‘সাম্প্রদায়িক হামলার দায় সরকারকে নিতে হবে’
২০ মার্চ ২০২১ ২০:২০
ঢাকা: সরকারের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদতে সাম্প্রদায়িক শক্তি এখন বিষাক্ত ফেনা তুলেছে বলে অভিযোগ করেছেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতারা।
তারা বলছেন, একের পর এক সাম্প্রদায়িক হামলা হলেও সরকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে না। হামলা হতে পারে আঁচ করে শাল্লার গ্রামবাসী পুলিশকে জানালেও পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। শাল্লায় হিন্দু পল্লিতে সাম্প্রদায়িক হামলায় আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীদের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। সরকার কোনোভাবেই দায় এড়াতে পারে না। সাম্প্রদায়িক হামলার দায় সরকারকে নিতে হবে।
সুনামগঞ্জের শাল্লায় সাম্প্রদায়িক হামলার প্রতিবাদে শনিবার (২০ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাম গণতান্ত্রিক জোট আয়োজিত বিক্ষোভ-সমাবেশে তারা এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সহকারী সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ জহির চন্দনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বাসদ (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় নেতা জহিরুল ইসলাম, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) নেতা জুলফিকার ইসলাম, গণসংহতি আন্দোলনের নেতা বাচ্চু ভূঁইয়া, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের কেন্দ্রীয় নেতা শামীম ইমাম, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা শহীদুল ইসলাম সবুজ, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুল আলী ও সুনামগঞ্জের সিপিবি নেতা নিরঞ্জন দাশ খোকন।
সমাবেশে বাম নেতারা আরও বলেন, রাষ্ট্রীয় মদতপুষ্ট সাম্প্রদায়িক শক্তির আস্ফালনে, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ঐতিহ্য স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে হুমকির মুখে পড়েছে। এর আগে রামু, নাসিরনগরসহ বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক হামলার যত ঘটনা ঘটেছে, তার কোনো ঘটনারই সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার না হওয়ায় শাল্লায় সাম্প্রদায়িক হামলার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। সরকার সাম্প্রদায়িক শক্তিকে রক্ষা করছে বলেই সাম্প্রদায়িক হামলার বিচার হচ্ছে না। সাম্প্রদায়িক হামলায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অংশ নিচ্ছে।
অবিলম্বে হামলাকারী ও মদতদাতাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতারা। একইসঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের জন্য ক্ষতিপূরণও দাবি করেন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর রাষ্ট্রীয় আয়োজনে অতিথি করার সমালোচনা করে বাম জোটের নেতারা বলেন, শাল্লায় সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা এমন সময় ঘটেছে, যখন ভারতের উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী আরএসএসের ভাবাদর্শ লালনকারী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফর আসন্ন। হেফাজতসহ এ দেশের সাম্প্রদায়িক শক্তিকে তোষণ করে এবং ভারতের সাম্প্রদায়িক ফ্যাসিস্ট শক্তির প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করে সরকার বিনা ভোটে ক্ষমতায় থাকার চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত করতে চায়। মুক্তিযুদ্ধের বাংলায় হেফাজত ও আরএসএসের মতো সাম্প্রদায়িক শক্তির ঠাঁই হবে না। গণআন্দোলনের মাধ্যমে উগ্র সাম্প্রদায়িক শক্তি ও তাদের মদতদাতা স্বৈরাচারী সরকারের পতন ঘটানো হবে।
সমাবেশে শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল ঢাকার বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুরানা পল্টনে এসে শেষ হয়।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/টিআর