‘বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য সমান ব্যাকুলতা ছিল ভারতেও’
২৬ মার্চ ২০২১ ১৭:৫৩
ঢাকা: বাংলাদেশ যখন পাকিস্তানের পরাধীনতার নাগপাশ থেকে বেরিয়ে স্বাধীনতা অর্জনের জন্য সংগ্রাম করছিল, তখন বাংলাদেশের পক্ষে আন্দোলন করে নিজেও কারাবরণও করেছিলেন বলে জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য এই ভূখণ্ডের মানুষের যেমন ব্যাকুলতা ঠিক, একই ব্যাকুলতা ছিল ভারতের মানুষদের মধ্যেও।
শুক্রবার (২৬ মার্চ) জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য ব্ক্তব্যের শুরুতেই রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান নরেন্দ্র মোদি। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তির এই মাহেন্দ্রক্ষণে তিনি নিজের ও ভারতের জনগণের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের নাগরিকদের প্রাণঢালা অভিনন্দনও জানান।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছেন। আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক রাজনীতিতে তিনি শান্তির বার্তা ছড়িয়েছেন। এ কারণে ভারত সরকার বঙ্গবন্ধুকে এ বছর গান্ধী শান্তি পুরস্কারে ভূষিত করেছে বলেও জানান নরেন্দ্র মোদি। এসময় তিনি বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলন ও স্বাধীনতার সংগ্রামে শহিদ সবার প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানান। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সেনাবাহিনীসহ দেশটির জনগণ যে অকৃত্রিম সমর্থন জুগিয়েছেন, সে কথাও স্মরণ করেন তিনি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় নিজেও বাংলাদেশের পক্ষে আন্দোলন করেছেন জানিয়ে নরেন্দ্র মোদি বলেন, আমি গর্বের সঙ্গে বলতে চাই— আমার তরুণ জীবনে প্রথম যেসব আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম, তার মধ্যে ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে আন্দোলন। তখন আমাদের বয়স ছিল ২০-২২ বছর। ওই সময় আমি ও আমার সঙ্গীরা বাংলাদেশের মানুষের মুক্তির জন্য সত্যাগ্রহ আন্দোলন করেছি। এ কারণে গ্রেফতারও হয়েছিলাম।
তিনি বলেন, এ থেকেই বোঝা যায়— বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য এখানকার মানুষের মধ্যে যে ব্যাকুলতা ছিল, একই ব্যাকুলতা ছিল ওপারের (ভারত) মানুষদের মধ্যেও।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রসঙ্গ টেনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, বাংলাদেশকে পরাধীন করে রাখা যাবে না। একাত্তরের ৭ মার্চে বঙ্গবন্ধু তার ঐতিহাসিক ভাষণ থেকে যে ডাক দিয়েছিলেন— ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’— সেই বক্তব্যও নিজের বক্তব্যে বাংলা ভাষাতেই তুলে ধরেন মোদি।
তিনি বলেন, সেদিন বঙ্গবন্ধুর ডাকে বাংলাদেশের কৃষক, যুবক, শ্রমিক, মজুর সবাই এক হয়ে মুক্তিবাহিনী গঠন করে স্বাধীনতার সশস্ত্র লড়াইয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। তিনি বাঙালিকে মুক্তির স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। সে কারণেই আজ মুজিববর্ষে মানুষ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন, আদর্শ স্মরণ করছে।
‘মুজিব চিরন্তন’ প্রতিপাদ্য নিয়ে এদিন ১০ দিনের আয়োজনের শেষ দিনের অনুষ্ঠান চলছে। শেষ দিনের এই আয়োজনের থিম ‘স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর ও অগ্রগতির সুবর্ণরেখা’। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত আছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সারাবাংলা/টিআর
নরেন্দ্র মোদি প্যারেড গ্রাউন্ড মুজিব চিরন্তন স্বাধীনতা দিবস ২০২১