Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিস্ফোরক মজুত সন্দেহে ভবন ঘিরে রেখেছে পুলিশ, মশাল উদ্ধার

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৫ মার্চ ২০২১ ২৩:১০

চট্টগ্রাম ব্যুরো : চট্টগ্রাম নগরীর চান্দগাঁওয়ে মশাল-বিস্ফোরক তৈরির খবর পেয়ে নির্মাণাধীন বহুতল একটি ভবনে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। সেখান থেকে একজনকে আটক করা হয়েছে। এছাড়া কিছু মশাল ও একটি ব্যাগ পেয়েছে, যার ভেতরে বিস্ফোরক থাকার সন্দেহে পুলিশ সেগুলো ঘিরে রেখেছে। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযান শুরুর পর সেখান থেকে কয়েকজন পালাতে সক্ষম হন, যাদের বিএনপির নেতাকর্মী বলে ধারণা করছেন তারা।

পুলিশের ধারণা, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফর এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর উৎসবকে ঘিরে আতঙ্কজনক পরিস্থিতি তৈরি করতে মশাল ও হাতবোমা তৈরি করা হচ্ছিল।

বৃহস্পতিবার (২৫ মার্চ) সন্ধ্যা ৭টার দিকে নগরীর চান্দগাঁও থানার ‘কালুরঘাট বেতারকেন্দ্রের সামনে’ একটি নির্মাণাধীন ১২ তলা ভবনের তৃতীয় তলায় অভিযান চালায় পুলিশ। সেখান থেকে আটক হওয়া মো. রাব্বির (২০) বাড়ি ভোলা জেলায়। রাব্বি পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি বলে জানিয়েছে পুলিশ।

চান্দগাঁও থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রাজেশ বড়ুয়া সারাবাংলাকে জানান, বসুধা বিল্ডার্সের নির্মাণাধীন ভবনটি দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে। সেখানে একটি ভবনে বিস্ফোরক তৈরির খবর পেয়ে অভিযান চালানো হয়। অভিযান শুরুর পর ৪-৫ জনকে তারা তিন তলা থেকে লাফ দিয়ে পালাতে দেখেছেন। আরও কমপক্ষে ২০ জন ভবনের বিভিন্ন দিক দিয়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন।

পালিয়ে যাওয়া লোকজন ‘বিএনপির নেতাকর্মী’ বলে শুনেছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। আটক রাব্বির কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাজেশ বড়ুয়া বলেন, ‘বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে ৪টার দিকে তারা এই ভবনে ঢোকেন। একজন রাব্বিকে ৬০০ টাকার বিনিময়ে কিছু মশাল বানিয়ে দেওয়ার জন্য ভাড়া করেন। আমরা অভিযান ‍শুরুর পর অনেকেই পালিয়ে গেলেও রাব্বি পালাতে পারেননি।’

ঘটনাস্থলে যাওয়া নগর পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) বিজয় কুমার বসাক সারাবাংলাকে বলেন, ‘ঘটনাস্থলে আমরা প্রায় ১৫০টি মশাল পেয়েছি। একটি ব্যাগ পাওয়া গেছে। ব্যাগের মুখ বাধা। সেখানে বিস্ফোরক জাতীয় কিছু আছে বলে আমাদের মনে হচ্ছে। এজন্য বোম্ব ডিজপোজাল ইউনিটকে আনা হয়েছে। কিন্তু্ প্রক্রিয়াগত কারণে রাতে সাধারণত বিস্ফোরক তল্লাশি করা যায় না। এ জন্য আমরা ব্যারিকেড দিয়ে রেখেছি। কাল (শুক্রবার) সকালে তল্লাশি হবে।’

চান্দগাঁও বাস টার্মিনালের ভেতরে দিয়ে নালা পার হয়ে যেতে হয় ভবনটিতে। সেখানে ঢোকার সরাসরি কোনো রাস্তা নেই। ঘটনাস্থলে দেখা গেছে, সেই ভবনে তৃতীয় তলায় দরজা-জানালাবিহীন একটি কক্ষে বাঁশের লাঠির মাথয় চটের দড়ি ও তার পেঁচানো কিছু মশাল সদৃশ বস্তু রাখা আছে। সেগুলোর আড়ালে রাখা আছে একটি ব্যাগ।

পুলিশ পরিদর্শক রাজেশ বড়ুয়া জানিয়েছেন, মশালগুলোতে কেরোসিন দেওয়া হয়নি। সেখানে দাহ্য কোনোকিছুও পাওয়া যায়নি। তবে ব্যাগের ভেতরে ককটেল সদৃশ কিছু থাকতে পারে।

২৭ মার্চ এই ভবনের সামনে কালুরঘাট বেতারকেন্দ্রের সম্মুখে সমাবেশ কর্মসূচি দিয়েছিল বিএনপি, পরে আবার সেটি স্থগিত করা হয়। এছাড়া ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামসহ সারাদেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করছে।

মশাল-বিস্ফোরক তৈরির সঙ্গে এর কোনো যোগসূত্র আছে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ‍উপপুলিশ কমিশনার বিজয় বসাক বলেন, ‘যোগসূত্র থাকতে পারে। কারণ কিছুদিন ধরে তো দেশে নানা ধরনের আন্দোলন হচ্ছে। আমরা এসব বিষয় খতিয়ে দেখছি। তবে আমাদের ধারণা হচ্ছে কেউ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরির জন্য এগুলো তৈরি করছিল।’

সারাবাংলা/আরডি/একে

চট্টগ্রাম টপ নিউজ বিস্ফোরক মোদি


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর