বঙ্গবন্ধুর খুনি ও জিয়ার নামও থাকছে মুক্তিযোদ্ধা তালিকায়
২৫ মার্চ ২০২১ ১৯:২৭
ঢাকা: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত থাকা, মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে স্বাধীনতা বিরোধীদের নানা ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত করাসহ রাষ্ট্র বিরোধী নানা কর্মকাণ্ডে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানসহ রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করা খুনি খন্দকার মোশতাক আহমদ ও অন্যান্যদের খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) সরকার। কিন্তু সদ্য প্রকাশ হওয়া বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় রাখা হয়েছে তাদের নাম। এ প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, শুধু তাদের খেতাব বাতিল করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ মার্চ) এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী এ সব কথা বলেন। মুক্তিযোদ্ধা তালিকা প্রকাশ সংক্রান্ত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এ সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘জিয়াউর রহমান, মোসলেউদ্দীন, ডালিম, রাশেদ চৌধুরীরা মুক্তিযুদ্ধ করেছেন এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। এটি সত্য। কিন্তু তারা পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধুকে খুনের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন। কেউ পরোক্ষভাবে কেউ প্রত্যক্ষভাবে। খন্দকার মোশতাক অবৈধভাবে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করেছে। যা এখন আদালত স্বীকৃত। তার বিরুদ্ধে চার্জশিটও দাখিল করা হয়েছিল। তিনি মারা যাওয়াতে আর বিচার হয়নি।’
জানা গেছে, সংবিধান লঙ্ঘন, সংবিধানের মূলনীতি বাতিল, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের সমর্থন দেওয়া, তাদের সঙ্গে ঘনিষ্ট সম্পর্ক রাখা, বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে জিয়াউর রহমানের সম্পৃক্ততা বক্তব্যে উল্লেখ থাকা এবং তাদেরকে গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়ন, দেশত্যাকে সহযোগিতা করার পাশাপাশি একজন মুক্তিযোদ্ধা হয়েও স্বাধীনতা বিরোধীদের নিয়ে মন্ত্রিসভা গঠনের অভিযোগ এনে জামুকার এক বৈঠকে তার খেতাব বাতিলের সুপারিশ তোলা হয়। তার পরিপ্রেক্ষিতে গত ৯ ফেব্রুয়ারি জামুকার ৭২ তম বৈঠকে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানসহ এমন স্বাধীনতাবিরোধী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকা মুক্তিযোদ্ধাদের খেতাব বাতিলের একটি কমিটি গঠন করা হয়।
জামুকা গঠিত তিন সদস্যের কমিটি প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ছাড়াও বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি শরীফুল হক ডালিম, নূর চৌধুরী, রাশেদ চৌধুরী, মোসলেহ উদ্দীনের রাষ্ট্রীয় খেতাব বাতিল করতে অভিযোগ ওঠা সকল তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করছে। একই সঙ্গে পঁচাত্তরের পট পরিবর্তনের পর রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করা খুনি খন্দকার মোশতাক আহমদ, মাহবুবুল আলম চাষীসহ অন্যান্যদের এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক কাজে জড়িয়ে পরা মুক্তিযোদ্ধাদের বিষয়েও তথ্য উপস্থাপন করবে জামুকা গঠিত কমিটি।
এ প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তারা সব সময় তালিকায় থাকবেন। পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী তাদের সব কর্মকাণ্ডের আমলনামাও মানুষ তাদের নামের পাশে দেখতে পাবেন।’
উল্লেখ্য, সাবেক রাষ্ট্রপতি এ বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার জিয়াউর রহমানকে রাষ্ট্রীয়ভাবে ‘ বীর উত্তম’ খেতাব দেয়।
সারাবাংলা/জেআর/একে