সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা: অবশেষে বাড়ল আবেদনের সময়
১৫ এপ্রিল ২০২১ ২০:৪৯
ঢাকা: ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষে ভর্তির জন্য ২০ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বিত পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে শিক্ষার্থীরা আগে থেকেই আবেদনের সময় বাড়ানোর দাবি জানিয়ে আসছিলেন। তবে কর্তৃপক্ষ বলছিল, কোনোভাবেই সময় বাড়ানো সম্ভব নয়। শেষ পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে আবেদনের সময় পিছিয়ে গেল, একইসঙ্গে কমেছে মানবিক ও বাণিজ্য বিভাগে আবেদনের ন্যূনতম যোগ্যতাও।
বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) উপকমিটির এক সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা বিষয়ক টেকনিক্যাল উপকমিটি বলেছে, লকডাউন শেষ হলে এরপরও ১০ দিন পর্যন্ত অনলাইনে ভর্তির আবেদন করতে পারবেন শিক্ষার্থীরা।
সভার সিদ্ধান্ত, বাণিজ্য ও মানবিকে বিভাগে এক পয়েন্ট কমিয়ে আবেদনের ন্যূনতম যোগ্যতা করা হয়েছে মোট ৬ পয়েন্ট। তবে বিজ্ঞান বিভাগে যারা আবেদন করবেন, তাদের জন্য আগের বিজ্ঞপ্তির শর্ত অপরিবর্তিত রয়েছে।
সাবকমিটির সদস্যদের কাছে থেকে জানা গেছে, প্রতি ইউনিটে দেড় লাখ পরীক্ষা দেওয়ানোর প্রস্তুতি থাকলেও সেই পরিমাণ আবেদন না পড়ায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জানা গেছে, আগের বিজ্ঞপ্তির শেষ দিন বৃহস্পতিবার পর্যন্ত আবেদন পড়েছে ৩ লাখ ২৪ হাজার ৮০৪টি। এর মধ্যে ‘এ’ ইউনিটে ১ লাখ ৮৬ হাজার ৫৩৮টি, ‘বি’ ইউনিটে ৯১ হাজার ৫৩৫টি ও ‘সি’ ইউনিটে ৪৬ হাজার ৭৩৩টি।
সমন্বিত পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষাবিষয়ক টেকনিক্যাল সাব-কমিটির আহ্বায়ক ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুনাজ আহমেদ নূর মনে করছেন, আবেদনের এই সংখ্যাটি যথেষ্ট কম। সে কারণেই আবেদনের সময় বাড়ানো হচ্ছে।
ড. মুনাজ সারাবাংলাকে বলেন, আমরা ভর্তির আবেদন সময় বাড়িয়েছি। এর কারণ আবেদন কম জমা পড়েছে। লকডাউনের কারণেই শিক্ষার্থীরা যথাসময়ে আবেদন করতে পারছিলেন না।
তিনি আরও বলেন, আবেদন সময় বাড়ানোর পাশাপাশি মানবিকে ও বাণিজ্যে এসএসসি ও এইচএসসি মিলে আবেদন যোগ্যতা ৬ পয়েন্ট করা হয়েছে। ফলে দুই পরীক্ষায় যাদের ৬ পয়েন্ট থাকবে, তারাই পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে।
সমন্বিত পদ্ধতির এই ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে আগ্রহীদের জন্য প্রাথমিক আবেদন গ্রহণ শুরু হয় গত ১ এপ্রিল। ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত আবেদন জমা দেওয়ার সুযোগ ছিল এই পরীক্ষায় অংশ নিতে। এই সময়টিই এবার বাড়ানো হলো।
সমন্বিত পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষা শুরু হবে ১৯ জুন থেকে। গুচ্ছভিত্তিক ভর্তি পরীক্ষার বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে www.gstadmission.org ও www.gstadmission.ac.bd ওয়েবসাইটে।
কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রাথমিকভাবে যারা আবেদন করবে, তাদের এসএসসি ও এইচএসসি এবং সমমান পরীক্ষার ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে একেকটি ইউনিটে নির্দিষ্টসংখ্যক শিক্ষার্থীকে পরীক্ষায় বসার অনুমতি দেওয়া হবে। তাদের চূড়ান্ত আবেদনের সুযোগ দেওয়া হবে। প্রতিটি ইউনিটে আবেদন ফি দিতে হবে ৬০০ টাকা।
চূড়ান্ত আবেদনের সময় শিক্ষার্থীদের ২৮টি পরীক্ষাকেন্দ্রের মধ্যে ন্যূনতম পাঁচটি কেন্দ্র পছন্দের তালিকায় রাখতে হবে। এসএসসি ও এইচএসসি এবং সমমান পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবস্থান, পরীক্ষার ফল, পাসের বছরসহ সংশ্লিষ্ট বিষয় বিবেচনা করে প্রতিটি শিক্ষার্থীর জন্য একটি কেন্দ্র নির্ধারণী স্কোর (সর্বোচ্চ ১০০) তৈরি করা হবে। ওই স্কোর ও কেন্দ্রের পছন্দক্রমের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা কেন্দ্র নির্ধারণ করা হবে। নির্ধারিত পরীক্ষা কেন্দ্র পরিবর্তনের কোনো সুযোগ থাকবে না।
একাধিকবার উদ্যোগ নেওয়া হলেও গত বছর পর্যন্ত সমন্বিত পদ্ধতিতে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি। এবারই প্রথম এই পদ্ধতিতে ২০টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক প্রথম বর্ষে ভর্তি পরীক্ষা চালানো হবে। এর বাইরে রাজশাহী, খুলনা ও চট্টগ্রামের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট, কুয়েট ও চুয়েট) এ বছর সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি নেবে।
বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা: ফাইল ছবি
সারাবাংলা/টিএস/টিআর