পিঠে সিলিন্ডার বেঁধে করোনাক্রান্ত মাকে নিয়ে হাসপাতালে ছেলে
১৮ এপ্রিল ২০২১ ১১:২৭
বরিশাল: করোনা আক্রান্ত মাকে বাঁচাতে পিঠে অক্সিজেনের সিলিন্ডার বেঁধে মোটরসাইকেলে করে হাসপাতালে নিয়ে গেলেন ছেলে। শনিবার (১৭ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কের বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় লাগোয়া হিরন পয়েন্টে এ দৃশ্য দেখা যায়।
মাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার এ দৃশ্য নজর কাড়ে সবার। সঙ্গে সঙ্গে ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করলে ভাইরাল হয়ে যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মোটরসাইকেলে থাকা নারীর নাম রেহানা পারভীন (৫০)। তিনি ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার সূর্যপাশা গ্রামের মৃত আব্দুল হাকিম মোল্লার স্ত্রী ও নলছিটি বন্দর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। মোটরসাইকেল চালক তারই ছেলে কৃষি ব্যাংকের কর্মকর্তা জিয়াউল হাসান টিটু।
গত বুধবার রেহানা পারভীনের করোনা পজিটিভের রিপোর্ট আসার পর বাসায়ই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। শনিবার হঠাৎ শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে দুপুর আড়াইটায় বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে টিটু তার মাকে ভর্তি করে। এখন সেখানেই তার চিকিৎসা চলছে।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের সার্জেন্ট তৌহিদ টুটুল বলেন, আমরা পটুয়াখালী-বরিশাল মহাসড়কের বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় নিয়মিত দায়িত্ব পালন করছিলাম। তখন পটুয়াখালীর দিক থেকে মোটরসাইকেলটি আসছিল। প্রথমে মোটরসাইকেলটিকে থামানোর সিগন্যাল দেই কিন্তু যখনই দেখি মোটরসাইকেলে অক্সিজেন সিলিন্ডার ও অক্সিজেন মাস্ক পরে রোগী যাচ্ছেন, তখন এক সেকেন্ডের জন্যও মোটরসাইকেলটি থামাইনি। বরং দ্রুত যেন চলে যায় সেই ব্যবস্থা করে দেই।
তিনি আরও বলেন, রোগী বহনকারী মোটরসাইকেলটির পাশে আরেকটি মোটরসাইকেল ছিল। সেটিতে তাদের দুই স্বজন ছিল। মূলত রোগী যেন পড়ে না যান সেজন্য তারা পাশাপাশি চালিয়ে আসছিলেন। আমরা চেকপোস্ট অতিক্রম করিয়ে দিলে গাড়ি দুটো দ্রুত বরিশাল শহরের দিকে চলে যায়।
সার্জেন্ট তৌহিদ টুটুল বলেন, অক্সিজেন সিলিন্ডার বহনকারী মোটরসাইকেল আরোহীকে ধরে রোগী বসে ছিলেন। যিনি মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন তিনি হেলমেট পরা ছিলেন। তার চেহারা আমরা দেখতে পারিনি বা দেখার চেষ্টাও করিনি। তাদের থামিয়ে হয়তো পরিচয় শনাক্ত করতে পারতাম কিন্তু সেটি হতো অমানবিকতা। অক্সিজেন পরিহিত যে নারী ছিলেন তার বয়স দেখে মনে হয়েছে মোটরসাইকেল আরোহীর মা হতে পারেন। পরে জানলাম তারা মা-ছেলে।
ছবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় অনেকেই চেকপোস্টে দায়িত্বরত সার্জেন্ট টুটুলের প্রশংসা করছেন।
সারাবাংলা/এএম