৯ দিনে বাজার মূলধন কমেছে সাড়ে ১৯ হাজার কোটি টাকা
২৭ মার্চ ২০২১ ১৭:৩৪
ঢাকা: করোনা আতঙ্কে আবারও পুঁজিবাজারে চলছে দরপতন। অব্যাহত দরপতনে পুঁজি হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ছেন বিনিয়োগকারীরা। সর্বশেষ গত দুই সপ্তাহে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন কমেছে ১৯ হাজার ৪৬০ কোটি টাকা। এর মধ্যে গত ১৩ থেকে ১৮ মার্চের মধ্যে লেনদেন হওয়া চার কার্যদিবসে বিনিয়োগকারীরা মূলধন হারিয়েছে ১০ হাজার ৭৫৭ কোটি টাকা। সর্বশেষ বিদায়ী সপ্তাহে (২১ থেকে ২৫ মার্চ) মূলধন কমেছে ৮ হাজার ৭০৩ কোটি টাকা।
বাজার বিশ্লেষকদের মতে, মার্চের শুরু থেকে দেশে করোনার প্রভাব বেড়ে যাওয়ায় পুঁজিবাজারে নানা ধরনের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে। বিশেষ করে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় পুঁজিবাজারে লেনদেন বন্ধ হয়ে যেতে পারে- এমন গুজবের কারণে পুঁজিবাজারে পতনের মাত্রা বেড়ে গেছে। এতে অনেক বিনিয়োগকারী আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন। তবে বিনিয়োগকারীদের কোনো ধরনের গুজবে কান দেওয়া উচিত হবে না।
এ ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক ও পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক আবু আহমেদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘বর্তমানে পুঁজিবাজারে যেভাবে দরপতন হচ্ছে তার কোনো ভিত্তি নেই। নানাধরনের গুজবে বিনিয়োগকারীদের মাঝে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। তবে বিনিয়োগকারীদের কোনো ধরনের গুজবে কান দিয়ে লোকসানে শেয়ার বিক্রি করা উচিত নয়।’
তিনি বলেন, ‘করোনা ভাইরাসের কারণে পুঁজিবাজারে লেনদেন বন্ধ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। কারণ ইতোমধ্যে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি থেকেও বলা হয়েছে, ব্যাংক খোলা থাকলে পুঁজিবাজারও খোলা থাকবে। ফলে লেনদেন বন্ধ হয়ে যাবে এই ধরনের গুজবে কান দেওয়া যাবে না।’
ডিএসইর বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত সপ্তাহে ১৪ মার্চ লেনদেনের শুরুতে ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল চার লাখ ৮২ হাজার ৮৫৪ কোটি টাকা। দরপতনের কারণে সর্বশেষ গত ২৫ মার্চ ডিএসইর বাজার মূলধন কমে ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৩৯৪ কোটি টাকায় নেমে আসে। এই সময়ে ১০ দিন লেনদেন হওয়ার কথা থাকলেও ১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে ওইদিন পুঁজিবাজারে লেনদেন বন্ধ ছিল। ফলে গত দুই সপ্তাহে নয় দিন লেনদেন হয়। এই সময়ে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ১৯ হাজার ৪৬০ কোটি টাকা। এই নয় লেনদেন দিবসে ছয় দিনই পুঁজিবাজার ছিল নিম্নমুখী।
এদিকে টানা দরপতনের কারণে গত দুই সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫ হাজার ৫৬৮ পয়েন্ট থেকে ২৪১ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৩২৭ পয়েন্টে নেমে আসে। একই সময়ে প্রধান সূচকের পাশাপাশি ডিএসই-৩০ সূচক কমেছে ১৩৪ পয়েন্ট। এছাড়াও ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানিগুলো নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক কমেছে ৪৮ পয়েন্ট। অন্যদিকে মূল্য সূচকের পতনের পাশাপাশি গত দুই সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। সেইসঙ্গে কমেছে আর্থিক ও শেয়ার লেনদেন।
সারাবাংলা/জিএস/পিটিএম