হাসিনা-মোদি বৈঠক, ‘বাংলাদেশের জন্য আশ্বাসেই ভরসা’
২৮ মার্চ ২০২১ ২১:০০
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে দেশের জন্য শুধু আশ্বাস পাওয়া গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। রোববার (২৮ মার্চ) এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন তিনি।
এ বিষয়ে সাইফুল হক বলেন, এবারও বাংলাদেশ-ভারত শীর্ষ (হাসিনা-মোদি) বৈঠকে বাংলাদেশের অগ্রাধিকারসমূহ বাস্তবায়নে সুনির্দিষ্ট কোনো ঘোষণা বা পদক্ষেপ নেই। বাংলাদেশকে আবারও কেবল আশ্বাসেই ভরসা রাখতে বলা হোল। তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর পানি প্রবাহে বাংলাদেশের ন্যায্য হিস্যা প্রাপ্তিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কাছ সুস্পষ্ট কোনো বক্তব্যও পাওয়া গেল না।
তিনি বলেন, সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশিদের ধারাবাহিক হত্যাকাণ্ড বন্ধের ব্যাপারেও ভারতের দিক থেকে বিশ্বাসযোগ্য কোনো পদক্ষেপের কথা বলা হয়নি। বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের ব্যাপারেও ভারতের কার্যকরী ভূমিকা গ্রহণের কোনো ঘোষণা নেই। অথচ বাংলাদেশ ইতোমধ্যে ভারতের চাহিদামত তাদের সীমান্ত নিরাপত্তা ইস্যু থেকে শুরু করে ট্রানজিট-ট্রান্সশিপমেন্ট, বন্দর ব্যবহার, ফেনী নদীর পানি, ভারতের সুবিধার জন্য নদীর উপর সেতু প্রভৃতি সবকিছুই করে দেওয়া হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এবারকার সমঝোতা স্মারকে কানেক্টিভিটি বা সংযুক্তির ওপর যেসব উদ্যোগের কথা বলা হয়েছে তারও প্রধান বেনিফিশিয়ারি হবে ভারত। নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে সড়ক পথে যে সংযোগের কথা বলে আসছে বাংলাদেশ। কিন্তু ভারতের নানা বাধায় তা এখনও কার্যকর হয়নি।
সাইফুল হক আরও করেন, অভিজ্ঞতা এটা প্রমাণ করেছে যে, ভারতের প্রতি নতজানু নীতি থেকে বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থের সমস্যাসমূহ সমাধান করা যাবে না। বাংলাদেশের অগ্রাধিকারসমূহ ভারতের কোনো দয়া দাক্ষিণ্যের বিষয় নয়, এসব বিষয় বাংলাদেশের ন্যায্য পাওনা।
তিনি বলেন, ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সমীকরণের কারণে তিস্তার পানিসহ ঝুলে থাকা সমস্যাসমূহ অনির্দিষ্টকাল ঝুলে থাকতে পারে না। সমতা, ন্যায্যতা, পারস্পরিক স্বার্থের স্বীকৃতি ও আন্তর্জাতিক আইন বিধিবিধান অনুযায়ী দ্বিপাক্ষিক সমস্যাসমূহের সমাধানের কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার (২৬ মার্চ) সকালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকীর আয়োজনে অংশ নিতে দুদিনের সফরে ঢাকায় আসেন নরেন্দ্র মোদি। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিমানবন্দরে তাকে অভ্যর্থনা জানান। এরপর তিনি শুক্রবার বিকেলে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
মোদির সফরের দ্বিতীয় দিন শনিবার (২৭ মার্চ) বিকেলে ঢাকায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বাংলাদেশ–ভারত শীর্ষ বৈঠক হয়। এরপর ৫টি সমঝোতা স্মারক সই এবং ৭টি প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়।
এর আগে, শনিবার সকালে সাতক্ষীরা এবং গোপালগঞ্জে মন্দির পরিদর্শন এবং টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধে শ্রদ্ধা জানিয়ে ঢাকায় ফেরেন মোদি।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/এনএস