিলেন। সেই স্বপ্ন এখনো বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষকে জাতীয় পুনরুজ্জীবনের দিকে ধাবিত করছে।
চীনের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথা ভিডিওবার্তায় তুলে ধরেন দেশটির প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, ১৯৫২ ও ১৯৫৭ সালে দুই বার চীন সফর করেছেন শেখ মুজিবুর রহমান। এসব সফরে তিনি চেয়ারম্যান মাও সে তুং ও প্রধানমন্ত্রী চৌ এন লাইসহ জ্যেষ্ঠ চীনা নেতাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব স্থাপন করেছিলেন।
বাংলাদেশ ও ছীনের মধ্যেতার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের বিষয়টি পরবর্তী প্রজন্মের কাছে ছড়িয়ে দেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন শি জিন পিং। তিনি বলেন, গত পাঁচ দশক ধরে বাংলাদেশ স্বাধীনতার দৃঢ় বিশ্বাসে অটল থেকেছে। একের পর এক চ্যালেঞ্জ এলেও সেগুলো মোকাবিলা করেছে। এর ফলে বাংলাদেশ জাতীয় অগ্রগতিতে করেছে উন্নতি ও সমৃদ্ধির দেখা পেয়েছে।
বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার কথাও ভিডিওবার্তায় তুলে ধরেন চীনা প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, ৬ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি ধরে রেখেছে বাংলাদেশ। এতে বাংলাদেশের জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়েছে, দারিদ্র্য বিমোচন হয়েছে। বৈশ্বিক দারিদ্র্য বিমোচনেও বাংলাদেশ ভূমিকা রেখেছে। বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী একটি হিসেবে বাংলাদেশের এই অগ্রগতিতে চীন খুব খুশি।
দুই দেশের মধ্যেকার সম্পর্কের কথা তুলে ধরে জিন পিং আরও বলেন, চীন ও বাংলাদেশের সম্পর্ক সবসময় বন্ধুত্বপূর্ণ ছিল। আমাদের ৪৬ বছরের কূটনৈতিক সম্পর্ক সবসময় আবর্তিত হয়েছে পারস্পরিক শ্রদ্ধার সম্পর্কে। আমরা দুই দেশই একে অন্যকে সহযোগিতা করেছি, আমরা একসঙ্গে এগিয়ে গিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আমি আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে কৌশলগত সহযোগিতার পর্যায়ে নিয়ে গেছি। বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম দেশ, যে দেশ ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ সহযোগিতার আন্তঃসরকার চুক্তিতে প্রথম সই করেছে। আমাদের এই সহযোগিতা দুই দেশের জনগণকে উপকৃত করছে।
দুই দেশের সম্পর্ককে আরও উন্নীত করার প্রত্যয় জানিয়ে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে আমি অত্যন্ত গুরুত্ব দিই। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে মিলে ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ সহযোগিতা, আমাদের উন্নয়ন কৌশল এবং কৌশলগত অংশীদারিত্ব নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাব।
অনুষ্ঠানে চীনের কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইউশিহিদে সুগা’র ধারণ করা ভিডিওবার্তা প্রদর্শন করা হয়। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সাংবাদিক মার্ক টালিও একটি ভিডিওবার্তা পাঠিয়েছিলেন। সেটিও প্রদর্শন করা হয় অনুষ্ঠানে।
সারাবাংলা/টিআর