Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

অর্থ বছরের আট মাসে সঞ্চয়পত্র বিক্রি ৭৫ হাজার কোটি টাকা

গোলাম সামদানী, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১২ এপ্রিল ২০২১ ১৫:২২

ঢাকা : করোনা মাহামারীর মধ্যেও বাড়ছে সঞ্চয়পত্র বিক্রির পরিমাণ। চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে ৭৫ হাজার ১০৩ কোটি টাকা। এটি (২০১৯-২০) পুরো অর্থবছরের সঞ্চয় বিক্রির চেয়ে ৭ হাজার ৯৭৫ কোটি ৬৫ লাখ টাকা বা ১২ শতাংশ বেশি।

গত অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র বিক্রির পরিমাণ ছিল ৬৭ হাজার ১২৭ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। এর আগে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছিল ৯০ হাজার ৩৪২ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। যা বাংলাদেশের ইতিহাসে এক মাসে সর্বোচ্চ সঞ্চয়পত্র বিক্রি। চলতি অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র বিক্রিতে অতিথের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যেতে পারে বলেও অর্থনীতিবিদদের ধারণা।

বিজ্ঞাপন

এ ব্যাপারে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জ্বা আজিজুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘বর্তমানে ব্যাংক আমানতের সুদের হার অনেক কমে গেছে। এখন ব্যাংকে টাকা রাখলে মূল্যস্ফীতির কারণে লাভের পরিবর্তে লোকসানের আশঙ্কা রয়েছে। এতে করে সাধারণ মানুষ নিরাপদ বিনিয়োগের মাধ্যম হিসেবে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের দিকে বেশি ঝুঁকছে। ফলে আগে যারা বালিশের নিচে কিংবা ব্যাংকে টাকা রাখতো, তারা এখন সঞ্য়পত্রের দিকে ঝুঁকছে। ফলে সঞয়পত্র বিক্রির পরিমাণ বেড়ে গেছে।’

তিনি বলেন, ব্যাংকে আমানত রাখলে আগে ৮ থেকে ১০ শতাংশ পর্যন্ত সুদ পাওয়া যেত। বর্তমানে তা কমে ৫ শতাংশে নেমে এসেছে। সঞ্চয়পত্রে এখনও ১০ থেকে ১২ শতাংশ পর্যন্ত সুদ পাওয়া যায়।

সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি) মোট সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে ৭৫ হাজার ১০৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা। এর মধ্যে অর্থ বছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ৮ হাজার ৭০৫ কোটি ৬২ লাখ টাকা সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে, আগস্টে ৮ হাজার ৮৫২ কোটি ২৯ লাভ টাকা, সেপ্টেম্বরে ১০ হাজার ৩৮৭ কোটি ৬২ লাখ টাকা, অক্টোবরে ৯ হাজার ২৪৯ কোটি ৮৬ লাখ টাকা, নভেম্বরে ৯ হাজার ৫৪৭ কোটি ৬২ লাখ টাকা, ডিসেম্বরে ৮ হাজার ২৩৩ কোটি টাকা, জানুয়ারিতে ১০ হাজার ৬৪৪ কোটি ৮৬ লাখ টাকা এবং ফেব্রুয়ারিতে ৯ হাজার ৪৮২ কোটি ৩৫ লাখ টাকা।

বিজ্ঞাপন

সূত্র জানায়, চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে সরকার সঞ্চয়পত্র বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮৬ হাজার ৬৮৫ কোটি টাকা।এর মধ্যে সরকারকে সুদে আসলে পরিশোধ করতে হবে ৬৬ হাজার ২৫৫ কোটি টাকা। নিট সঞ্চয়পত্র বিক্রির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২০ হাজার ৪৩০ কোটি টাকা। সরকার বাজেট ঘাটতি মোকাবিলায় উল্লেখিত অর্থ সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ নিচ্ছে।

এ ছাড়াও চলতি অর্থবছরে প্রথম আট মাসে নিট সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে ২৯ হাজার ৩১১ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। এটি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় তিনগুণ। ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের একই সময়ে নিট সঞ্চয়পত্র বিক্রয় হয়েছিল ৯ হাজার ৬৬৫ কোটি ৮৮ লাখ টাকা।

উল্লেখ্য, আগে বিক্রি হওয়া সঞ্চয়পত্রের সুদ আসল পরিশোধের পর প্রত্যেক মাসে যে অর্থ অবশিষ্ট থাকে তাকে নিট সঞ্চয়পত্র বিক্রি বলে। অর্থনীতির পরিভাষায় নিট সঞ্চয়পত্র বিক্রিকে সরকারের ঋণ হিসাবে ধরা হয়।

সঞ্চয়পত্র বিক্রি কমাতে সরকারের যত উদ্যোগ: সঞ্চয়পত্র বিক্রির চাপ কমাতে গত বছরের ১ জুলাই থেকে সঞ্চয়পত্রে মুনাফার উপর উৎসে করের হার ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হয়। একইসঙ্গে এক লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র কিনতে টিআইএন (কর শনাক্তকরণ নম্বর) বাধ্যতামূলক করা হয়। ব্যাংক অ্যাকাউন্ট না থাকলে সঞ্চয়পত্র বিক্রি না করার শর্ত আরোপসহ আরও কিছু কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এ সব কারণে সঞ্চয়পত্র বিক্রি কিছুটা কমতে শুরু করলেও বর্তমানে আবার সঞ্চয়পত্র বিক্রি বাড়তে শুরু করেছে।

সারাবাংলা/জিএস/একে

সঞ্চয়পত্র

বিজ্ঞাপন

নামেই শুধু চসিকের হাসপাতাল!
২২ নভেম্বর ২০২৪ ২২:০৬

আরো

সম্পর্কিত খবর