চাঁদাবাজির মামলায় শাহাদাতকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ
৩১ মার্চ ২০২১ ২১:১৮
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চাঁদাবাজির মামলায় চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক শাহাদাত হোসেনকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশের আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। তবে তাকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি পেয়েছে পুলিশ। এছাড়া সড়ক বন্ধ করে সমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের পর গ্রেফতার হওয়া বিএনপির ১১ নেতাকর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বুধবার (৩১ মার্চ) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সরওয়ার জাহানের আদালতে শাহাদাতকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদনের শুনানি হয়। আর অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মহিউদ্দিন মুরাদের আদালতে অপর মামলার রিমান্ড আবেদনের শুনানি হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে নগরীর চকবাজার থানায় বিএনপি নেত্রী লুসি খান কোটি টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে শাহাদাতের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছে নগর গোয়েন্দা পুলিশের উত্তর বিভাগ। তদন্তকারী কর্মকর্তা শাহাদাতকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দশদিনের রিমান্ডের আবেদন করেন।
তদন্তকারী কর্মকর্তা নগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক (উত্তর) ওসমান গণি সারাবাংলাকে বলেন, ‘আদালত শুনানি শেষে রিমান্ডের আবেদন নামঞ্জুর করেছেন। তবে জেলগেটে একদিন জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন।’
সংঘর্ষের পর আটক হলেও এবং এ ঘটনায় দুটি মামলা দায়ের হলেও পুলিশ শাহাদাতকে এসব মামলায় গ্রেফতার দেখায়নি। শুধু চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেফতার দেখিয়েছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে হেফাজতে ইসলামের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সংঘাতে সারাদেশে হতাহতের ঘটনায় সোমবার বিকেলে বিএনপি চট্টগ্রাম নগরীতে সমাবেশের আয়োজন করে। নগরীর নাসিমন ভবনের দলীয় কার্যালয়ের সামনে সড়ক দখল করে বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু হলে পুলিশ তাদের সেখান থেকে সরে যেতে বলে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের ধাওয়া, পাল্টা-ধাওয়া, সংঘর্ষে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে। সংঘর্ষে ৬ পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়।
পুলিশ নাসিমন ভবনে অভিযান চালিয়ে ১৬ জনকে আটক করে। পরে নগরীর পাঁচলাইশে ডা. শাহাদাত হোসেনের মালিকানাধীন ট্রিটমেন্ট হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে তাকে এবং ব্যক্তিগত সহকারী মারুফুল হক চৌধুরীকে আটক করে।
এ ঘটনায় কোতোয়ালী থানায় দু’টি মামলা দায়ের হয়। কোতোয়ালী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রবিউল ইসলাম বাদি হয়ে সন্ত্রাস দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন। এতে বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, শাহাদাত হোসেন, দক্ষিণ জেলার আহবায়ক আবু সুফিয়ান, নগর কমিটির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, মারুফুল হক এবং নাসিমন ভবন থেকে আটক ১৬ জনসহ ৫৭ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এছাড়া ট্রাফিক সার্জেন্ট নাসির উদ্দিন বাদি হয়ে বিস্ফোরক ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে আরেকটি মামলা করেছেন। এতে শামীম, শাহাদাত, সুফিয়ান, বক্কর, মারুফুল হকসহ ৪২ জনকে আসামি করা হয়েছে।
নগর পুলিশের কোতোয়ালি জোনের সহকারী কমিশনার নোবেল চাকমা সারাবাংলাকে জানিয়েছেন, সন্ত্রাস দমনের আইনের মামলায় নাসিমন ভবন থেকে আটক ১৫ জন এবং শাহাদাতের ব্যক্তিগত সহকারী মারুফুলকে গ্রেফতার দেখানো হয়। এদের মধ্যে পাঁচজন মহিলাও আছেন। তাদের সাতদিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছিল। আদালত মহিলাদের বাদ দিয়ে বাকি ১১ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
বিস্ফোরক আইনের মামলায় শুধু মারুফুল হককে গ্রেফতার দেখানো হয়েছিল। তাকে ওই মামলায়ও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাতদিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছিল। আদালত একদিন মঞ্জুর করেছেন বলে জানান নোবেল চাকমা।
সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম