Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

অগোছালো বইমেলায় পাঠকদের হতাশা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৯ মার্চ ২০২১ ২১:১০

ঢাকা: এবারের অমর একুশে গ্রন্থমেলা নিয়ে ঘাটের জল কম গড়ালো না। শুরু হয় হয় করেও মেলা শুরু করতে চলে গেলো ভাষার মাস ফেব্রুয়ারি। মেলা যখন শুরু হলো তখন স্বাধীনতার মাস মার্চও শেষের কাছাকাছি। এত সংশয়ের ভেতরেও শেষ পর্যন্ত যে মেলা আয়োজন করেছে বাংলা একাডেমি সেখানে এখনো অনেক স্টলের কাজ বাকি থাকায় হতাশা প্রকাশ করেছেন পাঠকরা। হতাশা রয়েছে বইয়ের মেলায় ৪০টি খাবারের দোকান নিয়েও!

শুক্রবার মেলার দ্বিতীয় দিনের শুরুতে সারাবাংলার কাছে নিজের আশা ভঙ্গের কথা বলেছেন পুরনো ঢাকার প্রবীন পাঠক আমিরুল ভূঁঞা।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘নব্বইয়ের দশক থেকে এই মেলায় এসে বই কিনি। অংশ নেই বাংলা একাডেমির অন্যান্য আয়োজনেও। কিন্তু কখনো এমন অগোছালো আয়োজন দেখিনি। আর কোন বইমেলাতে এতো খাবারের দোকানও দেখিনি। এটা কি বই মেলা নাকি রন্ধনশালা সেটি বুঝে উঠতে আমার কিছুটা সময় লেগেছে।’

ওই ক্রেতা আরও বলেন, ‘প্রত্যেকটা আয়োজনের আলাদা আলাদা সৌন্দর্যবোধ থাকে। যারা বড় বড় পদে বসে আছেন তারা যদি এটা অনুধাবন না করতে পারে তাহলে বই মেলা আর পিঠা উৎসবে কোনো পার্থক্য থাকে না।’

এমন করে না হলেও মেলায় লোক সমাগম নিয়ে কিছুটা হতাশা ঝড়েছে অনেক তরুণ পাঠকদের কণ্ঠেও। স্বাস্থবিধির কিছু কড়াকড়ির কারণে মেলায় লোক সমাগম কম হচ্ছে বলে মনে করছেন তারা। রিফাত শেখ যেমন বলছিলেন, পাঠকের ভিড় কম হলে গ্রন্থ মেলাকে অপরিচিতি মনে হয় তার।

তিনি বলেন, ‘মেলায় পাঠক বাড়াতে হলে গেটে কড়াকড়ি কিছুটা কমাতে হবে। বই মেলায় যারা ঘুরতে আসে তারা সাধারণত সচেতন মানুষ। এরা এমনিতেই স্বাস্থবিধি মেনে চলে। তাদেরকে আবার আলাদা করে হাত ধোয়ানোর প্রয়োজন নেই।’

বিজ্ঞাপন

এদিকে মেলায় সরেজমিনে ঘুরে দেকা গেছে, আজকেও মেলার সব স্টলের নির্মাণ কাজ শেষ হয়নি। ঝুলে আছে পয়োনিস্কাশনের কাজও। মেলায় প্রবেশের জন্য এবারের চারটি পথেই রাখা হয়েছে হ্যান্ড স্যানিটাইজার। বসানো হয়েছে থার্মাল স্ক্যানারও। আছে নিরাপদ পানির ব্যবস্থাও।

এতো সবের পরে কিছু প্রকাশক মেলার ব্যবস্থাপনা নিয়ে অসন্তুষ্ঠ। প্রকাশক শওকত আলী বলেন, ‘বাংলা একাডেমি আমাদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করেছে। যাদের টাকা আছে তারা ভালো পজিশনে স্টল পেয়েছে। যাদের যোগশাজশ ভালো তারা বড় স্টল পেয়েছে। এটা সভ্যদের আচরণ হতে পারে না।’

তবে তার এই বক্তব্যে পরিপ্রেক্ষিতে বাংলা একাডেমি বলেছে, ‘আমরা লটারির মাধ্যমে স্টল বরাদ্দ দিয়েছি। এখানে ব্যক্তিপ্রীতির কোনো সুযোগ ছিল না। তবে প্রকাশক শুকত এর উত্তরে বলেন, ‘লটারির পর বিন্যাস আগে থেকে প্রকাশকদের দেখানোই হয়নি। যেটি অন্যান্য বছর করা হয়।’

এ বিষয়ে বাংলা একাডেমির পরিচালক ও বইমেলার সদস্য সচিব জালাল আহমেদ বলেন, ‘তারা সমালোচনা করতেই পারে। এখন পরিস্থিতি না বুঝলে আমাদের কি করা আছে! মহামারি পরিস্থিতি বিবেচনায় আমরা মেলা সাজিয়েছি, অনেকেই এই আয়োজনের প্রশংসাও করেছেন।’

উল্লেখ্য, শুক্রবার দ্বিতীয় দিন মেলা চলছে সকাল ১১টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত, তবে গেল বছরের মতো আজ শিশুপ্রহরের কোনো আয়োজন ছিল না মেলায়। বিকেল ৪টায় মেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী: বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ’ শীর্ষক আলোচনা।

এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করছেন সুভাষ সিংহ রায়। আলোচনায় আছেন আরমা দত্ত এবং নাট্যজন নাসির উদ্দীন ইউসুফ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করছেন অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন।

সারাবাংলা/টিএস/একে

অমর একুশে গ্রন্থমেলা টপ নিউজ বইমেলা বইমেলা ২০২১ বইমেলার আয়োজন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর