ভাসুরের মেয়েকে খুন করে ‘করোনায় মৃত্যু’ বলে প্রচারের অভিযোগ
৪ এপ্রিল ২০২১ ২১:২৬
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীতে ভাসুরের মেয়েকে শ্বাসরোধে খুনের পর করোনায় মৃত্যু বলে প্রচার চালানোর অভিযোগে এক নারীকে গ্রেফতার করেছে আকবর শাহ থানা পুলিশ।
নয় মাস আগে সংঘটিত এ হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়ে রোববার (৪ এপ্রিল) বিকেলে ওই নারী চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সরওয়ার জাহানের আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।
গ্রেফতার সুমি আক্তার (৩০) সৌদিআরব প্রবাসী মো. আলমগীর হোসেনের স্ত্রী। তাদের বাসা নগরীর আকবর শাহ থানার শাপলা আবাসিক এলাকায়। বাড়ি চাঁদপুর জেলায়।
হত্যাকাণ্ডের শিকার কুলসুম আক্তার (১৪) আলমগীরের বড় ভাই মৃত আনোয়ার হোসেনের মেয়ে।
তদন্তে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আকবর শাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহির হোসেন সারাবাংলাকে জানান, কুলসুমের বয়স যখন দেড় বছর, তখন তার বাবা মারা যান। তার মা মেয়েকে ফেলে অন্যজনকে বিয়ে করে চলে যান। তখন দাদী ও ফুপু মিলে কুলসুমকে লালনপালন করতে থাকেন। প্রায় পাঁচ বছর আগে কুলসুমকে তাদের কাছ থেকে এনে চাচা আলমগীর নিজের সন্তানদের মতো লালনপালন করতে থাকেন। কিন্তু সেটা সুমি আক্তার মেনে নেননি। আলমগীর সৌদি আরব চলে যাবার পর কুলসুমকে গৃহকর্মীর মতো ব্যবহার করতে সুমি। এছাড়া তার সঙ্গে ভালো আচরণ করতেন না। প্রায়ই মারধর করতেন।
করোনা মহামারির মারাত্মক পরিস্থিতির মধ্যে গত বছরের ৩ জুলাই কুলসুম আক্তার বাসায় মারা যান। তখন সুমি আক্তার থানায় জানিয়েছিলেন, কুলসুম জ্বর, সর্দি এবং শরীর ব্যথায় আক্রান্ত ছিল। করোনায় আক্রান্ত হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে এমন ধারণা দিয়েছিলেন সুমি। কিন্তু পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করে।
ওসি জহির সারাবাংলাকে বলেন, ‘ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে পাওয়া যায়, কুলসুমকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। এরপর আমরা তদন্ত করে জানতে পারি, গত বছরের ১ জুলাই সুমির সঙ্গে কুলসুমের ঝগড়া হয়। সুমি তাকে প্রচণ্ড মারধর করে। ২ জুলাই সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে সুমি। পরদিন ভোরে সুমি নিজেই আত্মীয়স্বজন, পাড়ার লোকজন এবং পুলিশকে জানায় যে, করোনায় কুলসুমের মৃত্যু হয়েছে। আমরা তদন্তে হত্যাকাণ্ড নিশ্চিত হওয়ার পর সুমিকে গ্রেফতার করি এবং সে আদালতে জবানবন্দি দিয়ে পুরো বিষয় স্বীকার করেছে।’
সারাবাংলা/আরডি/এমআই