বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠজুড়ে সূর্যের হাসি
২৪ মার্চ ২০২১ ১১:১১
সিরাজগঞ্জ: জেলার বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠজুড়ে সূর্যমুখী ফুলের চাষ দিনে দিনে বাড়ছে। মাঠজুড়ে ঝরছে সূর্যের হাসি। দৃষ্টিনন্দন এই ফুলের সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে প্রতিদিনই বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসছেন দর্শনার্থীরা।
জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, সূর্যমুখী তেলের চাহিদা সারাবিশ্বে বেড়ে যাওয়ার কারণে বাংলাদেশে বাণিজ্যিকভাবে সূর্যমুখী চাষ শুরু হয়েছে। কৃষি পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় সম্পূর্ণ বিনামূল্যে কৃষককে বীজ বিতরণের মাধ্যমে সিরাজগঞ্জের নয়টি উপজেলায় ৩০৮ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ হয়েছে। সূর্যমুখী চাষ করে শুরুতেই সফলতার মুখ দেখছেন কৃষকরা। যদি প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হয়, তাহলে সূর্যমুখী চাষ করে দ্বিগুণ লাভ করতে পারবেন। ফলে একদিকে উপকৃত হবে কৃষক, অপরদিকে মিটবে সূর্যমুখী তেলের চাহিদা।
সদর উপজেলার সয়দাবাদ ইউনিয়নের বয়ড়া গ্রামের কৃষক ইউসুফ আলী বলেন, যমুনা নদীর এই চরাঞ্চলের অধিকাংশ জমি পতিত অবস্থায় পড়ে থাকে। আমার পতিত ৮ বিঘা জমিতে এবার সূর্যমুখী ফুল চাষ করেছি। আবহাওয়া ভালো থাকায় ফলনও পেয়েছেন ভালো। প্রতি বিঘা জমিতে ৪ হাজার টাকা খরচ করে বিঘা প্রতি ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা লাভের আশা করছেন তিনি।
বেলকুচি উপজেলার মুকুন্দগাঁতী গ্রামের সূর্যমুখী চাষী রুবেল হোসেন বলেন, ব্যবসার পাশাপাশি কৃষি অফিস থেকে বিনামূল্যে বীজ পেয়ে ১ বিঘা জমিতে সূর্যমুখীর চাষ শুরু করি। বর্তমানে আমার সূর্যমুখী ক্ষেত ফুলে ফুলে ভরে গেছে। জমিতে এক একটি ফুল যেন হাসিমুখে সূর্যের আলো ছড়াচ্ছে। যদি কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হয় তাহলে সূর্যমুখী চাষ করে ভাগ্যের চাকা ঘুরে যাবে। আগামীতে বড় আকারে চাষ করব।
সূর্যমুখী ফুল বাগান দেখতে আসা দর্শনার্থী মনির শেখ, রনি আহম্মেদ ও নীরব হোসেন বলেন, একসঙ্গে এত সূর্যমুখী ফুল আগে কখনও দেখা হয়নি! আমাদের কামারখন্দ উপজেলার ভদ্রঘাট গ্রামে এই সূর্যমুখী ফুল বাগানটি মানুষের নজরে এসেছে। তাই আমরাও সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে বন্ধুদের নিয়ে বাগানে এসেছি ছবি তুলতে।
সিরাজগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর উপ-পরিচালক মো. আবু হানিফ জানান, ভিনদেশী অতিপরিচিত একটি সূর্যমুখী ফুল। এর তেল গুণে ও মানে ভালো। বিশ্বে এর চাহিদা ব্যাপক থাকায় বাংলাদেশে বাণিজ্যিকভাবে সূর্যমুখীর চাষ শুরু হয়েছে। সিরাজগঞ্জের জমি সূর্যমুখী চাষের জন্য উপযোগী মনে হওয়ায় এবার ৩০৮ হেক্টর জমিতে চাষ করা হয়েছে। বর্তমানে সূর্যমুখী ক্ষেতের যে অবস্থা তাতে বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখছে কৃষক ও কৃষি বিভাগ।
তিনি আরও বলেন, সূর্যমুখী গাছ লম্বায় ৩ মিটার হয়ে থাকে। ফুলের ব্যাস ৩০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়। এই ফুল দেখতে সূর্যের মত হওয়ায় এর নাম সূর্যমুখী ফুল। জেলায় তিন হাজার কৃষককে কৃষি প্রণোদনার আওতায় এ ফুলের বীজ দেওয়া হয়েছে। এবার ৩০৮ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করা হয়েছে।
সারাবাংলা/এএম