কানাডায় হবে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও ডিসপ্লে সেন্টার
৭ এপ্রিল ২০২১ ১৯:৪৬
ঢাকা: কানাডায় নিজস্ব জমিতে বাংলাদেশের দূতাবাস ভবন প্রতিষ্ঠায় কাজ করছেন দেশটিতে নিযুক্ত হাইকমিশনার। নিজেদের জমিতে দূতাবাস প্রতিষ্ঠা হলে সেখানে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক কেন্দ্র এবং বাংলাদেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরার জন্য একটা ডিসপ্লে সেন্টার গড়ে তোলা হবে। এতে বহু ভাষাভাষী এবং বহু জাতির আবাসস্থল কানাডায় বাংলাদেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি ছড়িয়ে পড়বে। কানাডায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার ড. খলিলুর রহমান সারাবাংলার সঙ্গে আলাপকালে এই তথ্য জানান।
হাইকমিশনার ড. খলিলুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘কানাডায় এখন বাংলাদেশের যে দূতাবাস রয়েছে সেটা ভাড়া বাড়িতে। সেখানে আমাদের নিজস্ব জমিতে দূতাবাস প্রতিষ্ঠা করতে প্রধানমন্ত্রী অনেক আগেই নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা নিজেদের জমিতে দূতাবাস বানাতে কাজ করছি। কিন্তু করোনা সংক্রমণের কারণে পিছিয়ে পড়েছি। আশা করছি, আগামী দুই বছরের মধ্যে নিজেদের জমিতে দূতাবাস তৈরি হবে।
কানাডায় বাংলাদেশ দূতাবাস ভবন বহুমুখী কাজে ব্যাবহার করার পরিকল্পনা রয়েছে, এই তথ্য জানিয়ে হাইকমিশনার বলেন, ‘সেখানে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। যাতে কানাডায় বসবাস করা আমাদের প্রবাসীরা দেশীয় নৃত্য, গানসহ সাংস্কৃতিক অঙ্গনের সকল শাখা চর্চা করার সুযোগ পায়। নতুন প্রজন্ম যাতে দেশের সংস্কৃতির সঙ্গে সহজে পরিচিত হতে পারে- এই কেন্দ্র গড়ার পেছনে সেটাও অন্যতম কারণ।’
তিনি আরও বলেন, ‘কানাডা বহু ভাষাভাষী এবং জাতি-ধর্মের মানুষের আবাসস্থল। তাই বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের মাধ্যমে সব সম্প্রদায়ের মধ্যে একটা নেটওয়ার্ক গড়তে চাই। যাতে আমাদের সংস্কৃতি সম্পর্কে বাকিরা জানতে পারে। পাশাপাশি আমরাও যাতে অন্যদের সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে পারি।’
হাইকমিশনার ড. খলিলুর রহমান বলেন, ‘আমাদের ভবন প্রস্তুত হলে সেখানে একটা ডিসপ্লে সেন্টার চালু করব। এই সেন্টারে বাংলাদেশের অর্জন, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, ইতিহাস, সাহিত্যসহ সকল বিষয় প্রদর্শনের ব্যাবস্থা থাকবে। যাতে বিদেশিরা বাংলাদেশকে জানতে ও বুঝতে পারে। পাশাপাশি কানাডায় বাংলাদেশি প্রবাসীদের যে নতুন প্রজন্ম বেড়ে উঠছে, তারাও এই ডিসপ্লে সেন্টার থেকে দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্য জানতে পারবে।’
বাংলাদেশ ও কানাডার মধ্যে ব্যাবসা-বাণিজ্য সম্পর্কে হাইকমিশনার বলেন, ‘দুই দেশের মধ্যে ব্যাবসা-বাণিজ্য প্রসারের দুর্দান্ত সম্ভাবনা রয়েছে। বাংলাদেশি পণ্যের প্রচুর চাহিদা রয়েছে কানাডায়। আমাদের ফলমূল, মাছ এবং সবজি কানাডায় দারুণ জনপ্রিয়। কিন্তু এই পণ্যগুলো বিদেশে পাঠানোর আগে কিছু আনুষ্ঠানিকতা বা মান নিশ্চিতে ফলন বা উৎপাদন থেকে শুরু করে মোড়কীকরণ ও সরবরাহ প্রক্রিয়ায় বেশকিছু কাজ করতে হয়। এ বিষয়ে আমাদের কৃষক বা উৎপাদনকারীরা সচেতন নন। তাই এ বিষয়ে তাদের তথ্য সরবরাহের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘দুই দেশের মধ্যে ব্যাবসা-বাণিজ্য বাড়ানো এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য করোনা সংক্রমণের ঠিক আগে দুইদেশ মিলে একটা পরিকল্পনা ঠিক করা হয়েছিল, যেখানে দুটি দেশের বাণিজ্যমন্ত্রী, ব্যাবসায়ী এবং সংশ্লিষ্টরা ছিলেন। কিন্তু করোনা সংক্রমণের কারণে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।’
বিনিয়োগ বিষয়ে ড. খলিলুর রহমান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আমাকে বলেছেন যে, কমপক্ষে দুটি পাটকলে যাতে কানাডার বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করে, সেটি দেখার জন্য। এই পাটকলগুলোতে বিদেশি বিনিয়োগ টানার জন্য শর্তাবলী ঠিক করতে কাজ হচ্ছে। শর্তগুলো চূড়ান্ত হলেই এই খাতে বিদেশি বিনিয়োগের বিষয়টা এগিয়ে যাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘শর্তাবলী চূড়ান্ত করার পাশাপাশি পাটকলে কানাডার বিনিয়োগ নিশ্চিতের বিষয়েও কাজ করছি। কানাডার একাধিক বিনিয়োগকারীর সঙ্গে আমার আলাপ হয়েছে। তারা আমাদের পাটকলে বিনিয়োগ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।’
সারাবাংলা/জেআইএল/পিটিএম
কানাডা ড. খলিলুর রহমান ডিসপ্লে সেন্টার বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হাইকমিশনার