Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

হেফাজতের ৪ কর্মীর লাশ নেওয়া হচ্ছে বাড়িতে, পরিস্থিতি শান্ত

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৭ মার্চ ২০২১ ২১:০৭

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত চার হেফাজত কর্মীর লাশ ময়নাতদন্তের পর তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। লাশগুলো হাটহাজারীতে দারুল উলুম মইনুল ইসলাম মাদরাসায় নেওয়ার দাবি করেছিল হেফাজত। তবে ময়নাতদন্তের পর পুলিশ পাহারায় লাশগুলো তাদের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। লাশ হস্তান্তরের আগেই মর্গের সামনে থেকে সরে যান হেফাজতের নেতাকর্মীরা। পরিস্থিতি এখন শান্ত আছে।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (২৭ মার্চ) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গ থেকে লাশগুলো তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নগর পুলিশের পাঁচলাইশ জোনের সহকারী কমিশনার মো. শহীদুল ইসলাম।

শুক্রবার দুপুরে হাটহাজারী উপজেলায় দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদরাসার একদল ছাত্র, যারা হেফাজতের কর্মী হিসেবে পরিচিত, তারা মিছিল বের করে। বাংলাদেশ সফরে আসা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং সরকারের বিরুদ্ধে শ্লোগান দিয়ে তারা হাটহাজারী থানার সামনে জড়ো হন। একপর্যায়ে তারা থানায় ভাংচুর করেন। স্থানীয় ইউনিয়ন ভূমি অফিস ও সরকারি ডাকবাংলোর ভেতরে ঢুকে তাণ্ডব চালান। এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে পুলিশ গুলি ছুঁড়লে কয়েকজন আহত হন। এদের মধ্যে চারজন চমেক হাসপাতালে মারা যান, যাদের মধ্যে তিনজন ওই মাদরাসার ছাত্র।

সহকারী পুলিশ কমিনার শহীদুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘লাশ পরিবারের কাছে দেওয়া হয়েছে। চার জনের মধ্যে একজনের বাড়ি চট্টগ্রামের রাউজানে। তিন জনের বাড়ি কুমিল্লা, নওগাঁ ও মাদারিপুরে। লাশ বাড়িতে চলে যাবে। হাটহাজারী মাদরাসায় নেওয়া হবে না।’

শুক্রবার বিকেলে আহতদের হাসপাতালে আনার পর থেকে সেখানে অবস্থান নেন হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও সংস্কৃতি সম্পাদক হারুন ইজাহার। রাত পৌনে ৯টার দিকে হাসপাতালের লাশঘর থেকে ময়নাতদন্তের জন্য লাশগুলো মর্গে পাঠানো হয়। হেফাজতে ইসলামের কয়েক’শ নেতাকর্মী মর্গের সামনে অবস্থান নেন।

শনিবার বিকেলে মর্গের সামনে অবস্থান নেওয়া হেফাজতের নেতাকর্মীরা রাস্তায় নামাজ আদায় করেন। সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে গায়েবানা জানাজা পড়ে হেফাজত কর্মীরা মর্গের সামনে থেকে সরে যান। এসময় সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ছিল।

বিজ্ঞাপন

এদিকে শনিবার দুপুরে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে নগরীর জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদ প্রাঙ্গনে সমাবেশ ও মিছিল করেছে হেফাজতে ইসলাম। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে নগরীর ওয়াসার মোড় ও আলমাসের সামনে যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে পুলিশ। মিছিলকারীরা মসজিদ প্রাঙ্গণ থেকে বের হয়ে ওয়াসার মোড় পার হয়ে যেতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। পরে তারা উল্টো ঘুরে রেবতি মোহন লেইন ধরে আলমাসের দিকে যায়। আলমাস মোড় থেকে ঘুরে পুনরায় রেবতি মোহন লেনে ধরে ১০ মিনিটের মধ্যে মসজিদ প্রাঙ্গণে ঢুকে যায় মিছিলটি। মিছিলকারীরা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে শ্লোগান দেয়।

এদিকে জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদ প্রাঙ্গনের কর্মসূচি শেষ করে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা খণ্ড খণ্ড হয়ে চমেক হাসপাতালের দিকে যেতে থাকেন। আলমাসের পর ব্যাটারি গলি পার হওয়ার সময় ‘ধর ধর’ বলে তাদের একদল যুবক ধাওয়া দেয়। জানা গেছে, ধাওয়াকারীরা স্থানীয় ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মী। খবর পেয়ে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র গিয়াস উদ্দিন এবং আওয়ামী লীগ নেতা হাসান মনসুর তাদের নিবৃত্ত করেন। পুলিশও ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীদের ঘেরাও করে রাখে।

মর্গের সামনে বিকেলে হ্যান্ডমাইকে হারুন ইজাহার বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ মিছিল করে চলে যাওযার সময় ছাত্রলীগের ছেলেরা আমাদের ওপর হামলা করেছে। এতে কয়েকজন আহত হয়েছেন।’

জানতে চাইলে নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর বলেন, ‘ছাত্রলীগ হামলা করেনি। মিথ্যা অভিযোগ। আহত হওয়ার মতো কোনো ঘটনা সেখানে ঘটেনি।’

সারাবাংলা/আরডি/এমআই

টপ নিউজ হেফাজত

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর