ইলিশ উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করলে কঠোর ব্যবস্থা: শ ম রেজাউল

ঢাকা: ইলিশ উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, দেশের মৎস্য সম্পদ রক্ষার দায়িত্ব আমাদের সকলের। অথচ অবৈধভাবে জাটকা আহরণের নেপথ্যে কিছু মানুষ কাজ করছে। অবৈধ মৎস্য আহরণে যে ট্রলারগুলো পাওয়া যায় সেগুলো সাধারণ মৎস্যজীবীদের নয়, কিছু ধনী অসাধু ব্যক্তির। তারা সমাজ ও দেশের শত্রু।

সোমবার (৬ এপ্রিল) জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ ২০২১-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাজধানীর সরকারি বাসভবন থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী বলেন, ‘পুষ্টিকর মাছ ইলিশের উৎপাদন যাতে বৃদ্ধি করা না যায় সেজন্য একটি চক্র কাজ করে। অনেক সময় বিষাক্ত দ্রব্য নির্গমন, অবৈধ বালু উত্তোলনের জন্য মা ইলিশ নির্বিঘ্নে ডিম ছাড়তে পারে না। এভাবে নানারকম ক্ষতিকর ভূমিকায় বিভিন্ন সেক্টরের অসাধু ব্যক্তিরা সম্পৃক্ত রয়েছে। এগুলো বন্ধে ইলিশের অভয়াশ্রম প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। মনিটরিং ক্যামেরা বসানো হয়েছে। দেশের মৎস্য সম্পদের যারা শত্রু তাদের ব্যাপারে কোন তদবির শোনা হবে না। এ ব্যাপারে কঠোরতা অবলম্বন করা হবে।’

শ ম রেজাউল করিম বলেন, ‘ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনায় সম্প্রতি নেওয়া প্রকল্পের মাধ্যমে ইলিশ সম্পদ রক্ষায় বিদ্যমান সমস্যা সমাধান করা হবে। অবৈধ মৎস্য আহরণ বন্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরিচালিত অভিযানে অত্যাধুনিক জলযান সংযোজনের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হবে। তবে ইলিশ রক্ষায় বিদ্যমান সমস্যা রাতারাতি সমাধান করা না গেলেও জনবল ও নৌযান দিয়ে সমস্যা মোকাবিলার আপাতত চেষ্টা করতে হবে। এর স্থায়ী সমাধানে আমরা পদক্ষেপ নিচ্ছি।’

কোভিডকালে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে শরীরের পুষ্টি ও আমিষের চাহিদা পূরণ করতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এ জন্য শাক-সবজির পাশাপাশি মাছ, মাংস, দুধ, ডিম পর্যাপ্ত পরিমাণ খেতে হবে। এই মুহূর্তে করোনার ভয়াবহ বৈশ্বিক সমস্যা আমাদের দেশের অভ্যন্তরে মোকাবিলা করতে মাছ, মাংস, দুধ ও ডিমের উৎপাদন ও বিপণন বাড়াতে হবে। সেক্ষেত্রে ইলিশ একটি গুরুত্বপূর্ণ একটা অংশ। ইলিশ উৎপাদনে আমরা বিশ্বের শ্রেষ্ঠ স্থানে রয়েছি।’

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘মৎস্যজীবীদের কল্যাণে সব জায়গায় সরকার কাজ করছে। তাদের তালিকা প্রতিনিয়ত হালনাগাদ করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যারা এ পেশা ছেড়ে চলে গেছেন তাদের তালিকায় রাখা হবে না। যারা নতুন করে এ পেশায় যুক্ত হয়েছেন তাদের এ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। একসময় মৎস্যজীবীদের ১০ কেজি করে ভিজিএফ চাল দেওয়া হতো। এখন সেটা ৪০ কেজিতে উন্নীত করা হয়েছে।’

নৌপুলিশের অভিযানে গত বছর ২৯ কোটি মিটার অবৈধ কারেন্ট জাল আটক করা একটা বড় সাফল্য উল্লেখ করে ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানে নিয়োজিত নৌপুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানান মন্ত্রী।

পরে জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ ২০২১-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করে এটি সফল ও সার্থকভাবে উদযাপন হবে বলে আশা প্রকাশ করেন শ ম রেজাউল করিম।

সারাবাংলা/জেআর/পিটিএম

ইলিশ উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম