মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনী দিবসে শতাধিক মৃত্যুর ‘লজ্জা’
২৮ মার্চ ২০২১ ০৮:৫৮
মিয়ানমার জান্তা প্রশাসনের সশস্ত্র বাহিনী দিবস উদযাপনের মধ্যেই দেশজুড়ে গণতন্ত্রপন্থিদের বিক্ষোভে গুলি চালিয়ে শিশুসহ অন্তত ১১৪ জনকে হত্যা করা হয়েছে। স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাতে এ খবর জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
১ ফেব্রুয়ারির সেনাঅভ্যুত্থানের পর থেকে গণতন্ত্রপন্থিদের টানা বিক্ষোভে শনিবারই (২৭ মার্চ) সবচেয়ে বেশি প্রাণহানির খবর পাওয়া গেলো।
গণতন্ত্রপন্থিদের ওপর জান্তা বাহিনীর নির্বিচারে গুলি চালানোর প্রতিশোধ নিতে মিয়ানমারের আদিবাসীদের বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র গ্রুপগুলো ফুঁসে উঠছে। এরই মধ্যে, দ্য কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়ন থাইল্যান্ড সীমান্তের কাছে একটি সেনাচৌকিতে হামলা চালিয়ে এক লেফটেন্যান্ট কর্নেলসহ ১০ সেনা সদস্যকে হত্যা করার দাবি করেছে। এর জবাবে কারেন বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে থাকা অঞ্চলের একটি গ্রামে বিমান হামলা চলেছে। হামলায় অন্তত দুই জনের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছে সামরিক বাহিনী।
এ ব্যাপারে অবশ্য মিয়ানমার সেনাবাহিনী মুখ খোলেনি। স্থানীয় এক সুশীল সমাজ গ্রুপের বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স মৃত্যুর খবর জানিয়েছে।
শনিবার ইয়াঙ্গুন, মানডালাসহ বিভিন্ন শহরে গুলির হুমকি উপেক্ষা করে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী রাস্তায় নেমে আসার পর নিরাপত্তা বাহিনী তাদের ওপর চড়াও হয় বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
ইয়াঙ্গুনে দালা শহরতলীর পুলিশ স্টেশনের বাইরে জড়ো হওয়া বিক্ষোভকারীদের ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে অন্তত চার জনের মৃত্যু এবং ১০ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম মিয়ানমার নাও। ইয়াঙ্গুনে সব মিলিয়ে অন্তত ২৭ বিক্ষোভকারীকে হত্যা করা হয়েছে।
ইয়াঙ্গুনের উত্তরের জেলা ইনসেইনে এক বিক্ষোভে গুলি চলার পর তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে স্থানীয় অনুর্ধ্ব-২১ ফুটবল দলের এক খেলোয়াড়ও রয়েছেন।
মানডালার বিক্ষোভে অন্তত ৪০ জনের মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করেছে মিয়ানমার নাও। মৃতদের মধ্যে ১৩ বছর বয়সী এক কিশোরীও রয়েছে।
সব মিলিয়ে শনিবার মিয়ানমারজুড়ে অন্তত ১১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছে মিয়ানমার নাও। রয়টার্স নিহতের এ সংখ্যা সঠিক কিনা, তা যাচাই করতে পারেনি। সামরিক বাহিনীর এক মুখপাত্রের কাছে এ প্রসঙ্গে জানতে চেয়ে ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।
অন্যদিকে, অনলাইন ফোরামে ক্ষমতাচ্যুত আইনপ্রণেতাদের সংগঠন সিআরপিএইচের মুখপাত্র ড. সাসা বলেছেন, সশস্ত্র বাহিনীর জন্য লজ্জা দিবস। চারশর বেশি নিরাপরাধ বেসামরিক মানুষকে হত্যার পর সামরিক বাহিনীর জেনারেলরা সশস্ত্র বাহিনী দিবস পালন করছেন, যা লজ্জার।
এছাড়াও, সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে রাজধানী নেইপিডোতে সামরিক কুচকাওয়াজে মিয়ানমারের শীর্ষ জেনারেল মিন অং হ্লাইং সাধারণ নির্বাচন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি পুনঃব্যক্ত করেছেন। যদিও সময়সীমার ব্যাপারে তিনি কিছু বলেননি।
সারাবাংলা/একেএম