মিয়ানমার: ২ মাসে ৫৫৭ গণতন্ত্রপন্থির মৃত্যু
৪ এপ্রিল ২০২১ ১২:১৩
মিয়ানমারে দুইমাসের জান্তাবিরোধী বিক্ষোভের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৫৫৭ গণতন্ত্রপন্থিকে হত্যা করা হয়েছে। দেশটিতে কর্মরত অধিকার সংস্থা অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্সের (এএপিপি) বরাতে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
এএপিপি জানায়, ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভ থেকে এখন পর্যন্ত গ্রেফতার বা আটক ব্যক্তির সংখ্যা আড়াই হাজারের বেশি।
মিয়ানমারে সামরিক শাসনের অবসান এবং গণতন্ত্র-মানবাধিকারের দাবিতে দেশজুড়ে বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। জান্তা প্রশাসনের ব্যাপক দমন, পীড়ন এবং হত্যাযজ্ঞ উপেক্ষা করে আন্দোলনকারীরা প্রতিদিনই রাস্তায় নামছেন।
এদিকে, মিয়ানমারের সেনাশাসনবিরোধীরা প্রতিবাদের অংশ হিসেবে রোববার (৪ এপ্রিল) ইস্টার সানডেতে ‘ইস্টার এগ’ তৈরি করেছেন। যা জান্তা প্রশাসনের প্রতি অবজ্ঞা-অবহেলা প্রদর্শনের প্রতীক হিসবে প্রদর্শিত হচ্ছে।
আন্দোলনকারীরা শনিবার (৩ এপ্রিল) রাতে প্রতিবাদী মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের পর অনলাইনে ইস্টার এগের ছবি পোস্ট করেছেন। ছবির সঙ্গে তারা জুড়ে দিয়েছেন সেনাশাসনবিরোধী নানা স্লোগান। তার মধ্যে রয়েছে—’অবশ্যই জয়ী হবো’, ‘বসন্ত বিপ্লব’, ‘বিদায় হও এমএএইচ (সেনাপ্রধান)’ ইত্যাদি।
অন্যদিকে, মিয়ানমার সেনা কর্তৃপক্ষ দেশটিতে তথ্যের প্রবাহ বাধাগ্রস্ত করতে নানান কৌশল অবলম্বন করেছে। শুক্রবার (২ এপ্রিল) মিয়ানমারে ইন্টারনেট সেবাদাতাদের ওয়্যারলেস ব্রডব্যান্ড সেবা বন্ধ করে দিতে নির্দেশ দেয় জান্তা প্রশাসন।
এছাড়াও, সামরিক শাসনের বিরোধিতা করায় ৪০ সেলিব্রেটিকে গ্রেফতারের জন্য পরোয়ানা জারি করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। এই দলে সামাজিক মাধ্যম তারকা, সংগীতশিল্পী, মডেল রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে মতবিরোধ প্ররোচিত করার অভিযোগ আনা হয়েছে। এই অভিযোগে তাদের সর্বোচ্চ তিন বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।
এর আগে, মিয়ানমারে ১ ফেব্রুয়ারি রক্তপাতহীন এক অভ্যুত্থান হয়। অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে দেশটির সেনাবাহিনী। গ্রেফতার করা হয় অং সান সু চিসহ তার দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) শীর্ষ নেতাদের। সেনাবাহিনী মিয়ানমারে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করে।
তারপর থেকে লাগাতার বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভকারীরা দেশবাসীর প্রতি জান্তার বিরুদ্ধে ‘গেরিলা কায়দায় প্রতিরোধ’ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন।
মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থান এবং নৃশংসতার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিন্দা-সমালোচনার ঝড় বইছে। মিয়ানমারের জান্তার ওপর নিষেধাজ্ঞাসহ নানাভাবে চাপ বাড়িয়ে চলছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়।
সারাবাংলা/একেএম