কুয়াকাটায় সরকারি কাজে বাধা, ইউএনও’র ওপর হামলা
৬ এপ্রিল ২০২১ ১৭:০৯
পটুয়াখালী: জেলার কুয়াকাটা পর্যটনকন্দ্রে এলাকায় করোনা নিয়ে সচতেনতামুলক প্রচারকাজ তদারকি করতে গিয়ে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়ছে কলাপাড়া উপজলো নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক। সোমবার (৫ এপ্রিল) রাত আটটার সময় কুয়াকাটা পৌরসভার চৌরাস্তা এলাকায় সরকারি কাজে বাধা ও এই হামলার ঘটনা ঘটে।
এ সময় ইউএনও’কে রক্ষা করতে গিয়ে সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত হয়েছে তার গাড়ি চালক মো. আফজাল হোসনে (৩৮) এবং দেহরক্ষী সঞ্জয় দাস (২৯)।
ইউএনও আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক জানান, কুয়াকাটা পর্যটন কেন্দ্র এলাকায় বিকেল থেকে পর্যটন পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসন যৌথভাবে করোনা সচেতনতায় প্রচার কার্যক্রম চালাচ্ছিল। তিনি কুয়াকাটায় অবস্থান করে এ কার্যক্রম তদারকি করছিলেন। এ সময় ইলিয়াস শেখ নামে এক ব্যক্তি এসে সরকারি কার্যক্রমে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। এসব কাজ কেন করা হচ্ছে, এতে কোনো লাভ নেই— জনগণের মাঝে এমন নানা ধরনের কথা বলতে থাকেন তিনি। এ পরিস্থিতিতে ইলিয়াস শেখকে আটক করার চেষ্ট করলে তিনি দৌঁড়ে চলে যান। কিছুক্ষণ পরই ইলিয়াস শেখের নেতৃত্বে বাচ্চু শেখ, খলিল, কালো শামিম, আবু চালেহ, হাসিবসহ পাশের বস্তি এলাকার ৭০ থেকে ৮০ জন লোক সদলবল এসে ইউএনও ওপরে সন্ত্রাসী হামলা চালায়। এসময় উপস্থিত টুরিস্ট পুলিশ তাদের ওপর লাঠিচার্জ করে। এর এক পর্যায়ে ইউএনও’র ব্যবহৃত সরকারি গাড়ির ওপর তারা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এমন পরিস্থিতিতে ইউএনও’র ওই স্থান থেকে সরাতে গেলে তার গাড়ি চালক মো. আফজাল হোসনে এবং তার দেহরক্ষি সঞ্জয় দাস সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত হন।
তিনি আরও জানান, আমরা আটটার সময় মাক্স পরা বিষয়ে সচেতনত করতে সমুদ্র সৈকত ও জিরো পয়েন্টে ছিলাম। হোটেলের মাঝখানে বাসকাউন্টারে ১০ থেকে ১২ জন স্বাস্থ্যবিধি না মেনে আড্ডা দিচ্ছিল। এ সময় আমরা সেখানে উপস্থিত হলে তারা দৌঁড়ে পালিয়ে যায়। এর মধ্যে দুই জনকে ধরে ফেলায় ইলিয়াস শেখ ও তালাশ টিমের লোকেরা পাশ থেকে এসে আমাদের চ্যালেঞ্জ করে। এসময় আমরা তাদের কার্ড দেখতে চাইলে তারা কার্ড দেখাতে পাড়েনি। এই নিয়ে কথা কাটাকাটি হলে ওরা দুই, তিনজন পিছনে গিয়ে ডাক দিলে ৭০ থেকে ৮০ জন এসে আমাদের কাজে বাধা দেয়। তারা ইলিয়াস শেখের নেতৃত্বে আমাদের ওপরে হামলা করতে আসে। এসময় আমরা স্পষ্ট থেকে সরে এসে থানার পুলিশকে জানালে তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সরকারি কাজে বাধা দেওয়া জড়িতদের বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র মো. আনোয়ার হাওলাদার বলেন, খবর শুনে দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে দেখি বেশ কিছু লোকজন ইউএনও’র সঙ্গে বিতর্ক করছেন। আমিসহ কয়েকজন তাকে নিরাপদে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। ওই সব সন্ত্রাসীরা সরকারি কাজে বাধা দিয়েছে।
স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে জানা গেছে, হামলার নেতৃত্বদানকারী ইলিয়াস শেখ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের কুয়াকাটা পৌর শাখার সাংগঠনকি সম্পাদক। এ বিষয় ইলিয়াফ শেখ সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার বিষয়টি শিকার করে লিখিত বক্তব্য দিয়েছেন।
মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, অবশ্যই সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে হামলার ঘটনা জানতে পেরে রাত ১০টার দিকে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক মতিউল ইসলাম চৌধুরি বিষয়টির বিস্তারিত জানার জন্য এডিসি জেনারেল মো. হুমাউন কবিরকে কুয়াকাটায় পাঠান। তখন পুলিশ বক্সে বসে পৌর মেয়র আনোয়ার হাওলাদার ও কাউন্সিলর এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার দোষ শিকার করে লিখিত বক্তব্য দেন হামলাকারী ইলিয়াছ শেখ।
সারাবাংলা/এনএস