স্বাধীনতা দিবসে আরও ১২ লাখ ভ্যাকসিন উপহার দিচ্ছে ভারত
২৬ মার্চ ২০২১ ০০:২৯
ঢাকা: নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশকে আরও ১২ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন পাঠাচ্ছে বাংলাদেশ। মহান স্বাধীনতা দিবসের উপহার হিসেবে ডোজ অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ‘কোভিশিল্ড’ ব্র্যান্ডের এই ১২ লাখ ভ্যাকসিন দিচ্ছে ভারত।
শুক্রবার (২৬ মার্চ) ঢাকায় এই ভ্যাকসিন এসে পৌঁছাবে বলে স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে। এর আগে দেশে কোভিশিল্ডের প্রথম যে ২০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন এসেছিল, সেটিও উপহার পাঠিয়েছিল ভারত।
স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্র স্বাধীনতা দিবসের উপহার হিসেবে আসা এই ভ্যাকসিন কোন ফ্লাইটে আসবে, তা নিশ্চিত করতে পারেনি। তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্রে জানা গেছে, ২৬ মার্চ দুপুর দেড়টায় এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বিশেষ ফ্লাইটে (এএল ১২৩০) শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবে এই ভ্যাকসিন।
বৃহস্পতিবার (২৫ মার্চ) রাতে স্বাস্থ্য অফিদফতরের ইপিআই কর্মসূচির লাইন ডিরেক্টর ডা. শামসুল হক ভ্যাকসিনপ্রাপ্তির বিষয়টি জানিয়ে সারাবাংলাকে বলেন, আগামীকাল (শুক্রবার) দুপুরের মধ্যে ১২ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন এসে পৌঁছাতে পারে বলে এখন পর্যন্ত জানা গেছে। তবে কোন ফ্লাইটে এই ভ্যাকসিন আসবে, সেই তথ্য আমরা এখনো হাতে পাইনি।
এদিকে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে, বুধবার (২৪ মার্চ) বাংলাদেশ সরকারের কাছে ভারতীয় হাইকমিশন থেকে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে ১২ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন উপহার হিসেবে পাঠানো হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ এশিয়া বিয়ষক মহাপরিচালককে পাঠানো এই চিঠির অনুলিপি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এবং বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষকে দেওয়া হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, এই ১২ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন ভারত সরকারের পক্ষ থেকে উপহার হিসেবে দেওয়া হচ্ছে। করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রণে ভারতের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে এই ১২ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন পাঠানো হচ্ছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, ২৬ মার্চ এয়ার ইন্ডিয়ার বিশেষ ফ্লাইট (এএল ১২৩০) সকাল সাড়ে ৮টায় মুম্বাই বিমানবন্দর থেকে যাত্রা শুরু করবে। এয়ার ইন্ডিয়ার এই ফ্লাইটে বেলা দেড়টায় ভ্যাকসিন শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবে। ভ্যাকসিন দ্রুত খালাসের জন্য বিমানবন্দরে রেফ্রিজারেশন ট্রাক, ফর্ক লিফট, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট, কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর অনুমোদনসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক বিষয়ে প্রস্তুতি রাখতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। আর কাজ সহজতর করতে এয়ারওয়ে বিল, প্যাকিং লিস্ট, ব্যাচ রিলিজ সার্টিফিকেট ইত্যাদি কাগজপত্র এই চিঠির সঙ্গেই পাঠানো হয়েছে।
সংযুক্ত কাগজপত্রের মধ্যে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের কমার্শিয়াল ইনভয়েস এই টিকাগুলোকে ইন্ডিয়ান সরকারের পক্ষ থেকে উপহার হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, তিনটি ব্যাচের এক লাখ ২০ হাজার ভায়ল ১০০টি বাক্সে প্যাকেট করে পাঠানো হচ্ছে। এর মধ্যে ৪১২১ জেড০০৭ ব্যাচের উৎপাদন তারিখ চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি, যার মেয়াদ শেষ হবে ১১ জুলাই; ৪১২১ জেড ০০৮ ব্যাচের উৎপাদন তারিখ চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি, যার মেয়াদ শেষ হবে ১৫ জুলাই; এবং ৪১২১ জেড ০০৯ ব্যাচের উৎপাদন তারিখ চলতি বছরের ১৮ জানুয়ারি, যার মেয়াদ শেষ হবে আগামী ১৬ জুলাই।
এর আগে ২১ জানুয়ারি উপহার হিসেবে বাংলাদেশকে ২০ লাখ চার হাজার ডোজ অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন পাঠায় ভারত। এর আগেই অবশ্য গত ৫ নভেম্বর বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের ত্রিপাক্ষিক চুক্তি হয়, যে চুক্তির আওতায় বাংলাদেশ সিরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে তিন কোটি ডোজ ভ্যাকসিন কেনে।
ওই এই চুক্তির আওতায় প্রথম চালানে ২৫ জানুয়ারি আসে ৫০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন দেশে আসে। পরে ২৩ ফেব্রুয়ারি আসে ২০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন।
সারাবাংলা/এসবি/টিআর
১২ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন কোভিড ভ্যাকসিন কোভিশিল্ড ভারতের উপহার স্বাধীনতা দিবস