Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পিডিবি ভবনে ঠিকাদারকে আটকে মারধর, ৬ যুবলীগ কর্মী গ্রেফতার

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৯ এপ্রিল ২০২১ ১৬:৪৩

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীর আগ্রাবাদে বিদ্যুৎ ভবনে চাঁদার দাবিতে এক ঠিকাদারকে মারধর ও নির্যাতনের অভিযোগে ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ওই ঠিকাদার জানিয়েছেন, যুবলীগ নেতা মোস্তফা কামাল টিপুর কর্মী পরিচয়ে তারা প্রতিটি প্রকল্পের কাজের দুই শতাংশ হারে চাঁদার জন্য গত দুইমাস ধরে হুমকি দিয়ে আসছিল।

সোমবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে নগরীর ডবলমুরিং থানার আগ্রাবাদে বিদ্যুৎ ভবনের ভেতরে একটি কক্ষে ওই ঠিকাদারকে আটকে নির্যাতন করা হয়ে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

গ্রেফতার ছয়জন হল- শাহানুর শাহিন (৫৩), মো. ইকবাল (৪৭), নুরুল কবির (৪৫), মো. তৌহিদুল আলম (৪০), ওসমান গনি দুলু (৪৫) এবং নুরুল আফছার টিপু (৪৫)।

নির্যাতনের শিকার মো. বশির উদ্দিন বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) একজন প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার এবং মেসার্স সালেহ এন্টারপ্রাইজের মালিক।

বশির উদ্দিন সারাবাংলাকে জানান, গত ফেব্রুয়ারি মাসে যুবলীগ নেতা মোস্তফা কামাল টিপুর কর্মী পরিচয়ে তার কাছে চাঁদা দাবি করা হয়। গত জুন থেকে পিডিবির যত প্রকল্পের কাজ তিনি করেছেন, সবগুলো থেকে দুই শতাংশ হারে চাঁদা দেওয়ার জন্য তাকে বলা হয়। সর্বশেষ তিনি কর্ণফুলী ইপিজেডে বিদ্যুতের ৩৩ কেভি সঞ্চালন লাইন স্থাপনের কাজ করছিলেন। চাঁদা না দিলে সেই কাজ বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।

বশির উদ্দিন বলেন, ‘তারা বারবার ফোনে ডিস্টার্ব করে। আমি কয়েকবার সময় নিই। এরপর দুইদিন আগে শাহীন ও টিপু ফোন করে বলে যে, টাকা না দিলে কর্ণফুলী ইপিজেডের কাজ করতে দেবে না। গত জুন থেকে যত প্রকল্পের কাজ আমি করেছি, সবগুলোর দুই শতাংশ হারে টাকা তাদের পরিশোধ করতে হবে। অন্যথায় আমার বাসায় গিয়ে হামলা এবং আমাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়। আমি আজ (সোমবার) তাদের সমঝোতা করার জন্য পিডিবি ভবনে ডেকেছিলাম। তারা আমাকে টেনেহিঁচড়ে ছয়তলা ভবনে পিয়নদের একটি কক্ষে নিয়ে যায়। সেখানে দরজা বন্ধ করে প্রথমে আমার মাথায় আঘাত করে। আমার দাড়ি টেনে ছিঁড়ে ফেলে। তখন আমি বাধ্য হয়ে ডবলমুরিং থানায় ফোন করি।’

ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন সারাবাংলাকে বলেন, ‘একটি প্রকল্পের টাকার দুই শতাংশ হারে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছিল। বশির উদ্দিন সেই টাকা না দেওয়ায় তাকে বিদ্যুৎ ভবনের ষষ্ঠ তলায় নিয়ে একটি কক্ষে আটকে মারধর শুরু করে। তিনি কোনোমতে থানায় ফোন করে বিষয়টি জানান। আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের হাতেনাতে আটক করি।’

নগর যুবলীগের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কথিত নেতা মোস্তফা কামাল টিপু এবং গ্রেফতার ছয়জন যুবলীগের কোনো পদে নেই। টিপু একেকসময় একেক নেতার নাম ভাঙিয়ে চলে। টিপু প্রথমে নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে পরিচয় দিত। এরপর কিছুদিন বন্দর আসনের সাংসদ এম এ লতিফ এবং বর্তমানে নগর যুবলীগের আহবায়ক মহিউদ্দীন বাচ্চুর অনুসারী হিসেবে পরিচয় দেন।

গত নভেম্বরে আগ্রাবাদে যুবলীগ নেতা আলমগীর চৌধুরী আলোর ছোট ভাই মারুফ চৌধুরী মিন্টুকে খুনের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার আসামি মোস্তফা কামাল টিপু। এ মামলায় তিনি কারাগারেও যান।

নগর যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক ফরিদ মাহমুদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘মোস্তফা কামাল টিপু যুবলীগের কোনো পদে নেই। যুবলীগের নাম ভাঙিয়ে চলে।’

সারাবাংলা/আরডি/এনএস

চাঁদা দাবি যুবলীগ কর্মী গ্রেফতার


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর