যুবলীগ নেতা জালাল হত্যা: ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড হাইকোর্টে বহাল
১৮ মার্চ ২০২১ ২১:৩৫
ঢাকা: গাজীপুরের কাপাসিয়ার যুবলীগ সভাপতি জালাল উদ্দিন সরকার হত্যা মামলায় বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া ১১ জনের মধ্যে পাঁচ জনের সাজা বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। বাকি ছয় জনের মধ্যে পাঁচ জনকে যাবজ্জীবন ও একজনকে খালাস দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) এ বিষয়ে আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শেষে বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল নির্মল কুমার দাস, সৈয়দা শবনম মুসতারি ও তরিকুল ইসলাম হিরা। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন, এস এম শাহজাহান, সারোয়ার হোসেন, আব্দুল বারেক চৌধুরী এবং রাষ্ট্র নিয়োজিত আইনজীবী হাফিজুর রহমান।
আদেশের বিষয়টি সারাবাংলাকে নিশ্চিত করে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ জানান, যুবলীগ নেতা জালাল উদ্দিন সরকার হত্যা মামলায় ২০১৫ সালের ৩০ নভেম্বর ১১ জনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছিলেন গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক ফজলে এলাহী ভূঁইয়া। এই আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন আসামিরা।
‘আজ (বৃহস্পতিবার) বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া ১১ জনের মধ্যে পাঁচ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল এবং পাঁচ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আর এজাহারে নাম না থাকা এবং প্রত্যক্ষ সাক্ষী না থাকায় একজনকে খালাস দেওয়া দিয়েছেন হাইকোর্ট,’— বরেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল।
হাইকোর্টের রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন— কাপাসিয়া থানা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফারুক হোসেন, যুবদলের থানা সদস্য জজ মিয়া, থানা ছাত্রদলের সদস্য আল-আমিন, বিএনপি নেতা বেলায়েত হোসেন বেল্টু ও যুবদল নেতা আবদুল আলীম। এদের মধ্যে জজ মিয়া, আল-আমিন পলাতক রয়েছেন।
আর যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন— কাপাসিয়া থানা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি হালিম ফকির, কাপাসিয়া কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জুয়েল, থানা যুবদলের সদস্য মাহবুবুর রহমান রিপন, বিএনপি নেতা আতাউর ও ফরহাদ। এদের মধ্যে হালিম ফকির, জুয়েল ও মাহবুবুর রহমান রিপন পলাতক রয়েছেন। অন্যদিকে বিএনপি নেতা জয়নাল খালাস পেয়েছেন।
জানা যায়, রাজনৈতিক বিরোধের জেরে আসামিরা ২০০৩ সালের ১৭ অগাস্ট পাবুর বলখেলা বাজার এলাকায় কাপাসিয়া উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি জালাল উদ্দিন সরকারকে (৩৫) প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করে।
ওই হত্যাকাণ্ডের পর নিহতের বড়ভাই মিলন উদ্দিন সরকার বাদী হয়ে কাপাসিয়া থানায় মামলা করেন। তদন্ত শেষে ২০০৪ সালে ২৩ জানুয়ারি ১১ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।
এ মামলার শুনানিতে মোট ২২ জন সাক্ষীর জবানবন্দি শোনেন বিচারক। যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে ২০১৫ সালের ৩০ নভেম্বর গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. ফজলে এলাহী ভূঁইয়া রায় ঘোষণা করেন। বিচারিক আদালত রায়ে ১১ আসামির সবাইকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন।
সারাবাংলা/কেআইএফ/টিআর