‘দলমত নির্বিশেষে কাজ করলে রাজনীতিতে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হবে’
২২ মার্চ ২০২১ ২১:৪৭
ঢাকা: সরকার ও রাজনৈতিক দল যখন সততা-আন্তরিকতা নিয়ে জনস্বার্থে কাজ করে, তখন জাতির উন্নতি ও কল্যাণ নিশ্চিত হয় বলে মন্তব্য করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
দিনি বলেন, সাধারণ হতদরিদ্র্য মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণে দলমত নির্বিশেষে তাদের পাশে দাঁড়াতে পারলে দেশের রাজনীতিতে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হবে। মুজিববর্ষে এটাই হবে সবচেয়ে বড় অর্জন।
সোমবার (২২ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ‘মুজিব চিরন্তন’ প্রতিপাদ্যের ১০ দিনের এই আয়োজনে এদিন ছিল ষষ্ঠ দিনের অনুষ্ঠান।
এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন নেপালের রাষ্ট্রপতি বিদ্যা দেবী ভান্ডারী। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, প্রবন্ধ পাঠ করেন কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পর্বে বঙ্গবন্ধুকে উৎসর্গ করে বন্ধুরাষ্ট্র নেপালের পক্ষ থেকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়।
স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের চূড়ান্ত সুপারিশ পাওয়ার প্রসঙ্গ তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেন, বাংলাদেশ এখন উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ হওয়ার পথে দ্রুত অগ্রসরমান। জল-স্থল-আকাশে বাংলাদেশের অবস্থান সুদৃঢ় করতে চেয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। তিনি দেশকে সোনার বাংলা হিসাবে গড়তে চেয়েছিলেন। আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই অরাধ্য কাজ সম্পন্ন করছেন। বাংলাদেশের স্থল ও সমুদ্রসীমা স্থায়ীভাবে নির্ধারণ করেছেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ৫৭তম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ পাঠিয়েছে, যা সফলভাবে কাজ করছে। জাতির পিতার স্বপ্ন ছিল ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলাদেশ গড়ার। তারই দেখানো পথে জাতির পিতার সুযোগ কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে অযুত বাধা পেরিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
বঙ্গবন্ধুর প্রসঙ্গ টেনে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুধু একটি নাম নয়। বঙ্গবন্ধু একটি প্রতিষ্ঠান, বঙ্গবন্ধু একটি সত্ত্বা, একটি ইতিহাস। জীবিত বঙ্গবন্ধুর চেয়ে অন্তরালের বঙ্গবন্ধু আরও বেশি শক্তিশালী। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে, বাঙালি থাকবে, এ দেশের জনগণ থাকবে, ততদিনই বঙ্গবন্ধু সবার অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।
নিপীড়িত-নির্যাতিত মানুষের মুক্তির আলোকবর্তিকা হয়ে বঙ্গবন্ধু বিশ্বকে আলোকময় করেছেন বলে মন্তব্য করেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। এ কারণে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যেন বঙ্গবন্ধুর নীতি আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে বেড়ে উঠতে পারে, সেই লক্ষ্যে সবাইকে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, দেশের মানুষের প্রতি বঙ্গবন্ধুর আস্থা, ভালোবাসা ও বিশ্বাস ছিল অপরিসীম। নিজের জীবন উৎসর্গ করে তিনি বাংলার মানুষের ভালোবাসার প্রতিদান দিয়ে গেছেন। ঋণী করে গেছেন বাঙালি জাতিকে। মুজিববর্ষ পালনের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুর জীবন, কর্ম ও চিন্তা চেতনার দর্শন ছড়িয়ে দিতে হবে বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বের তরুণ প্রজন্মের কাছে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর জীবন-ভাবনা ও রাজনৈতিক জীবনের মমার্থ সবার কাছে ছড়িয়ে দিতে মুজিববর্ষ পালন একটি যথাযথ পদক্ষেপ। বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশকে আলাদা করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আর জাতির পিতার আদর্শকে ধারণ করে জাতি এগিয়ে যাক ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার পথে।
সারাবাংলা/এনআর/টিআর
প্যারেড স্কয়ার মুজিব চিরন্তন মুজিব শতবর্ষ রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী