Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

প্রধানমন্ত্রীর ঘর দেওয়ার প্রতিশ্রুতিতে ঘুষ, চেয়ারম্যানকে নোটিশ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১৬ এপ্রিল ২০২১ ১৭:০২

সিরাজগঞ্জ: প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর দেওয়ার কথা বলে গরিব অসহায় দুস্থদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত আবু হেনা মোস্তফা কামাল রিপন জেলার রায়গঞ্জ উপজেলার ২নং সোনাখাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান। অসংখ্য গরীব ও অসহায়দের কাছ থেকে টাকা নিলেও তাদের বেশিরভাগই সেই ঘর পাননি।

তাই বাধ্য হয়ে আট জন ভুক্তভোগী সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন। যার প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে বিষয়টি শুনানির জন্য রায়গঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) একটি স্মারক প্রেরণ করা হয়। যার প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান ও আট জন অভিযোগকারীকে আগামী ২০ এপ্রিল উপস্থিত হবার জন্য একটি নোটিশ পাঠিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

রায়গঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে গত ১৬ মার্চে একটি স্মারকের মাধ্যমে (স্মারক নং ২৬২) রায়গঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি শুনানির মাধ্যমে তদন্তের নির্দেশনা প্রেরণ করেন। এর প্রেক্ষিতে গত ১২ এপ্রিলে রায়গঞ্জ ইউএনও অফিস একটি শুনানি (তদন্ত) নোটিশ (যার নং- ৩৩২ /৯) অভিযুক্ত চেয়ারম্যান ও আট জন অভিযোগকারীকে পাঠানো হয়। সেখানে সবাইকে আগামী ২০এপ্রিল সকাল ১১টায় ইউএনও কার্যালয়ে উপস্থিত থাকতে বলা হয়।

সরজমিনে গিয়ে অভিযোগকারীদের মধ্যে কয়েকজন ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সোনাখাড়া ইউপির চেয়ারম্যান আবু হেনা মোস্তফা কামাল রিপন প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে ইউনিয়নের দুস্থ গরীব অসহায় ভূমিহীনদের কাছ থেকে জন প্রতি দশ থেকে বিশ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ নেন। এরমধ্যে কিছু লোক দীর্ঘদিন ঘোরাঘুরি করে ঘর পেলেও অনেকের ভাগ্যেই মেলেনি এই নতুন ঘর।

বিজ্ঞাপন

সোনাখাড়া ইউনিয়নের গোতিথা গ্রামের বাসিন্দা মৃত মধু মণ্ডলের ছেলে মো. আ. মজিদ বলেন, সরকার গরীব মানুষদের ঘর দিচ্ছে শোনার পরে আমি চেয়ারম্যান রিপনের নিকট একটি ঘর চাই। এ সময় তিনি বলেন— টাকা ছাড়া ঘর পাওয়া যাবে না। এজন্য ২০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন তিনি। পরবর্তীতে আমি ঘরের আশায় সুদের ওপরে ঋণ করে তাকে ১৭ হাজার টাকা দেই। ৩ বছর পেড়িয়ে গেলেও পাইনি ঘর। বরং ঘর বা টাকা ফেরত চাইলেই পেয়েছি মানসিক নির্যাতন। সেই ঋণকৃত টাকার সুদই দিয়েছি আজ পর্যন্ত প্রায় ৩৫ হাজার টাকা, আসল টাকা তো রয়েই গেছে।

একই গ্রামের নিশি কান্ত মালীর স্ত্রী শ্রীমতী মালীও আ. মজিদের মতো একই রকমের প্রতারণার শিকার জানিয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রী গরিবদের ঘর দিচ্ছে শোনার পরে চেয়ারম্যান রিপনের নিকট একটি ঘর চাইলে তিনি ২০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। পরবর্তীতে আমি ঘরের আশায় ঋণ করে তাকে ২০ হাজার টাকা দেই। কিন্তু ৩ বছরেও ঘর বা টাকা কোনটাই পাইনি। কিন্তু সেই আসল টাকা বাদ দিয়ে ঋণের সুদ দিয়েছি আজ পর্যন্ত ৪০ হাজার টাকার বেশি।

এ বিষয়ে ২নং সোনাখাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু হেনা মোস্তফা কামাল রিপন বলেন, এগুলো সব আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। নির্বাচনকে সামনে রেখে ও আমাকে সামাজিকভাবে বিপর্যস্ত করতে একটি মহল আমার বিরুদ্ধে নানা রকমের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। যেহেতু আগামী ২০ এপ্রিল ইউএনও মহোদয় তদন্তের জন্য আমাকেসহ সবাইকে নোটিশের মাধ্যমে ডেকেছেন তাই সেদিনই দেখা যাবে।

এ বিষয়ে রায়গঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রাজিবুল আলম বলেন, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে একটি স্মারকের মাধ্যমে আমাকে ২নং সোনাখাড়া ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আসা অভিযোগটি তদন্তের জন্য বলা হয়েছে। সে অনুযায়ী আগামী ২০ এপ্রিল অভিযোগকারী আট জন ও চেয়ারম্যানকে রায়গঞ্জ ইউএনও কার্যালয়ে উপস্থিত হতে নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

সারাবাংলা/এনএস

আবু হেনা মোস্তফা কামাল রিপন চেয়ারম্যানকে নোটিশ প্রধানমন্ত্রীর ঘর দেওয়ার প্রতিশ্রুতিতে ঘুষ সিরাজগঞ্জ

বিজ্ঞাপন

সিইসি ও ৪ কমিশনারের শপথ আজ
২৪ নভেম্বর ২০২৪ ০১:৩৩

আরো

সম্পর্কিত খবর