রোজা অবস্থায় টিকা নেওয়ার ব্যাখ্যায় ইফার ডিজিকে আইনি নোটিশ
১৮ মার্চ ২০২১ ১৫:৫৯
ঢাকা: রোজার মধ্যে করোনাভাইরাসের টিকা নিলে রোজা ভঙ্গ হবে না মর্মে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের দেওয়া বিবৃতি তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রত্যাহার চেয়ে ফাউন্ডেশনের প্রতি আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। নোটিশে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক (বিজি) ও অতিরিক্ত সচিব মো. মুশফিকুর রহমানকে বিবাদী করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) মুহাম্মদিয়া জামিয়ার প্রধান গবেষক ও মোহাম্মদপুর তাজ জামে মসজিদের খতিব মুফতি আযম আবুল খায়ের মুহাম্মদ আযীযুল্লাহর পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এবিএম গোলাম মোস্তফা তাজ এ নোটিশ পাঠান।
এর আগে গত সোমবার (১৫ মার্চ) ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রোজা রেখে করোনাভাইরাসের টিকা গ্রহণ করা যাবে বলে জানায় ইসলামিক ফাউন্ডেশন।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, করোনাভাইরাসের টিকা মাংসপেশিতে গ্রহণ করা হয় এবং তা সরাসরি খাদ্যনালি ও পাকস্থলীতে প্রবেশ করে না। তাই রমজান মাসে রোজাদার ব্যক্তি দিনের বেলায় শরীরে করোনাভাইরাসের টিকা গ্রহণ করলেও রোজা ভাঙবে না।
এর পরিপ্রেক্ষিতে আইনি নোটিশে বলা হয়েছে, রোজাদার ব্যক্তি দিনের বেলায় শরীরে করোনাভাইরাসের টিকা গ্রহণ সম্পর্কিত এ ধরনের বিজ্ঞপ্তি ইসলামী শারীয়াতের পরিপন্থী। ইনজেকশন নিলে অবশ্যই রোজা ভঙ্গ হবে। কারণ, রোজা ভঙ্গের শর্তই হচ্ছে রোজাদার ব্যক্তির শরীরে কোনোকিছু প্রবেশ করা। ইনজেকশন দ্বারা প্রয়োগকৃত ওষুধ ভেতরে প্রবেশ করে এবং তা পাকস্থলী ও মগজে পৌঁছে যায়। যা রোজা ভঙ্গের মূল কারণ।
পবিত্র কোরআন শরীফে বলা হয়েছে, ‘আর যারা অসুস্থ বা মুসাফির, তারা অন্য সময় রোজা আদায় করে নেবে (বাক্বারা: ১৮৫)।`
নোটিশে বলা হয়, কোরআনের উদ্ধৃতি থেকে এটা স্পষ্ট যে, রোজাদার ব্যক্তি দিনের বেলায় শরীরে করোনাভাইরাসের টিকা গ্রহণ সম্পর্কিত এই ধরনের বিজ্ঞপ্তি, ইসলামী শরিয়াতের পরিপন্থী।
নোটিশে আরও বলা হয়েছে, সাংবিধানিকভাবে যেহেতু বাংলাদেশের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম, সুতরাং ইসলামী আকিদাসমূহ রাষ্ট্র দ্বারা সুরক্ষিত। বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে মুসলিমদের নিজ দ্বীন পালনের অধিকার রয়েছে। রোজা অবস্থায় যেকোনো ইনজেকশন বা টিকা নিলে রোজা ভঙ্গ হয়ে যায়। অথচ আপনারা ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে জনমনে বিভ্রান্তিকর সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিচ্ছেন এবং ইসলামী আকিদা তথা ঈমানের ওপর হস্তক্ষেপ করছেন। ফলে বাংলাদেশের মুসলিমদের তাদের সাংবিধানিক অধিকার ও পবিত্র কোরআন অনুযায়ী শরিয়ত পালনে বাধা সৃষ্টি করেছেন। একজন দায়িত্বশীল পদাধিকারী হিসেবে আপনার কাছে এটা মোটেও প্রত্যাশিত নয়।
নোটিশে বলা হয়েছে, মন্ত্রণালয় থেকে জারিকৃত উল্লেখিত সিদ্ধান্তসমূহ মুসলমানের অনুভূতিতে চরম আঘাত।
এ অবস্থায় নোটিশ পাওয়ার তিন (৩) কার্যদিবসের মধ্যে গত ১৫ মার্চ ধর্ম মন্ত্রণালয়ের জারি করা বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করার জন্য বলা হয়েছে। অন্যথায় বাদী সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
সারাবাংলা/কেআইএফ/এনএস