Wednesday 25 Jun 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘চট্টগ্রাম বন্দরের সমস্যা বিকল্প বন্দর দিয়ে সমাধান হবে না’


২৪ মার্চ ২০১৮ ২০:১৩
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

চট্টগ্রাম ব্যুরো : রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং সক্ষমতার অভাবে চট্টগ্রাম বন্দর গভীর সংকটে পড়েছে বলে অভিমত এসেছে চট্টগ্রামে আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে। এতে আমদানি-রফতানিকারকসহ চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারকারীদের ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হচ্ছে বলেও মত দিয়েছেন বৈঠকে অংশগ্রহণকারীরা।

শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) অনুষ্ঠিত এই গোলটেবিল বৈঠকে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, যে বন্দর দিয়ে ৯০ শতাংশের বেশি পণ্য আনা-নেওয়া হয় সেই বন্দরের সমস্যা সমাধান করাটা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। চট্টগ্রাম বন্দরের সমস্যা রেখে দিয়ে বিকল্প বন্দর দিয়ে সমাধানের চেষ্টা খুব বেশি উপযুক্ত পন্থা নয়।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের সমস্যাকে অগ্রাধিকার দিয়ে এটিকেই আগে সমাধানের দিকে নজর দিতে হবে। পায়রা রয়েছে, মংলা রয়েছে, পানগাঁও রয়েছে। সেগুলোর সমস্যাও সমাধান করতে হবে। কিন্তু সেগুলো দীর্ঘমেয়াদি কাজ। প্রতিদিন যে আমদানিকারককে কিংবা রপ্তানিকারককে চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন সমস্যার জন্য ডেমারেজ দিতে হচ্ছে সেই জায়গায় প্রথমে নজর দিতে হবে।

বৈঠকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর ছাড়া অর্থনৈতিক লক্ষ্য অর্জন সম্ভব নয়। এই উপলব্ধিটা কিন্তু রাজনৈতিক নেতৃত্ব বিশেষ করে মন্ত্রণালয় পর্যায়ে বুঝতে চাচ্ছে না। টুয়েন্টি থার্টির কথা যদি বলি তাহলে চট্টগ্রামকে নিয়েই তো আগাতে হবে। কিন্তু চট্টগ্রাম বন্দরের ক্ষেত্রে অমনোযোগের একটা চিত্র দেখছি।

তিনি বলেন, পরিস্কারভাবে বলতে হবে রাজনৈতিক অমনোযোগে অর্থনৈতিক ক্ষতি হচ্ছে। নীতিনির্ধারণে পেশাদারি মনোভাবের অভাব আছে।

পলিসি রিচার্স ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে এই ধরনের প্রবৃদ্ধির সুযোগ নাই। কলম্বো, সিঙ্গাপুর বন্দর তারা সিঙ্গেল ডিজিট গ্রোথ নিয়ে যুদ্ধ করছে। বিশ্বমন্দা হলে তাদের শিপিং ব্যবসায় ধস নামে। অথচ বাংলাদেশের গ্রোথ খুব ভালো। এটা পজিটিভ সাইন। কিন্তু দু:খের বিষয় হচ্ছে আমরা এটাকে কাজে লাগাতে পারছি না।

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, তিন-চার রকমের সমস্যা আছে। নীতিনির্ধারণ যারা করেন, তারা এক্ষেত্রে ভবিষ্যৎ কতটুকু চিন্তা করেন। পাঁচ বছর, দশ বছর, ২০ বছর, ৫০ বছর পর আমরা কোথায় যাব এই চিন্তাটা নীতিনির্ধারকদের আছে কি-না। স্টেকহোল্ডার যারা আছে তাদের নীতিনির্ধারণের পর্যায়ে রাখা হবে কি না, এসব বিষয় রাজনৈতিক নেতৃত্বকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

তবে বৈঠকে উপস্থিত চট্টগ্রাম বন্দরের সদস্য (প্রশাসন) জাফর আলম বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও চ্যালেঞ্জের সাথে বন্দরের গতিশীলতা বাড়ানোর কাজ চলছে বলে জানান। তিনি বলেন, ২৪ ঘন্টা বন্দর চালু রাখা ও সেবা নিশ্চত করাসহ বিভিন্ন অবকাঠামোগত উন্নয়ন কর্মকান্ড চলছে।

বক্তারা বলেন, দেশের আমদারি-রপ্তানি বাণিজ্যের ৯২ শতাংশই হয়ে থাকে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে। কিন্তু প্রতিযোগী বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে বন্দরের কাক্সিক্ষত সক্ষমতা না বাড়ায় প্রতিনিয়ত নানাভাবে ভোগান্তিতে পড়ছেন বন্দর ব্যবহারকারীরা।

‘সংকটে বন্দর, উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক এই গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে শিপার্স কাউন্সিল অব বাংলাদেশ।

চট্টগ্রাম ক্লাবে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে আরও বক্তব্য রাখেন এফবিসিসিআই’র পরিচালক নাসির উদ্দিন চৌধুরী, আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান বিএসএম গ্রুপের চেয়ারম্যান আবুল বশর চৌধুরী, চট্টগ্রাম বন্দরের সাবেক চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত রিয়ার অ্যাডমিরাল রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, বিকডার সভাপতি নূরুল কাইয়ূম খাঁন, সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি একেএম আকতার হোসেন, বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরোয়াডার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান আহসানুল হক চৌধুরী এবং বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান মালিক সমিতির কার্যকরী সভাপতি সৈয়দ মো.বকতিয়ার।

গোলটেবিল বৈঠক সঞ্চালনা করেন ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের হেড অব নিউজ মামুন আবদুল্লাহ।

সারাবাংলা/আরডি/টিএম

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর