Tuesday 26 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কর্মহীন হওয়ার আশঙ্কায় ঢাকা ছাড়ছেন নিম্ন আয়ের মানুষ

ঝর্ণা রায়, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৩ এপ্রিল ২০২১ ২১:৪৩

ঢাকা: দেশে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সারাদেশে এক সপ্তাহের জন্য লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এই পরিস্থিতিতে আবারও কর্মহীন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে খেটে খাওয়া মানুষদের। এর ফলে অনেকে রাজধানী ছেড়ে ফিরে যাচ্ছেন তাদের গ্রামের বাড়িতে।

শনিবার (৩ এপ্রিল) রাজধানীর বিভিন্ন বাস ও লঞ্চ টার্মিনাল এবং রেল স্টেশনগুলো ঘুরে দেখা গেছে দুপুরের পর থেকে ঘরমুখো মানুষের ভিড়।

বিজ্ঞাপন

খোরশেদ আলম (৪৫) নামে মতিঝিলের একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বলেন, ‘গত বছর করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর দীর্ঘ সময় লকডাউনের কারণে ব্যবসার পুঁজি শেষ হয়ে গেছে। সেখান থেকে নতুন করে এখনো পুরোপুরি ঘুরে দাঁড়াতে পারিনি। তাই আর সময় নষ্ট না করে দ্রুতই ঢাকা ছাড়তে চাই।’

মাণিকনগরের সিএনজি চালক বিমল মাঝি (৩৪) বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘ঢাকাতে কর্মহীন থাকলে খরচ বেশি। লকডাউনের সময় যাত্রীও পাওয়া যায় না, অন্যদিকে খাবারের দামও বেশি। তাই এবার ঘর ছেড়ে দিয়ে আপাতত বাড়ি ফরিদপুরে ফিরে যাচ্ছি।’

বিমা কোম্পানি মেট লাইফে কাজ করতেন বিজন হালদার (৪১)। তিনি বলেন, ‘গেল বছরের পরিস্থিতিতে পড়তে চাই না বলে এবার আগেভাগেই ঢাকা ছাড়ছি।’

তিনি আরও জানান, গতবছর লকডাউনে ঢাকায় থেকে অনেক ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর স্ত্রী-সন্তান বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। এবার সে সংকটে যাতে না পড়েন, তাই বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন।

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে আয়ের পথ বন্ধ হতে পারে এমন অনেক পরিবার গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছেন। আবার অনেকে যাওয়ার চিন্তা করছেন। লকডাউনের খবর শুনে চিন্তিত সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষেরা। গত কয়েকদিনে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় অনেকেই নিজের গৃহকর্মীকে বিদায় দিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

রাজধানীর আরকে মিশন রোডের টিউলিপ ভবনে কাজ করতেন শাহিদা বেগম (৩২)। গত বুধবার তাকে চলতি মাসের বেতন দিয়ে একেবারে বিদায় করে দিয়েছেন তার গৃহকর্তা। তিনি জানান, এই টাকা দিয়ে ঘর ভাড়া দিয়ে বাড়ি চলে যাবেন। গত বছর চার মাস পর্যন্ত তার গৃহকর্তা কাজ না করলেও বেতন দিয়েছেন, এবার তিনি না করে দিয়েছেন। তাই বাধ্য হয়ে ঢাকা ছাড়তে হচ্ছে।

উল্লেখ্য, গত বছর ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত শনাক্ত হয়। ২৬ মার্চ থেকে প্রথমে এক সপ্তাহের পরে টানা ৬৬ দিন সব ধরনের প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে এমন কঠোর নির্দেশনায় এই দীর্ঘ সময়ে অচল হয়ে পড়েছিল দেশের অর্থনীতির চাকা। যা এখনো ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। দিনমজুর থেকে শুরু করে স্বচ্ছল চাকরিজীবিদের মাঝেও এর প্রভাব পড়েছে। বেসরকারিভাবে কয়েক প্রতিষ্ঠান জানায়, ৬৬ দিনের সাধারণ ছুটি আর লকডাউনে প্রায় ৫ কোটি মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে।

এবারও যদি লকডাউন দেওয়া হয় এবং তা যদি দীর্ঘস্থায়ী হয়। তাহলে আবারও সাধারণ মানুষ বড় ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

সারাবাংলা/জেআর/এমআই

কর্মহীন ঢাকা ছাড়ছেন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর