বায়রা নির্বাচনের ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন প্রভাবশালীরা
৮ এপ্রিল ২০২১ ২৩:০৪
ঢাকা: জনশক্তি রফতানিকারকদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সির (বায়রা) আসন্ন নির্বাচন (২০২১-২০২৩) নিয়ে সরব হয়ে উঠেছে সংগঠনটির নেতারা। এ নির্বাচনকে স্বচ্ছ ও বিতর্কহীন করতে বেশ কঠোর অবস্থানে রয়েছেন নির্বাচন বোর্ড ও আপিল বোর্ড। বায়রা সংঘস্মারক, সংঘবিধি ও বিভিন্ন সময়ে অনুষ্ঠিত বার্ষিক সাধারণ সভায় পাশ হওয়া প্রস্তাবগুলোর চুলচেরা বিশ্লেষণ করে চূড়ান্ত করা হয়েছে ভোটার তালিকা, যেখানে বাদ পড়েছেন সংগঠনের অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তি।
জানা যায়, ২০১৭ সালের ২৮ অক্টোবর অনুষ্ঠিত বায়রার ৩০তম বার্ষিক সাধারণ সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জিটুজি প্লাস পদ্ধতিতে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানো প্রভাবশালী ১০ এজেন্সি কর্মী প্রতি ১ হাজার টাকা কল্যাণ তহবিলে দিবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর মধ্যে যারা টাকা জমা দেয়নি তাদের চূড়ান্ত ভোটার তালিকা থেকে তাদের বাদ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আলাদা সংগঠন হওয়ায় নারীকর্মী রফতানিকারকদের সংগঠন ফিমেল ওয়ার্কার্স রিক্রুটিং এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ফোরাব) সদস্যদেরকে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
বায়রার গত কার্যনির্বাহী কমিটির (২০১৮-২০২০) মেয়াদ ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসেই শেষ হয়। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ২০২১ সালের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত কমিটির মেয়াদ বৃদ্ধি করে। পরবর্তীতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত ২৭ ডিসেম্বর মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব নূর মো. মাহবুবুল হককে বায়রায় প্রশাসক নিয়োগ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে দায়িত্ব হস্তান্তর করে। গত ৩১ জানুয়ারি বায়রার প্রশাসক নূর মো. মাহবুবুল হক স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনার জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট বায়রা নির্বাচন বোর্ড এবং তিন সদস্য বিশিষ্ট নির্বাচন আপিল বোর্ড গঠন করেন। যার সকল সদস্যই বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা।
এরই ধারাবাহিকতায় ১০ ফেব্রুয়ারি বায়রা নির্বাচন বোর্ড চেয়ারম্যান বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মিরাজুল ইসলাম উকিল বাণিজ্য সংগঠন বিধিমালা ১৯৯৪ এবং বায়রার সংঘবিধি অনুযায়ী গোপন ব্যালটের মাধ্যমে বায়রার ২৭ সদস্য বিশিষ্ট কার্যনির্বাহী কমিটির ২০২১-২০২৩ (২৪ মাস) মেয়াদী নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন।
প্রাথমিকভাবে খসড়া ভোটার তালিকা ও পরবর্তীতে আপিল বোর্ডের শুনানি সাপেক্ষে ২০২১ সালের ৬ এপ্রিল বায়রা নির্বাচন বোর্ড চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করে।
এ বিষয়ে বায়রার সদ্য সাবেক মহাসচিব শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমান বলেন, বায়রার কল্যাণ তহবিল গঠন করা হয়েছে বায়রার সদস্যদের উন্নয়ন ও কল্যাণার্থে। এক্ষেত্রে এজিএম ও ইসি কমিটির গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কল্যাণ তহবিলের টাকা বকেয়া রেখে যারা নির্বাচন করতে চায় তাদের নৈতিক ভাবেই বয়কট করা উচিত।
বায়রার একাধিক বর্তমান ও সাবেক নেতারা মনে করেন, যারা আগামীতে বায়রার নের্তৃত্বে আসতে চান তাদের নিজেদের এ ধরনের সকল বিতর্কের ঊর্ধ্বে রাখা উচিত।
তবে ফোরাবের সভাপতি আব্দুল আলীম বলেন, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে বলা আছে সকল রিক্রুটিং এজেন্সি বায়রার সদস্য ও ভোটার হতে পারবে। কিন্তু বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক চিঠিরি ভিত্তিতে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা থেকে আমাদের সংগঠনের সদস্যদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। ভোটার হতে আমরা আইনিভাবে মোকাবেলা করব।
সারাবাংলা/ইএইচটি/এসএসএ