ঢাকা: বিদেশ ফেরতরা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কি না, তা চিহ্নিত করে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে রাখতে হাইকোর্টের দেওয়া নির্দেশনা যথাযথভাবে পালন করা হচ্ছে কি না, তা জানতে চেয়ে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
সোমবার (১২ এপ্রিল) ডাকযোগে স্বাস্থ্যমন্ত্রী, বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ সাত জনের বিরুদ্ধে আইনি নোটিশ পাঠান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ।
নোটিশ পাঠানোর বিষয়টি সারাবাংলাকে নিশ্চিত করে আইনজীবী ইউনুস আলী আকন্দ বলেন, `বিদেশ ফেরত ব্যক্তিদের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কি না তা চিহ্নিত করে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করা হচ্ছে কি না তাও জানতে চেয়ে সাত জনকে আইনি নোটিশ দেওয়া হয়েছে।‘
এ ছাড়া বিদেশ ফেরত ব্যক্তিদের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইনের মেয়াদ কার্যকরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে তাদের হস্তান্তর নিশ্চিত করতে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন সচিবকে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। এসব নির্দেশনা যথার্থভাবে প্রতিপালন করা হচ্ছে কি না নোটিশে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নোটিশের জবাব না পেলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।`
নোটিশে বলা হয়েছে, হাইকোর্টের দেওয়া নির্দেশনা যথাযথভাবে পালন করা হয়েছে কি না সে বিষয়ে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে উপযুক্ত জবাব না পেলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে মামলা করা হবে।
এর আগে ২০২০ সালের ১৮ এপ্রিল বিদেশফেরতদের কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে কয়েক দফা নির্দেশনা দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। এর মধ্যে বিদেশফেরত ব্যক্তিদের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইনের মেয়াদ কার্যকরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর (এ কাজে নিয়োজিত) কাছে তাদের হস্তান্তর নিশ্চিত করতে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন সচিবকে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
অন্যদিকে, কোয়ারেন্টাইনের জন্য প্রত্যাবর্তনকারীদের পাহারা দিয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত হাসপাতাল বা শেল্টার হাউসে পৌঁছে দিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য রাখতে স্বরাষ্ট্রসচিবের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গত বছর এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রুল জারির পাশাপাশি বিদেশফেরত ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে কয়েক দফা নির্দেশনা দেন।
কোয়ারেন্টাইনের সময় বিদেশফেরত ব্যক্তিদের মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণ নিশ্চিত করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব, স্বাস্থ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনসচিবসহ বিবাদীদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
অপর নির্দেশনায় কোয়ারেন্টাইনের সময় প্রত্যাবর্তনকারীদের চিকিৎসা ও কল্যাণের বিষয়টি নিজ নিজ জেলা প্রশাসক যেন তদারকি করেন, সেজন্য মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোয়ারেন্টাইনে থাকা বিদেশফেরত ব্যক্তি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে তার চিকিৎসা এবং আক্রান্ত না হলে ছাড়পত্রবিষয়ক বৃত্তান্ত হলফনামা আকারে আদালতে দাখিল করতে স্বাস্থ্যসচিবকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।