কোভিড-পরবর্তী উত্থান, চীনের প্রবৃদ্ধি রেকর্ড ১৮.৩%
১৬ এপ্রিল ২০২১ ১৩:২৭
বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) প্রভাব মোকাবিলা করে ঘুরে দাঁড়িয়েছে চীনের অর্থনীতি। চলতি অর্থবছরের প্রথম চতুর্ভাগে (জানুয়ারি-মার্চ) আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় দেশটির জিডিপি (মোট দেশজ উৎপাদন) প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৮ দশমিক ৩০ শতাংশ।
বিবিসির খবরে বলা হয়, আগের বছরের এক চতুর্ভাগের তুলনায় পরের বছরের একই সময়ের এই প্রবৃদ্ধি ১৯৯২ সালের পর থেকে সর্বোচ্চ। তারপরও এই প্রবৃদ্ধি প্রত্যাশিত মাত্রার তুলনায় কিছুটা কম। রয়টার্সের এক জরিপে অর্থনীতিবিদরা ১৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন করেছিলেন।
২০২০ সালের জানুয়ারি-মার্চ সময়ে করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে ব্যাপক পরিসরে লকডাউন কার্যকর ছিল। ওই সময় দেশটির অর্থনীতি ৬ দশমিক ৮০ শতাংশ সংকুচিত হয়েছিল। সেখান থেকে চলতি বছরের প্রথম চতুর্ভাগের এই উত্থানকে ইতিবাচক মনে করছে চীন।
দেশটির জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর পক্ষ থেকে প্রথম চতুর্ভাগের এই উল্লম্ফনের তথ্য তুলে ধরে বলা হয়েছে, জাতীয় অর্থনীতির এ বছরের সূচনাটি ভালো হয়েছে। তবে আমাদের আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। কেননা কোভিড-১৯ এখনো বিশ্বব্যাপী ছড়াচ্ছে এবং আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নানা ধরনের অনিশ্চয়তা ও অস্থিতিশীলতা এখনো কাজ করছে।
প্রথম চতুর্ভাগে চীনের অর্থনীতির অন্যান্য সূচকেও দেখা গেছে ঊর্ধ্বগতি। যেমন আগের বছরের তুলনায় এ বছরের মার্চে শিল্পোৎপাদন বেড়েছে ১৪ দশমিক ১০ শতাংশ, খুচরা পণ্যের বিক্রি বেড়েছে ৩৪ দশমিক ২০ শতাংশ।
গবেষণা ও পারমর্শক প্রতিষ্ঠান অক্সফোর্ড ইকোনমিকসের এশিয়ার অর্থনীতি বিষয়ক প্রধান লুইস কুজিস বলেন, গত শিল্পোৎপাদন, ভোগ্যপণ্যের ব্যবহার, বিনিয়োগ— সবই আগের তুলনায় বেড়েছে। এমনকি এ বছরের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারির তুলনাতেও মার্চে এসব সূচকে ঊর্ধ্বগতি রয়েছে। এই চিত্রটি আশাব্যঞ্জক।
তবে ধীরে ধীরে বিভিন্ন খাত থেকে চীন সরকারের আর্থিক সহায়তা ও প্রণোদনা কমে যেতে থাকলে কিছু কিছু খাতের প্রবৃদ্ধিও ধীরগতির হয়ে আসবে বলে মনে করছেন কোনো কোনো অর্থনীতিবিদ। চীনের ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্ট ইউনিটের মুখ্য অর্থনীতিদিন ইউয়ে সু বলেন, বাণিজ্য ও অভ্যন্তরীণ শিল্পোৎপাদনের ক্ষেত্রে বছরের বাকি সময়েও একই অগ্রগতির ধারা ধরে রাখা কঠিন হবে। কেননা অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার মতো খুব বেশি পদক্ষেপ চীন সরকারের নেই।
করোনার প্রভাব কাটিয়ে চীনের অর্থনীতির ফিরে আসার এই চিত্র অবশ্য অনুমিতই ছিল। ২০২০ সালের শেষ চতুর্ভাগে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) দেশটির জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছিল ৬ দশমিক ৫০ শতাংশ। অথচ গত বছরে করোনার ধাক্কায় দেশটির প্রবৃদ্ধি ছিল মাত্র ২ দশমিক ৩০ শতাংশ, যা গত এক দশকে সর্বনিম্ন। এ বছর ৬ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য রয়েছে দেশটির।
সারাবাংলা/টিআর