Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘মুক্তিযোদ্ধা সনদ এখন রাস্তার পাশে বিক্রি হয়’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৩ মার্চ ২০২১ ২০:২৬

চট্টগ্রাম ব্যুরো: মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই-বাছাই বন্ধের পক্ষে মত দিয়ে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা সনদ এখন রাস্তার পাশে বিক্রি হয়।’

মঙ্গলবার (২৩ মার্চ) দুপুরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে ৫৫ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমি জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) সদস্য। বিভিন্ন সভায় যাই। তারা এখনো মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাইয়ে ব্যস্ত। আমার দায়িত্ব চট্টগ্রাম বিভাগের। আমি বলেছি, যাচাই-বাছাইয়ের আর দরকার নেই। এখন মুক্তিযোদ্ধা সনদ রাস্তার পাশে বিক্রি হয়। প্রধানমন্ত্রী মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা ১০ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা করে দিয়েছেন। ফলে সবাই মুক্তিযোদ্ধা সাজার জন্য উঠেপড়ে লেগেছেন। তাতে আমার পাগল হওয়ার উপক্রম।’

মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়কে আমি বলেছি, আপনারা এসব যাচাই-বাছাই বাদ দেন। বরং মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্থান রক্ষা করেন। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তাতে আমাদের ইতিহাস জানতে পারবে। কিন্তু তারা যাচাই-বাছাইয়ে ব্যস্ত। যারা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা তাদের যাচাই-বাছাইয়ে দরকার নেই। তাদের নাম সব জায়গায় রয়েছে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্থানগুলো যদি সংরক্ষণ করা না হয়, তাহলে আমাদের ভবিষ্যৎ বংশধররা জানবে কী? এই যে সার্কিট হাউজ, এটাতে তো মুক্তিযুদ্ধের অনেক স্মৃতি আছে। কিন্তু এটার সামনে একটা শিশুপার্ক করে রেখেছে।’

বিজ্ঞাপন

জেলা পরিষদের উদ্যোগের প্রশংসা করে মুক্তিযুদ্ধের সাব সেক্টর কমান্ডার মোশাররফ হোসেন আরও বলেন, ‘জেলা পরিষদ আজ মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা জানানোর উদ্যোগ নিয়েছে, আমরা মুক্তিযোদ্ধারা খুব সম্মানিত বোধ করছি। অথচ এই উদ্যোগ মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের নেওয়া উচিত ছিল। জেলা পরিষদ শুধু মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা জানানোর উদ্যোগই নেয়নি, তারা আরও অনেক কাজ করছে। তারা মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্থানে মনুমেন্ট করার উদ্যোগ নিচ্ছে। আগামী প্রজন্মের জন্য তো এসব স্থান সংরক্ষণ করতে হবে। একদিন আওয়ামী লীগ নেতারা থাকবে না, বীর মুক্তিযোদ্ধারাও থাকবেন না, কিন্তু ইতিহাস থেকে যেতে হবে।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত বিভিন্ন স্থান চিহ্নিত করে মনুমেন্ট করার উদ্যোগ সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকেও নেওয়া হবে।’

সভাপতির বক্তব্যে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ সালাম বলেন, ‘অনেকেই মন্ত্রী হন, কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা হওয়া যায় না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানিত করেছেন এবং মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করছেন। দেশপ্রেমিক জনগোষ্ঠী তৈরি না হলে কখনো মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে না। আমি জেলা পরিষদের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানিত করতে পেরে নিজেকে গৌরবান্বিত মনে করছি। ভবিষ্যতেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে।’

ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে এ সম্মাননা অনুষ্ঠানে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাব্বির ইকবাল। জেলা পরিষদের সচিব মো. রবিউল হাসানের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম, সাবেক গণপরিষদ সদস্য মির্জা আবু মনসুর, যুদ্ধকালীন বিএলএফ কমান্ডার অধ্যাপক মো. মঈনুদ্দিন, যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা এনামুল হক চৌধুরী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ইউনুস। পরে মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেওয়া হয়।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম

ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বিক্রি মুক্তিযোদ্ধা সনদ রাস্তার পাশে

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর