রেইনট্রি ধর্ষণ মামলা: ৪ বছরেও শেষ হয়নি বিচার, জামিনে আসামিরা
২৮ মার্চ ২০২১ ১০:১৫
ঢাকা: বনানীর দ্য রেইনট্রি হোটেলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের ঘটনার চার বছর পূর্ণ হচ্ছে রোববার (২৮ মার্চ)। কিন্তু চার বছর পেরিয়ে গেলেও শেষ হয়নি ধর্ষণের মামলার বিচার। এদিকে বিচার বিলম্ব হওয়ায় একে একে জামিনে বেরিয়ে গেছেন মামলার পাঁচ আসামিই। তবে দ্রুতই মামলার বিচার কাজ শেষ হবে বলে আশা করছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা।
বর্তমানে মামলাটি ঢাকার সাত নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক বেগম মোছা. কামরুন্নাহারের আদালতে বিচারাধীন। সর্বশেষ ১৪ মার্চ মামলাটি সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ধার্য ছিল। ওইদিন মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা বনানী থানার তৎকালীন পুলিশ পরিদর্শক আব্দুল মতিন সাক্ষ্য দেন। ৪ এপ্রিল মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের পরবর্তী তারিখ ধার্য রয়েছে।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট আদালতের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর আফরোজা ফারহানা আহমেদ (অরেঞ্জ) সারাবাংলাকে জানান, ‘বর্তমানে মামলাটি সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে। আর মাত্র একজনের সাক্ষ্যগ্রহণ রয়েছে। এরপর আসামিদের ফৌজদারি কার্যবিধি আইনের-৩৪২ ধারায় আত্মপক্ষ, তারপর যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত রায়ের তারিখ ধার্য করবেন। আশা করছি, দুই/তিন মাসের মধ্যেই মামলাটির বিচার শেষ হবে। মামলার বিচার আরও আগেই শেষ হতে পারতো। কিন্তু সাক্ষীরা আদালতে হাজির না হওয়ায় এবং মাঝে করোনার কারণে আদালত সাধারণ ছুটিতে থাকায় বিচার কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। তবে রায়ে আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা প্রত্যাশা করছি।’
বাদী পক্ষের আইনজীবী ফারুক আহাম্মদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘মামলাটি এখন অনেকটায় গুছিয়ে এনেছি। আসামিদের বিরুদ্ধে সাক্ষীরা সাক্ষ্য দিয়েছেন। আশা করছি, আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা হবে।’
এদিকে আসামি পক্ষের আইনজীবী হেমায়েত উদ্দিন মোল্যা সারাবাংলাকে বলেন, ‘আসামিদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সত্য নয়। মেডিকেল রিপোর্টে তাদের বিরুদ্ধে ৯ (এক) ধারার অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। ডাক্তার এসে সাক্ষ্যেও এটা বলে গেছেন। মামলাটির ট্রায়াল চলছে। ট্রায়ালের মাধ্যমে আসামিদের নিরাপরাধ প্রমাণ করতে সক্ষম হব। আশা করছি, তারা খালাস ও ন্যায় বিচার পাবেন।’
মামলাটিতে আপন জুয়েলার্সের কর্ণধার দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদ, তার বন্ধু সাদমান সাকিফ, দেহরক্ষী রহমত আলী ও গাড়িচালক বিল্লাল হোসেন ও নাইম আশরাফ। আসামিদের মধ্যে রহমত আলী ছাড়া অপর আসামিরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের ২৯ নভেম্বর সাফাত আহমেদের জামিন মঞ্জুর করে একই বিচারক। এর আগে বিভিন্ন সময় ধর্ষণের সহযোগী আসামি সাফাত আহমেদের দেহরক্ষী রহমত আলী ও গাড়িচালক বিল্লাল হোসেন এবং বন্ধু সাদমান সাকিব হাইকোর্ট থেকে জামিন পান।
২০১৭ সালের ৭ জুন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনের (ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার) পরিদর্শক ইসমত আরা এমি পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্রটি আদালতে দাখিল করেন।
অভিযোগপত্রে আসামি সাফাত আহমেদ ও নাঈম আশরাফ ওরফে এইচ এম হালিমের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(এক) ধারায় ধর্ষণের অভিযোগ করা হয়েছে। অপর আসামি সাফাত আহমেদের বন্ধু সাদমান সাকিফ, দেহরক্ষী রহমত আলী ও গাড়িচালক বিল্লাল হোসেনের বিরুদ্ধে ওই আইনের ৩০ ধারায় ধর্ষণে সহযোগিতার অভিযোগ আনা হয়েছে। ২০১৮ সালের ১৩ জুলাই একই আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। ওই বছরে ১৯ জুন একই ট্রাইব্যুনাল আসামিদের বিরুদ্ধ অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন।
সারাবাংলা/পিটিএম