ঢাকার বাইরেও ছড়াচ্ছে সংক্রমণ, শীর্ষে মৌলভীবাজার
১ এপ্রিল ২০২১ ১৬:২৪
ঢাকা: দেশে নভেল করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণের হার বাড়ছে। মাত্র একদিনের ব্যবধানে দেশে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ জেলা মাত্র ৬টি থেকে বেড়ে ৩১টি হয়ে গেছে। অন্যান্য সময়ের মতো ঢাকাতে সংক্রমণ বেশি শনাক্ত হলেও গত দুই সপ্তাহে মৌলভীবাজারে সর্বোচ্চ সংক্রমণের হার দেখা গেছে। তিন সপ্তাহ আগে যেখানে এই জেলায় সংক্রমণের হার ছিল পাঁচ শতাংশ, সেখানে গত দুই সপ্তাহে সংক্রমণের হার ৩০ শতাংশ।
এছাড়াও মুন্সীগঞ্জ ও চট্টগ্রামে গত দুই সপ্তাহে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংক্রমণের হার দেখা গেছে। রাজধানী ঢাকায় গত দুই সপ্তাহে সংক্রমণের হার ছিল তৃতীয় সর্বোচ্চ ২৬ শতাংশ। ইতোমধ্যেই সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোকে সরকারের ১৮ দফা নির্দেশনার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় বিশেষ নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, সংক্রমণ পরিস্থিতি বিবেচনায় দেশের জেলাগুলোকে তিন ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে যেসব স্থানে সংক্রমণের হার টানা দুই সপ্তাহ ১০ থেকে ২০ শতাংশ বা তার উপরে, সেগুলোকে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। যেসব স্থানে সংক্রমণ হার ৫ থেকে ১০ শতাংশ সেসব স্থানকে মধ্যম ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এছাড়াও যে সব স্থানে শূণ্য থেকে পাঁচ শতাংশের মধ্যে সংক্রমণ হার আছে সেসব এলাকাকে নিম্ম ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে।
২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণ ঝুঁকি বেড়েছে ২৫ জেলায়:
মঙ্গলবার (৩০ মার্চ) দেশের বিভিন্ন এলাকার নমুনা পরীক্ষা ও সংক্রমণ শনাক্তের হার অনুযায়ী উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ছিল ছয়টি জেলা। এগুলো হলো মুন্সীগঞ্জ, চট্টগ্রাম, ঢাকা, খুলনা, নারায়ণগঞ্জ ও চাঁদপুর। এদিন মধ্যম থেকে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে ছিল ১৯টি জেলা। এগুলো হলো মৌলভীবাজার, সিলেট, নরসিংদী, রাজবাড়ী, ফেনী, শরীয়তপুর, লক্ষ্মীপুর, কুমিল্লা, বরিশাল, রাজশাহী, নড়াইল, নীলফামারী, গাজীপুর, ফরিদপুর, মাদারীপুর, নওগাঁ, রংপুর, কিশোরগঞ্জ ও টাঙ্গাইল।
এ দিন শনাক্তের হার বিবেচনায় কম ঝুঁকি থেকে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে হিসেবে ছিল পাঁচটি জেলা। এগুলো হলো- নোয়াখালী, বগুড়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, যশোর ও নাটোর।
কিন্তু একদিনের ব্যবধানে দেখা যায় দেশে সংক্রমণ শনাক্তের হার বেড়ে যাওয়ায় উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে যুক্ত হয়েছে আরও ২৫টি জেলা। এর মধ্যে মৌলভীবাজারের সংক্রমণ শনাক্তের হার দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে বলে দেখা যাচ্ছে।
দেশে বর্তমানে এমন কোনো জেলা নেই যেটিকে কম ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে বলা যায়। তবে কম ঝুঁকিপূর্ণ ও মধ্যম থেকে কম ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে এখনো কিছু জেলা আছে যেখানে সংক্রমণ শনাক্তের হার তুলনামূলক কম।
মূলত ঢাকা ও অন্যান্য যেসব জেলার সঙ্গে যান চলাচল বেশি সেসব স্থানেই সংক্রমণ ছড়িয়েছে বলে দাবি করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মকর্তারা।
দেশের উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোর মধ্যে শীর্ষে যেসব জেলা
মৌলভীবাজার
দেশের উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ জেলা হিসেবে বর্তমানে মৌলভীবাজার জেলাকেই বিবেচনা করা হচ্ছে। এই জেলায় গত দুই সপ্তাহে সংক্রমণ শনাক্তের হার ২৯ দশমিক ৮৬ শতাংশ। এখানে এই দুই সপ্তাহে ২২১টি নমুনা পরীক্ষা করে ৬৬ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে।
এই জেলায় গত দুই সপ্তাহের আগের ১৪ দিনের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায় ১৭০টি নমুনা পরীক্ষা করে ৯ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে এ সময় সংক্রমণের হার পাঁচ দশমিক ২৯ শতাংশ। অর্থাৎ মাসের প্রথম ১৪ দিনের তুলনায় গত দুই সপ্তাহে এই জেলায় সংক্রমণ বেড়েছে ২৪ দশমিক ৫৭ শতাংশ।
মুন্সীগঞ্জ
দেশের উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ জেলা হিসেবে গত দুই সপ্তাহের তথ্য বিশ্লেষণ করে বর্তমানে দ্বিতীয় অবস্থানে মুন্সীগঞ্জ জেলাকেই বিবেচনা করা হচ্ছে। এই দুই সপ্তাহে এখানে ৪৪৪টি নমুনা পরীক্ষা করে ১২৬ জনের মাঝে সংক্রমণ শনাক্ত হয় যা নমুনা পরীক্ষার অনুপাতে ২৮ দশমিক ৩৮ শতাংশ।
এই দুই সপ্তাহের আগের ১৪ দিনের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায় এখানে ২৩৮টি নমুনা পরীক্ষা করে ২৮ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে সেই ১৪ দিন মুন্সীগঞ্জে সংক্রমণের হার ছিল ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ। অর্থাৎ মাসের প্রথম ১৪ দিনের তুলনায় গত দুই সপ্তাহে এই জেলায় সংক্রমণ বেড়েছে ১৬ দশমিক ৬২ শতাংশ।
চট্টগ্রাম
এই জেলায় গত দুই সপ্তাহে আট হাজার ৭৫৭টি নমুনা পরীক্ষা করে দুই হাজার ৪৭০ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। নমুনা পরীক্ষার অনুপাতে এই দুই সপ্তাহে চট্টগ্রাম জেলায় সংক্রমণের হার ২৮ দশমিক ২১ শতাংশ। শনাক্ত হার বিবেচনায় তাই চট্টগ্রামকে জেলাকে বিবেচনা করা হচ্ছে তৃতীয় উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে।
এই জেলায় গত দুই সপ্তাহের আগের ১৪ দিনের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায় পাঁচ হাজার ৭৬৮টি নমুনা পরীক্ষা করে এক হাজার ২৬০ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে সেই ১৪ দিন চট্টগ্রামে সংক্রমণের হার ছিল ২১ দশমিক ৮৪ শতাংশ। অর্থাৎ মাসের প্রথম ১৪ দিনের তুলনায় গত দুই সপ্তাহে এই জেলায় সংক্রমণ বেড়েছে ৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ।
ঢাকা
এই জেলায় গত দুই সপ্তাহে ৬২ হাজার ৩৬২টি নমুনা পরীক্ষা করে ১৬ হাজার ৫৯৮ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। নমুনা পরীক্ষার অনুপাতে এই দুই সপ্তাহে ঢাকা জেলায় সংক্রমণের হার ২৬ দশমিক ৬২ শতাংশ। শনাক্ত হার বিবেচনায় তাই ঢাকা জেলাকে বিবেচনা করা হচ্ছে চতুর্থ উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে।
এই জেলায় গত দুই সপ্তাহের আগের ১৪ দিনের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায় এখানে ৩৫ হাজার ২৬৬টি নমুনা পরীক্ষা করে চার হাজার ৮০৬ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে এ সময় সংক্রমণের হার দেখা যায় ১৩ দশমিক ৬৩ শতাংশ। অর্থাৎ মাসের প্রথম ১৪ দিনের তুলনায় গত দুই সপ্তাহে এই জেলায় সংক্রমণ বেড়েছে ১২ দশমিক ৯৯ শতাংশ।
সিলেট
এই জেলায় গত দুই সপ্তাহে এক হাজার ৯৭০টি নমুনা পরীক্ষা করে ৪৬০ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। নমুনা পরীক্ষার অনুপাতে এই দুই সপ্তাহে সিলেট জেলায় সংক্রমণের হার ২৩ দশমিক ৩৫ শতাংশ। শনাক্ত হার বিবেচনায় তাই সিলেট জেলাকে বিবেচনা করা হচ্ছে পঞ্চম উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে।
এই জেলায় গত দুই সপ্তাহের আগের ১৪ দিনের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায় এখানে ১ হাজার ৩৩২টি নমুনা পরীক্ষা করে ৯৬ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে এ সময় সংক্রমণের হার দেখা যায় ৭ দশমিক ২১ শতাংশ। অর্থাৎ মাসের প্রথম ১৪ দিনের তুলনায় গত দুই সপ্তাহে এই জেলায় সংক্রমণ বেড়েছে ১৬ দশমিক ১৪ শতাংশ।
নরসিংদী
এই জেলায় গত দুই সপ্তাহে এক হাজার ৩২০টি নমুনা পরীক্ষা করে ২৮৭ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। নমুনা পরীক্ষার অনুপাতে এই দুই সপ্তাহে নরসিংদী জেলায় সংক্রমণের হার ২১ দশমিক ৭৪ শতাংশ। শনাক্ত হার বিবেচনায় তাই নরসিংদী জেলাকে বিবেচনা করা হচ্ছে ষষ্ঠ উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে।
এই জেলায় গত দুই সপ্তাহের আগের ১৪ দিনের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায় এখানে ১ হাজার ১৫০টি নমুনা পরীক্ষা করে ৭৬ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে এ সময় সংক্রমণের হার দেখা যায় ৬ দশমিক ৬১ শতাংশ। অর্থাৎ মাসের প্রথম ১৪ দিনের তুলনায় গত দুই সপ্তাহে এই জেলায় সংক্রমণ বেড়েছে ১৫ দশমিক ১৩ শতাংশ।
খুলনা
এই জেলায় গত দুই সপ্তাহে ৪৮২ টি নমুনা পরীক্ষা করে ১০৩ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। নমুনা পরীক্ষার অনুপাতে এই দুই সপ্তাহে খুলনা জেলায় সংক্রমণের হার ২১ দশমিক ৩৭ শতাংশ। শনাক্ত হার বিবেচনায় তাই খুলনা জেলাকে বিবেচনা করা হচ্ছে সপ্তম উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে।
এই জেলায় গত দুই সপ্তাহের আগের ১৪ দিনের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায় এখানে ১৭৭টি নমুনা পরীক্ষা করে ৩৩ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে এ সময় সংক্রমণের হার দেখা যায় ১৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ।অর্থাৎ মাসের প্রথম ১৪ দিনের তুলনায় গত দুই সপ্তাহে এই জেলায় সংক্রমণ বেড়েছে ২ দশমিক ৭৩ শতাংশ।
নারায়ণগঞ্জ
এই জেলায় গত দুই সপ্তাহে তিন হাজার ৭৯৩ টি নমুনা পরীক্ষা করে ৭৯৮ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। নমুনা পরীক্ষার অনুপাতে এই দুই সপ্তাহে নারায়ণগঞ্জ জেলায় সংক্রমণের হার ২১ দশমিক ০৪ শতাংশ। শনাক্ত হার বিবেচনায় তাই নারায়ণগঞ্জ জেলাকে বিবেচনা করা হচ্ছে অষ্টম উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে।
এই জেলায় গত দুই সপ্তাহের আগের ১৪ দিনের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায় এখানে এক হাজার ৯১৮টি নমুনা পরীক্ষা করে ২২২ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে এ সময় সংক্রমণের হার দেখা যায় ১১ দশমিক ৫৭ শতাংশ। অর্থাৎ মাসের প্রথম ১৪ দিনের তুলনায় গত দুই সপ্তাহে এই জেলায় সংক্রমণ বেড়েছে ৯ দশমিক ৪৭ শতাংশ।
দেশের মধ্যম ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোর (১০ থেকে ২০ শতাংশ সংক্রমণের হার) মধ্যে শীর্ষে যে সব জেলা:
রাজবাড়ী
এই জেলায় গত দুই সপ্তাহে ৪৮৮টি নমুনা পরীক্ষা করে ৯৭ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। নমুনা পরীক্ষার অনুপাতে এই দুই সপ্তাহে রাজবাড়ী জেলায় সংক্রমণের হার ১৯ দশমিক ৮৮ শতাংশ।
এই জেলায় গত দুই সপ্তাহের আগের ১৪ দিনের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায় এখানে ২৯৪টি নমুনা পরীক্ষা করে ২০ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে এ সময় সংক্রমণের হার দেখা যায় ৬ দশমিক ৮ শতাংশ। অর্থাৎ মাসের প্রথম ১৪ দিনের তুলনায় গত দুই সপ্তাহে এই জেলায় সংক্রমণ বেড়েছে ১৩ দশমিক ০৮ শতাংশ।
ফেনী
এই জেলায় গত দুই সপ্তাহে ৪৫২টি নমুনা পরীক্ষা করে ৮৩ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। নমুনা পরীক্ষার অনুপাতে এই দুই সপ্তাহে ফেনী জেলায় সংক্রমণের হার ১৮ দশমিক ৩৬ শতাংশ।
এই জেলায় গত দুই সপ্তাহের আগের ১৪ দিনের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায় এখানে ৩৫১টি নমুনা পরীক্ষা করে ৩১ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে এ সময় সংক্রমণের হার দেখা যায় ৮ দশমিক ৮৩ শতাংশ। অর্থাৎ মাসের প্রথম ১৪ দিনের তুলনায় গত দুই সপ্তাহে এই জেলায় সংক্রমণ বেড়েছে ৯ দশমিক ৫৩ শতাংশ।
নোয়াখালী
এই জেলায় গত দুই সপ্তাহে ৯২৫টি নমুনা পরীক্ষা করে ১৬৭ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। নমুনা পরীক্ষার অনুপাতে এই দুই সপ্তাহে নোয়াখালী জেলায় সংক্রমণের হার ১৮ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ।
এই জেলায় গত দুই সপ্তাহের আগের ১৪ দিনের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায় এখানে ৫১০টি নমুনা পরীক্ষা করে ২১ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে এ সময় সংক্রমণের হার দেখা যায় ৪ দশমিক ১২ শতাংশ। অর্থাৎ মাসের প্রথম ১৪ দিনের তুলনায় গত দুই সপ্তাহে এই জেলায় সংক্রমণ বেড়েছে ১৩ দশমিক ৯৩ শতাংশ।
চাঁদপুর
এই জেলায় গত দুই সপ্তাহে ৯৯৮টি নমুনা পরীক্ষা করে ১৭৮ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। নমুনা পরীক্ষার অনুপাতে এই দুই সপ্তাহে চাঁদপুর জেলায় সংক্রমণের হার ১৭ দশমিক ৮৪ শতাংশ।
এই জেলায় গত দুই সপ্তাহের আগের ১৪ দিনের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায় এখানে ৫৮৭টি নমুনা পরীক্ষা করে ৬৫ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে এ সময় সংক্রমণের হার দেখা যায় ১১ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। অর্থাৎ মাসের প্রথম ১৪ দিনের তুলনায় গত দুই সপ্তাহে এই জেলায় সংক্রমণ বেড়েছে ৬ দশমিক ৭৭ শতাংশ।
শরীয়তপুর
এই জেলায় গত দুই সপ্তাহে ৩৪০টি নমুনা পরীক্ষা করে ৫৯ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। নমুনা পরীক্ষার অনুপাতে এই দুই সপ্তাহে শরীয়তপুর জেলায় সংক্রমণের হার ১৭ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
এই জেলায় গত দুই সপ্তাহের আগের ১৪ দিনের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায় এখানে ১৬২টি নমুনা পরীক্ষা করে ১২ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে এ সময় সংক্রমণের হার দেখা যায় ৭ দশমিক ৪১ শতাংশ। অর্থাৎ মাসের প্রথম ১৪ দিনের তুলনায় গত দুই সপ্তাহে এই জেলায় সংক্রমণ বেড়েছে ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ।
লক্ষ্মীপুর
এই জেলায় গত দুই সপ্তাহে ৪৮২টি নমুনা পরীক্ষা করে ৬৯ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। নমুনা পরীক্ষার অনুপাতে এই দুই সপ্তাহে লক্ষ্মীপুর জেলায় সংক্রমণের হার ১৪ দশমিক ৩২ শতাংশ।
এই জেলায় গত দুই সপ্তাহের আগের ১৪ দিনের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায় এখানে ২৮৩টি নমুনা পরীক্ষা করে ২২ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে এ সময় সংক্রমণের হার দেখা যায় ৭ দশমিক ৭৭ শতাংশ। অর্থাৎ মাসের প্রথম ১৪ দিনের তুলনায় গত দুই সপ্তাহে এই জেলায় সংক্রমণ বেড়েছে ৬ দশমিক ৫৫ শতাংশ।
কুমিল্লা
এই জেলায় গত দুই সপ্তাহে দুই হাজার ৮৩টি নমুনা পরীক্ষা করে ২৯৩ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। নমুনা পরীক্ষার অনুপাতে এই দুই সপ্তাহে কুমিল্লা জেলায় সংক্রমণের হার ১৪ দশমিক ০৭ শতাংশ।
এই জেলায় গত দুই সপ্তাহের আগের ১৪ দিনের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায় এখানে এক হাজার ৪৩৬টি নমুনা পরীক্ষা করে ১২২ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে এ সময় সংক্রমণের হার দেখা যায় ৮ দশমিক ৫ শতাংশ। অর্থাৎ মাসের প্রথম ১৪ দিনের তুলনায় গত দুই সপ্তাহে এই জেলায় সংক্রমণ বেড়েছে ৫ দশমিক ৫৭ শতাংশ।
বরিশাল
এই জেলায় গত দুই সপ্তাহে এক হাজার ৪১৭টি নমুনা পরীক্ষা করে ১৯০ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। নমুনা পরীক্ষার অনুপাতে এই দুই সপ্তাহে বরিশাল জেলায় সংক্রমণের হার ১৩ দশমিক ৪১ শতাংশ।
এই জেলায় গত দুই সপ্তাহের আগের ১৪ দিনের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায় এখানে ৬৮১টি নমুনা পরীক্ষা করে ৩৮ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে এ সময় সংক্রমণের হার দেখা যায় ৫ দশমিক ৫৮ শতাংশ। অর্থাৎ মাসের প্রথম ১৪ দিনের তুলনায় গত দুই সপ্তাহে এই জেলায় সংক্রমণ বেড়েছে ৭ দশমিক ৮৩ শতাংশ।
বগুড়া
এই জেলায় গত দুই সপ্তাহে এক হাজার ৩২৪টি নমুনা পরীক্ষা করে ১৮২ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। নমুনা পরীক্ষার অনুপাতে এই দুই সপ্তাহে বগুড়া জেলায় সংক্রমণের হার ১৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ।
এই জেলায় গত দুই সপ্তাহের আগের ১৪ দিনের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায় এখানে এক হাজার ২০২টি নমুনা পরীক্ষা করে ৪৬ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে এ সময় সংক্রমণের হার দেখা যায় ৩ দশমিক ৮৩ শতাংশ। অর্থাৎ মাসের প্রথম ১৪ দিনের তুলনায় গত দুই সপ্তাহে এই জেলায় সংক্রমণ বেড়েছে ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ।
রাজশাহী
এই জেলায় গত দুই সপ্তাহে এক হাজার ৮৬৪টি নমুনা পরীক্ষা করে ২৫০ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। নমুনা পরীক্ষার অনুপাতে এই দুই সপ্তাহে রাজশাহী জেলায় সংক্রমণের হার ১৩ দশমিক ৪১ শতাংশ।
এই জেলায় গত দুই সপ্তাহের আগের ১৪ দিনের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায় এখানে এক হাজার ২০৪টি নমুনা পরীক্ষা করে ৯৪ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে এ সময় সংক্রমণের হার দেখা যায় ৭ দশমিক ৮১ শতাংশ। অর্থাৎ মাসের প্রথম ১৪ দিনের তুলনায় গত দুই সপ্তাহে এই জেলায় সংক্রমণ বেড়েছে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ।
নড়াইল
এই জেলায় গত দুই সপ্তাহে ২১৮টি নমুনা পরীক্ষা করে ২৮ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। নমুনা পরীক্ষার অনুপাতে এই দুই সপ্তাহে নড়াইল জেলায় সংক্রমণের হার ১২ দশমিক ৮৪ শতাংশ।
এই জেলায় গত দুই সপ্তাহের আগের ১৪ দিনের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায় এখানে ১১৫টি নমুনা পরীক্ষা করে ১১ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে এ সময় সংক্রমণের হার দেখা যায় ৯ দশমিক ৫৭ শতাংশ।
অর্থাৎ মাসের প্রথম ১৪ দিনের তুলনায় গত দুই সপ্তাহে এই জেলায় সংক্রমণ বেড়েছে ৩ দশমিক ২৭ শতাংশ।
নীলফামারী
এই জেলায় গত দুই সপ্তাহে ৩১২টি নমুনা পরীক্ষা করে ৪০ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। নমুনা পরীক্ষার অনুপাতে এই দুই সপ্তাহে নীলফামারী জেলায় সংক্রমণের হার ১২ দশমিক ৮২ শতাংশ।
এই জেলায় গত দুই সপ্তাহের আগের ১৪ দিনের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায় এখানে ২১৮টি নমুনা পরীক্ষা করে ১৫ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে এ সময় সংক্রমণের হার দেখা যায় ৬ দশমিক ৮৮ শতাংশ। অর্থাৎ মাসের প্রথম ১৪ দিনের তুলনায় গত দুই সপ্তাহে এই জেলায় সংক্রমণ বেড়েছে ৫ দশমিক ৯৪ শতাংশ।
গাজীপুর
এই জেলায় গত দুই সপ্তাহে তিন হাজার ৪৫টি নমুনা পরীক্ষা করে ৩৯০ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। নমুনা পরীক্ষার অনুপাতে এই দুই সপ্তাহে গাজীপুর জেলায় সংক্রমণের হার ১২ দশমিক ৮১ শতাংশ।
এই জেলায় গত দুই সপ্তাহের আগের ১৪ দিনের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায় এখানে এক হাজার ৯৭৪টি নমুনা পরীক্ষা করে ১৫৩ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে এ সময় সংক্রমণের হার দেখা যায় ৭ দশমিক ৭৫ শতাংশ। অর্থাৎ মাসের প্রথম ১৪ দিনের তুলনায় গত দুই সপ্তাহে এই জেলায় সংক্রমণ বেড়েছে ৫ দশমিক ০৬ শতাংশ।
ফরিদপুর
এই জেলায় গত দুই সপ্তাহে এক হাজার ৩৩৯টি নমুনা পরীক্ষা করে ১৬৮ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। নমুনা পরীক্ষার অনুপাতে এই দুই সপ্তাহে ফরিদপুর জেলায় সংক্রমণের হার ১২ দশমিক ৫৫ শতাংশ।
এই জেলায় গত দুই সপ্তাহের আগের ১৪ দিনের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায় এখানে ৮৫৪টি নমুনা পরীক্ষা করে ৪৯ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে এ সময় সংক্রমণের হার দেখা যায় ৫ দশমিক ৭৪ শতাংশ। অর্থাৎ মাসের প্রথম ১৪ দিনের তুলনায় গত দুই সপ্তাহে এই জেলায় সংক্রমণ বেড়েছে ৬ দশমিক ৮১ শতাংশ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া
এই জেলায় গত দুই সপ্তাহে ৬৬৬টি নমুনা পরীক্ষা করে ৮৫ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। নমুনা পরীক্ষার অনুপাতে এই দুই সপ্তাহে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় সংক্রমণের হার ১২ দশমিক ৭৬ শতাংশ।
এই জেলায় গত দুই সপ্তাহের আগের ১৪ দিনের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায় এখানে ৬৫৭টি নমুনা পরীক্ষা করে ৩০ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে এ সময় সংক্রমণের হার দেখা যায় ৪ দশমিক ৫৭ শতাংশ। অর্থাৎ মাসের প্রথম ১৪ দিনের তুলনায় গত দুই সপ্তাহে এই জেলায় সংক্রমণ বেড়েছে ৮ দশমিক ১৯ শতাংশ।
যশোর
এই জেলায় গত দুই সপ্তাহে এক হাজার ১৭৭টি নমুনা পরীক্ষা করে ১৪৪ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। নমুনা পরীক্ষার অনুপাতে এই দুই সপ্তাহে যশোর জেলায় সংক্রমণের হার ১২ দশমিক ২৩ শতাংশ।
এই জেলায় গত দুই সপ্তাহের আগের ১৪ দিনের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায় এখানে ৭৫১টি নমুনা পরীক্ষা করে ২৯ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে এ সময় সংক্রমণের হার দেখা যায় ৩ দশমিক ৮৬ শতাংশ। অর্থাৎ মাসের প্রথম ১৪ দিনের তুলনায় গত দুই সপ্তাহে এই জেলায় সংক্রমণ বেড়েছে ৮ দশমিক ৩৭ শতাংশ।
মাদারীপুর
এই জেলায় গত দুই সপ্তাহে ৫৮০টি নমুনা পরীক্ষা করে ৬৮ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। নমুনা পরীক্ষার অনুপাতে এই দুই সপ্তাহে মাদারীপুর জেলায় সংক্রমণের হার ১১ দশমিক ৭২ শতাংশ।
এই জেলায় গত দুই সপ্তাহের আগের ১৪ দিনের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায় এখানে ৩১৪টি নমুনা পরীক্ষা করে ১৭ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে এ সময় সংক্রমণের হার দেখা যায় ৫ দশমিক ৪১ শতাংশ। অর্থাৎ মাসের প্রথম ১৪ দিনের তুলনায় গত দুই সপ্তাহে এই জেলায় সংক্রমণ বেড়েছে ৬ দশমিক ৩১ শতাংশ।
নওগাঁ
এই জেলায় গত দুই সপ্তাহে ৩৪৪টি নমুনা পরীক্ষা করে ৪০ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। নমুনা পরীক্ষার অনুপাতে এই দুই সপ্তাহে নওগাঁ জেলায় সংক্রমণের হার ১১ দশমিক ৬৩ শতাংশ।
এই জেলায় গত দুই সপ্তাহের পূর্বের ১৪ দিনের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায় এখানে ১৬১টি নমুনা পরীক্ষা করে ৯ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে এ সময় সংক্রমণের হার দেখা যায় ৫ দশমিক ৫৯ শতাংশ।
অর্থাৎ মাসের প্রথম ১৪ দিনের তুলনায় গত দুই সপ্তাহে এই জেলায় সংক্রমণ বেড়েছে ৬ দশমিক ০৪ শতাংশ।
রংপুর
এই জেলায় গত দুই সপ্তাহে ৮৯৮টি নমুনা পরীক্ষা করে ১০১ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। নমুনা পরীক্ষার অনুপাতে এই দুই সপ্তাহে রংপুর জেলায় সংক্রমণের হার ১১ দশমিক ২৫ শতাংশ।
এই জেলায় গত দুই সপ্তাহের আগের ১৪ দিনের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায় এখানে ৫০৩টি নমুনা পরীক্ষা করে ৩২ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে এ সময় সংক্রমণের হার দেখা যায় ৬ দশমিক ৩৬ শতাংশ। অর্থাৎ মাসের প্রথম ১৪ দিনের তুলনায় গত দুই সপ্তাহে এই জেলায় সংক্রমণ বেড়েছে ৪ দশমিক ৮৯ শতাংশ।
কিশোরগঞ্জ
এই জেলায় গত দুই সপ্তাহে এক হাজার ৪৯৩টি নমুনা পরীক্ষা করে ১৬৫ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। নমুনা পরীক্ষার অনুপাতে এই দুই সপ্তাহে কিশোরগঞ্জ জেলায় সংক্রমণের হার ১১ দশমিক ০৫ শতাংশ।
এই জেলায় গত দুই সপ্তাহের আগের ১৪ দিনের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায় এখানে ৯৪৯টি নমুনা পরীক্ষা করে ৫৬ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে এ সময় সংক্রমণের হার দেখা যায় ৫ দশমিক ৯ শতাংশ।
অর্থাৎ মাসের প্রথম ১৪ দিনের তুলনায় গত দুই সপ্তাহে এই জেলায় সংক্রমণ বেড়েছে ৫ দশমিক ১৫ শতাংশ।
নাটোর
এই জেলায় গত দুই সপ্তাহে ৪৩০টি নমুনা পরীক্ষা করে ৪৯ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। নমুনা পরীক্ষার অনুপাতে এই দুই সপ্তাহে নাটোর জেলায় সংক্রমণের হার ১১ দশমিক ৪ শতাংশ।
এই জেলায় গত দুই সপ্তাহের পূর্বের ১৪ দিনের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায় এখানে ৩৮২টি নমুনা পরীক্ষা করে ১৮ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে এ সময় সংক্রমণের হার দেখা যায় ৪ দশমিক ৭১ শতাংশ।
অর্থাৎ মাসের প্রথম ১৪ দিনের তুলনায় গত দুই সপ্তাহে এই জেলায় সংক্রমণ বেড়েছে ৬ দশমিক ৬৯ শতাংশ।
টাঙ্গাইল
এই জেলায় গত দুই সপ্তাহে এক হাজার ৭৪৮টি নমুনা পরীক্ষা করে ১৭৮ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। নমুনা পরীক্ষার অনুপাতে এই দুই সপ্তাহে টাঙ্গাইল জেলায় সংক্রমণের হার ১০ দশমিক ১৮ শতাংশ।
এই জেলায় গত দুই সপ্তাহের আগের ১৪ দিনের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায় এখানে ৮৭৫টি নমুনা পরীক্ষা করে ৬৩ জনের মাঝে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হয়। নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে এ সময় সংক্রমণের হার দেখা যায় ৭ দশমিক ২ শতাংশ। অর্থাৎ মাসের প্রথম ১৪ দিনের তুলনায় গত দুই সপ্তাহে এই জেলায় সংক্রমণ বেড়েছে ২ দশমিক ৯৮ শতাংশ।
এছাড়াও কক্সবাজারে ১০ শতাংশের উপরে কোভিড-১৯ সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ায় এই জেলাকেও মধ্যম ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা যা বলছেন:
স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এবং বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) কার্যকরী সদস্য ডা. মোশতাক হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, দেশে সংক্রমণের হার কম ছিল কিন্তু গত সপ্তাহ খানেক ধরে বাড়ছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে যে সংক্রমণ দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ার যে ট্রেন্ড দেখা যাচ্ছে তাকে সতর্কতার সঙ্গে বিবেচনায় নিয়ে অবশ্যই ব্যবস্থা নিতে হবে। মানুষের মাঝে সচেতনতা বাড়াতে হবে। ভ্যাকসিন নেওয়ার সংখ্যাও বাড়াতে হবে। কারণ ভ্যাকসিন কিন্তু মৃত্যুঝুঁকি অনেকটাই কমিয়ে আনে। এক্ষেত্রে কেউ সংক্রমিত হলেও তার হয়তোবা ঝুঁকির মাত্রা কমে আসবে। সব দিক বিবেচনায় বলবো, স্বাস্থ্যবিধি এনে সকলে মিলে যদি চেষ্টা করা হয় তবে এবারও এই সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখা যেতে পারে।
তিনি বলেন, দেশে যেভাবে এখন সংক্রমণ বাড়ছে সেটিকে আমরা দ্বিতীয় ওয়েভের সূচনা বলতে পারি। পরপর চার সপ্তাহ যদি সংক্রমণের হার এমন থাকে তবে সেটিকে ওয়েভ বলা যেতে পারে যার লক্ষণ এখন আছে। এই ধারা যদি কমাতে হয় তবে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে আর এর কোনো বিকল্প নেই।
সংক্রমণের মাত্রা কমানোর জন্য মাস্ক পরা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার দিকে গুরুত্ব দেন কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণে গঠিত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সদস্য এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক উপাচার্য ও ভাইরোলজি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম।
তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু হলেও মাস্ক পরার প্রবণতা ধরে রাখতে হবে। পাশাপাশি মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধি। অসুস্থ বোধ করলেই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়াটাও জরুরি, যেন প্রাথমিক পর্যায়েই চিকিৎসা শুরু করা যায়। এমনটা যদি করা যায় তবে হয়তোবা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হতে পারে বর্তমান পরিস্থিতি। একই সঙ্গে সরকারের পক্ষ থেকেও কার্যকরি ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন যেন সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।
জানতে চাইলে দেশে করোনাভাইরাসের নমুনার জিনোম সিকোয়েন্স নিয়ে কাজ করা গবেষক সৈয়দ মুক্তাদির আল সিয়াম সারাবাংলাকে বলেন, সংক্রমণ অনেক কারণেই বাড়তে পারে। তবে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে করণীয় একটাই, আর তা হলো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সম্মিলিত সচেতনতা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করা খুব বেশি জরুরি এবং সেটা অবশ্যই সঠিক নিয়মে হতে হবে। নাক খোলা রেখে থুঁতনিতে মাস্ক ঝুলিয়ে রাখাটা অযথা কানের ওপর চাপ তৈরি করা ছাড়া আর কিছু না। মাস্ক মূলত আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে সংক্রমণের সম্ভাবনা কমায় এবং আক্রান্ত হওয়া প্রতিরোধেও কিছুটা সহায়তা করে। তাই শুধু নিজে মাস্ক পরলেই নিরাপদ থাকা সম্ভব হবে না, সম্মিলিতভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানলে সবাই নিরাপদে থাকবে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজের ভাইরোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. নুসরাত সুলতানা লিমা সারাবাংলাকে বলেন, দেশে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে একমাত্র করণীয় হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, বিশেষ করে মাস্ক পরার অভ্যাসটা চালু করা। কেউ মাস্ক পরে যদি বাইরে যান, তিনি হাঁচি-কাশি দিলেও কিন্তু মাস্ক তার কাছ থেকে ভাইরাস ছড়ানোর সম্ভাবনা কমিয়ে দেবে। একইসঙ্গে অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করলে তার কাছ থেকে যেকোনোভাবেই ভাইরাস ছড়ানোর সম্ভাবনা কমবে।
স্বাস্থ্য অধিদফতর যা বলছে:
দৈনিক হিসেবে এবং সাপ্তাহিক হিসেবে দেশে সংক্রমণের হার বাড়ার তথ্য বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মকর্তারা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হন নি।
সংক্রমণ তাহলে কেনো বাড়ছে এমন প্রশ্নের উত্তরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা বলেন, যেসব স্থানে চলাচল বেশি হয়েছে সেসব জায়গায় সংক্রমণ বেশি বেড়েছে। ঢাকার সঙ্গে সব জায়গার একটা যোগাযোগ আছে। সিলেটের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে ভিড় বেড়েছি আর তাই সেখানেও সংক্রমণের হার বেড়েছে। একই সঙ্গে দেখা যায় যেসব স্থানে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর আছে সেখানে সংক্রমণ বেশি ছড়াচ্ছে।
এর আগে সোমবার (২৯ মার্চ) এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা সংক্রমণ ছড়ানোর বিষয়ে কথা বলেন।
প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সেন্টারে (এমআইএস) শাখায় ২৪ মার্চ পর্যন্ত আসা তথ্য বিশ্লেষণ করে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ জেলা চিহ্নিত করা হয়েছে জানিয়ে ডা. ফ্লোরা বলেন, বিষয়গুলো বিশ্লেষণ করার জন্য আমাদের একটা কমিটি করা আছে। সেই কমিটিকে আমরা জানিয়ে দিই, কোন কোন জেলায় সংক্রমণের হার তুলনামূলক বেশি।
তিনি বলেন, এর অর্থ, সংক্রমণ আস্তে আস্তে ছড়িয়ে পড়ছে। সেদিক থেকে আমাদের সংক্রমণের চেইন যদি আমরা ভাঙতে চাই, তাহলে সারা বাংলাদেশের প্রত্যেককে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
অধ্যাপক ফ্লোরা বলেন, জেলা পর্যায়ে করোনা নিয়ন্ত্রণ কমিটি রয়েছে। সংশ্লিষ্ট জেলাগুলোতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সেটি নিয়ন্ত্রণ কমিটি ঠিক করবে। তবে আমরা বিষয়টি মনিটরিং করব।
সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য অধিদফতরের সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের পরিচালক ও মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে প্রাথমিকভাবে যে ১৮টি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, স্থানীয় প্রশাসন তাদের এলাকায় সংক্রমণের হার বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন। কারণ আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য হচ্ছে সংক্রমণের যে চেইন, সেটিকে নিয়ন্ত্রণ করা। আমরা যদি মানুষের চলাচল সীমিত করতে পারি, তাহলে এখনকার যে চলমান সংকট, অর্থাৎ সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতিকে আমরা রুখে দিতে পারব। সেই জায়গাতে বিভিন্ন স্থানে জেলা প্রশাসক, পুলিশ প্রশাসন এবং স্বাস্থ্য প্রশাসন এক সঙ্গে বসে সবাইকে নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। এটি আমরা গত বছরও দেখেছি। এ বছরও আমরা তেমনটা আশা করছি।
তিনি আরও বলেন, এরই মধ্যে জেলা পর্যায়ে আমাদের কোভিড রোগ নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত কমিটি রয়েছে। সেই কমিটি বসে সিদ্ধান্ত নেবে তার এলাকায় কিভাবে তারা নিয়ন্ত্রণ করবে।
এ দিন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম বলেন, তিন মাসে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে সারাদেশের মানুষ চরম অনীহা, অবহেলা ও বেপরোয়া মনোভাব দেখিয়েছে। আর এ কারণে দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়েছে। সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন সংগঠনের প্রচেষ্টার পাশাপাশি জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছাড়া মহামারি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না। মনে রাখতে হবে, প্রত্যেকে সুরক্ষিত না হলে আমরা কেউ সুরক্ষিত নই।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যা বলছে:
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (জনস্বাস্থ্য অনুবিভাগ) মো. মহিবুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, দেশে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে আর এমন অবস্থায় প্রয়োজন অনুযায়ী যা করনীয় সেগুলো সবই করা হচ্ছে। দেশে আইসোলেশন সেন্টারের পাশাপাশি হাসপাতালগুলোতে বেড সংখ্য্যা বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে হাসপাতালে বেড বাড়িয়ে আসলে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে হলে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। যেসব স্থানে সংক্রমণ বাড়ছে সেসব স্থানে জনসমাগম এড়িয়ে চলে মাস্ক পরতে হবে অবশ্যই।
সংক্রমণ বাড়ছে সারা দেশে। এমন অবস্থায় আসলে কী ভাবছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তা জানতে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব আব্দুল মান্নানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নাই।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী জাহিদ মালেক সারাবাংলাকে বলেন, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ইতোমধ্যেই ১৮ দফা নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আগামী দুই সপ্তাহ এগুলোর আলোকে পরিস্থিতি দেখা হবে। পরবর্তীতে প্রয়োজন হলে যা করনীয় সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
সারাবাংলা/এসবি/এসএসএ