ফরিদপুরের অবকাঠামো উন্নয়ন: ফের বাড়ছে প্রকল্পের ব্যয়-মেয়াদ
২০ এপ্রিল ২০২১ ০৮:৩১
ঢাকা: ফের ব্যয় ও মেয়াদ বাড়ছে ‘ফরিদপুর জেলার অবকাঠামো উন্নয়ন’ প্রকল্পে। এবার বাড়ছে ৪৪ কোটি টাকা। যা প্রথম সংশোধনীর তুলনায় ৩.৯৭ শতাংশ বেশি। সেই সঙ্গে প্রকল্পের মেয়াদও বাড়ছে এক বছর। এজন্য প্রকল্পটির দ্বিতীয় সংশোধনী প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। গত বুধবার এ প্রস্তাবের ওপর অনুষ্ঠিত হয় প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা। ওই সভার কার্যপত্র সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
এদিকে, গত বছর পর্যন্ত প্রকল্পটির ক্রমপুঞ্জিত আর্থিক অগ্রগতি হচ্ছে ৬০৮ কোটি ৫৭ লাখ টাকা এবং বাস্তব অগ্রগতি হয়েছে ৬৪.৪৩ শতাংশ।
সূত্র জানায়, ফরিদপুর জেলার ৯টি উপজেলার গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য ‘ফরিদপুর জেলার গুরুত্বপূর্ণ পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পটি ৬২৫ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ২০১৬ সালের জুলাই হতে ২০২০ সালের জুনে বাস্তবায়নের জন্য ২০১৬ সালের ৯ আগস্ট একনেকে (জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি) অনুমোদিত হয়। পরবর্তীতে ডিপিপিতে (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) স্কিমগুলোর মধ্যে কিছু সড়ক অন্যান্য প্রকল্পের মাধ্যমে বাস্তবায়ন হওয়ায় তা বাদ দেওয়া এবং অগ্রাধিকার বিবেচনায় কিছু নতুন ফরিদপুরের স্কিম অন্তর্ভুক্ত করা, কানেকটিভিটি সম্পূর্ণ করতে কিছু রাস্তার দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি এবং দুইবার রেট সিডিউল আপডেট হওয়ার কারণে প্রকল্পের মেয়াদ এক বছর বৃদ্ধিসহ প্রথম সংশোধন করা হয়েছিল।
এটি ১ হাজার ১০৬ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ২০১৬ সালের জুলাই হতে ২০২১ সালের জুনে বাস্তবায়নের জন্য ২০১৮ সালের ৪ নভেম্বর একনেকে অনুমোদিত হয়।
বর্তমানে এই প্রকল্প থেকে ২৮০ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি ব্রিজ বাদ দেওয়া, ডিপিপিতে স্কিমগুলোর কানেকটিভিটি সম্পূর্ণ করার প্রয়োজনীয়তা, এলজিইডির হালনাগাদ রেট সিডিউল ২০১৯ কার্যকর হওয়ায় অবশিষ্ট কাজের ব্যয় সমন্বয়, এক বছর মেয়াদ বৃদ্ধি এবং পরিচালন ব্যয় বৃদ্ধির কারণে মোট ১ হাজার ১৫০ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ২০১৬ সালের জুলাই হতে ২০২২ সালের জুন মেয়াদে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দ্বিতীয় সংশোধিত ডিপিপি পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে।
প্রকল্পের মূল কার্যক্রম হচ্ছে- উপজেলা পর্যায়ে গ্রামীণ সড়ক, ইউনিয়ন পর্যায়ে গ্রামীণ সড়ক, গ্রামে গ্রামীণ সড়ক, এইচবিবি গ্রামীণ সড়ক এবং গ্রামীণ সড়ক মেরামত।
প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলা হয়েছে, ফরিদপুর জেলার ৯টি উপজেলার অবশিষ্ট কাঁচা সড়কের মধ্যে ৯৮.৮২ শতাংশ উপজেলা সড়ক, ৯৮.৯০ শতাংশ ইউনিয়ন সড়ক, ৪৮.৪৬ শতাংশ গ্রাম সড়ক এবং ২৩.৩৭ শতাংশ গ্রাম সড়ক উন্নয়নের মাধ্যমে কৃষি-অকৃষি অর্থনীতির সঞ্চলন বাড়ানো হবে। এছাড়া গ্রামীণ জনগণের জন্য গ্রাম, বাজার, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠানের যাতায়াত সুবিধা বৃদ্ধির মাধ্যমে জীবন যাত্রার মান উন্নয়ন এবং স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা।
প্রকল্প এলাকা হচ্ছে- ফরিদপুর জেলার ফরিদপুর সদর, বোয়ালমারী, আলফাডাংগা, সালথা, নগরকান্দা, মধুখালী, ভাঙ্গা, সদরপুর এবং চরভদ্রাসন উপজেলা।
পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের যুগ্ম প্রধান রবীন্দ্র বর্মণ স্বাক্ষরিত পিইসি সভার কার্যপত্রে প্রকল্প সংশোধনের কারণ হিসাবে বলা হয়েছে, স্টিয়ারিং কমিটির সুপারিশের কারণে ভাঙ্গা উপজেলায় একটি ব্রিজ প্রকল্প থেকে বাদ দেওয়া, ডিপিপিতে স্কিমগুলোর কানেকটিভিটি সম্পূর্ণ করতে সার্ভে প্রতিবেদন অনুযায়ী সড়কের দৈর্ঘ্য এবং বৃদ্ধি করা হবে। এছাড়া এলজিইডির নতুন রেট সিডিউল দর বৃদ্ধির কারণে পূর্ত কাজের একক ব্যয়ের সমন্বয়, বাস্তবায়ন মেয়াদ এক বছর বাড়ানোয় পরিচালন ব্যয় বাড়ছে।
সারাবাংলা/জেজে/এমও