জাতির পিতা নিপীড়িত-বঞ্চিত মানুষের মুক্তির স্বপ্ন দেখতেন
২৪ মার্চ ২০২১ ২১:৫৯
ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুধু বাংলাদেশের মানুষের রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক মুক্তির জন্যই লড়াই করেননি, তিনি বিশ্বের সকল নিপীড়িত-বঞ্চিত মানুষের মুক্তির স্বপ্ন দেখতেন।
তাই জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের শুভ মুহূর্তে দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক নেতারা এবং নীতিনির্ধারকদের প্রতি একটি শান্তিপূর্ণ সমৃদ্ধ দক্ষিণ এশিয়া গড়ে তুলতে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
বুধবার (২৪ মার্চ) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে রাজধানীর প্যারেড স্কয়ারে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
‘মুজিব চিরন্তন’ শীর্ষক প্রতিপাদ্যের দশ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার ৮ম দিনের (২৪ মার্চ ২০২১) অনুষ্ঠানের থিম সং ছিল ‘শান্তি, মুক্তি ও মানবতার অগ্রদূত’।
অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী ডা. লোটে শেরিং বক্তব্য রাখেন। আলোচনা অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এবং আলোচনা পর্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. রওনক জাহান।
জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর ছোট বোন শেখ রেহানাও উপস্থিত ছিলেন।
এ ছাড়া ভ্যাটিক্যান সিটির পোপ ফ্রান্সিস এবং ভারতের কংগ্রে নেত্রী সোনিয়া গান্ধীর ভিডিওবার্তা প্রচার করা হয়।
অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে আলোচনা সভা শেষে আধা ঘণ্টার বিরতি দিয়ে সাড়ে ৬টায় দ্বিতীয় পর্বে শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমন্ত্রিত অতিথিদের সঙ্গে অনুষ্ঠানটি উপভোগ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শুধু বাংলাদেশের মানুষের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক মুক্তির জন্যই লড়াই করেননি, তিনি বিশ্বের সকল নিপীড়িত-বঞ্চিত মানুষের মুক্তির স্বপ্ন দেখতেন। তিনি শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান এবং আঞ্চলিক অখন্ডতার শ্রদ্ধাশীল ছিলেন। তিনি বিশ্বাস করতেন, পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে যে কোনো সমস্যা সমাধান করা সম্ভব।’
তিনি আরও বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ায় বিশ্বের এক তৃতীয়াংশ মানুষের বসবাস। এ অঞ্চলে যেমন সমস্যা রয়েছে, তেমনি রয়েছে প্রচুর সম্ভাবনা। আমাদের এই অঞ্চলের মানুষের রয়েছে অসম্ভব প্রাণশক্তি, উদ্ভাবন ক্ষমতা এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয়কে জয় করে ঠিকে থাকার দক্ষতা। পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে প্রাপ্ত সম্পদকে কাজে লাগিয়ে আমরা সহজে দক্ষিণ এশিয়ার মানুষের ভাগ্য উন্নয়ন ঘটাতে পারি। আমরা যদি আমাদের জনগণের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য সম্মিলিতভাবে কাজ করি, অবশ্যই দক্ষিণ এশিয়া বিশ্বের মধ্যে অন্যতম সমৃদ্ধ অঞ্চল হিসাবে প্রতিষ্ঠা লাভ করবে, এই বিশ্বাস আমাদের আছে।’
‘বাংলাদেশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ক্ষুধা, দারিদ্র্যমুক্ত, অসাম্প্রদায়িক সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার জন্য নিরলসভাবে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’
এরইমধ্যে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছি। ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চমধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসাবে বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে, ইনশাল্লাহ।
জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের শুভ মুহূর্তে আমি দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং নীতিনির্ধারকদের প্রতি একটি শান্তিপূর্ণ সমৃদ্ধ দক্ষিণ এশিয়া গড়ে তুলতে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছি।
ভিডিও বার্তা পোপ এবং ভারতের কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধীর প্রতিও আন্তরিক অভিনন্দন জানান।
এ ছাড়া সকলের সুস্থতা কামনা করে করোনাভাইরাসের হাত থেকে সবাই মুক্তি পাক বিশ্ববাসী মুক্তি পাক- এই কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী।
সারাবাংলা/এনআর/একে