Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

গুলিতে প্রাণ গেল শ্রমিকের, আসামিও শ্রমিক

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৮ এপ্রিল ২০২১ ১২:১৩

চট্টগ্রাম ব্যুরো: বাঁশখালীতে চীনা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এস আলম গ্রুপের যৌথ উদ্যোগে নির্মাণাধীন বিদ্যুৎকেন্দ্রে সংঘর্ষের ঘটনায় দু’টি মামলা দায়ের হয়েছে। দুই মামলায় ওই বিদ্যুৎকেন্দ্রে কর্মরত শ্রমিক ও বহিরাগত মিলিয়ে ২২ জনের নাম উল্লেখসহ প্রায় সাড়ে তিন হাজার জনকে আসামি করা হয়েছে।

শনিবার (১৭ এপ্রিল) রাতে পুলিশ ও বিদ্যুৎকেন্দ্র এস এস পাওয়ার প্ল্যান্টের পক্ষ থেকে বাঁশখালী থানায় মামলা দু’টি দায়ের হয়েছে। পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘দুইটি মামলা অলরেডি হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে একটা এবং বিদ্যুৎকেন্দ্রের পক্ষ থেকে একটা করা হয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিউল কবির সারাবাংলাকে জানিয়েছেন, বিদ্যুৎকেন্দ্রে ভাঙচুর, লুটতরাজ, অগ্নিসংযোগের অভিযোগে এস এস পাওয়ার প্ল্যান্টের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছে। মামলার এজাহারে ২২ শ্রমিকের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও এক হাজার ৪০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

পুলিশের ওপর হামলা, কর্তব্যকাজে বাধার অভিযোগে আরেক মামলায় অজ্ঞাতনামা দুই থেকে আড়াই হাজার জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার সব আসামি শ্রমিক কি না জানতে চাইলে ওসি শফিউল কবির বলেন, ‘শ্রমিক ২২ জনের নাম আছে। এছাড়া শ্রমিক ও বহিরাগত মিলিয়ে ঘটনায় জড়িত অজ্ঞাতনামা আসামি উল্লেখ করা হয়েছে।’

ঘটনায় পুলিশের দায় তদন্ত করা হবে কি না জানতে চাইলে ডিআইজি আনোয়ার হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা অতিরিক্ত ডিআইজির নেতৃত্বে একটা তদন্ত কমিটি করেছি। এই কমিটি ঘটনার কারণ, সূত্রপাত, শ্রমিকদের কী ভূমিকা, কর্তৃপক্ষের কী ভূমিকা, পুলিশের কী ভূমিকা সেটা তদন্ত করবে। এক্ষেত্রে পুলিশের কোনো দায় থাকলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বিজ্ঞাপন

বাঁশখালী উপজেলার গণ্ডামারা ইউনিয়নের পূর্ব বড়ঘোনা এলাকায় নির্মাণাধীন ১৩২০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এতে পুলিশের গুলিতে অন্তত পাঁচ শ্রমিক নিহত হন। আহত হয়েছেন আরও কমপক্ষে ২০-২১ জন, যাদের মধ্যে পুলিশ ও শ্রমিক আছেন।

নিহতরা হলেন- কিশোরগঞ্জের ফারুক আহমদের ছেলে মাহমুদ হাসান রাহাত (২২), চুয়াডাঙ্গার অলিউল্লাহর ছেলে মো. রনি হোসেন (২৩), নোয়াখালীর আব্দুল মতিনের ছেলে মো. রায়হান (১৯), চাঁদপুরের মো. নজরুলের ছেলে মো. শুভ (২২) এবং বাঁশখালীর পূর্ব বড়ঘোনার আবু ছিদ্দিকির ছেলে মাহমুদ রেজা (১৯)।

আহতদের মধ্যে তিন পুলিশসহ ১৯ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

চমেক হাসপাতাল চিকিৎসাধীন আহত শ্রমিকেরা হলেন, আমিনুল ইসলাম (২৫), মো. আমির (২৪), মো. দিদার (২১), মো. বিল্লাল (২৬), মো. আযাদ (১৮), মো. কামরুল (২৬), শিমুল (২৮), শাকিল (২৩), মোরাদ (২৫), মিজান (১৮), রাহাত (২৮), হাবিবুল্লাহ (১৮), হাসান (৪০) ও অভি (২০)।

একই হাসপাতাল ভর্তি হওয়া আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন মো. ইয়াসির (২৪), আহমদ কবির (২৬) ও আসদুজ্জামান। তিনজনই গন্ডামারা পুলিশ ফাঁড়িতে কর্মরত।

আলোচিত শিল্প প্রতিষ্ঠান এস আলম গ্রুপ এবং চীনের একটি কোম্পানি যৌথভাবে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছে। ২০১৬ সালে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের বিরোধিতা করে স্থানীয়দের আন্দোলনের সময় ‍পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তঃত চারজন নিহত হয়েছিল। সেসময় ওই আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন স্থানীয় বিএনপি নেতা ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী।

পাঁচবছর পর ফের শ্রমিক বিক্ষোভেও বহিরাগতদের উসকানি আছে বলে ধারণা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের।

সারাবাংলা/আরডি/এএম

পুলিশ-সংঘর্ষ বাশখালী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর