Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘করোনা রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের দুর্ভোগ বাড়িয়েছে’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২২ এপ্রিল ২০২১ ২২:২০

ঢাকা: প্রাণে বেঁচে গেলেও রানা প্লাজার ধসের ঘটনায় আহত অনেক শ্রমিক এখন দুঃসহ জীবনযাপন করছেন। এখনও ১৪ শতাংশ শ্রমিকের স্বাস্থ্য অবনতির দিকে রয়েছে। তাদের মধ্যে ৫৮.৫ শতাংশ শ্রমিকের স্বাস্থ্য মোটামুটি স্থিতিশীল এবং ২৭.৫ শতাংশ সম্পূর্ণ স্থিতিশীল রয়েছে। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা অ্যাকশন এইড বাংলাদেশের এক জরিপে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির ৮ম বার্ষিকীতে ‘কোভিভ-১৯: চ্যালেঞ্জেস ফর দ্যা রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি সার্ভাইভর্স’ শীর্ষক প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) এক ভার্চুয়াল সংলাপে এ জরিপের ফলাফল তুলে ধরেন অ্যাকশন এইড বাংলাদেশ। সেখানে আরও বলা হয়, যে ১৪ শতাংশ শ্রমিকের স্বাস্থ্য অবনতির দিকে, তাদের মধ্যে বেশিরভাগই মাথাব্যথা, হাত ও পায়ে ব্যথা, কোমর ব্যথা এমন বড় সমস্যা নিয়ে জীবনযাপন করছেন।

বিজ্ঞাপন

জরিপের তথ্য অনুযায়ী মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়ে ১২.৫ শতাংশ এখনও মানসিক ট্রমার মধ্যে রয়েছেন। যা গত বছরে ছিল ১০.৫ শতাংশ। অর্থাৎ মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি হয়েছে গত বছরের চেয়ে ২ শতাংশ বেশি শ্রমিকের। তবে বর্তমানে ৬২ শতাংশ শ্রমিকের মানসিক স্বাস্থ্য মোটামুটি স্থিতিশীল রয়েছে। এ বছর ২৫.৫ শতাংশ শ্রমিকের মানসিক স্বাস্থ্যের দিক থেকে ভালো অবস্থানে আছেন যা গত বছর ছিলো ২১ শতাংশ। অর্থাৎ গত বছরের তুলনায় ৪.৫ শতাংশ বেশি শ্রমিক মানসিক স্বাস্থ্যের দিক থেকে উন্নতি লাভ করতে পেরেছেন।

রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় আহত এক হাজার চার’শ জন শ্রমিকের ডাটাবেজ থেকে দুই’শ জনকে নমুনা হিসেবে নিয়ে এ জরিপ চালায় সংস্থাটি। দুর্ঘটনার পর অনেকেই শারীরিক ও মানসিক কারণে কাজে ফিরে যেতে পারেননি। অনেকে কাজে ফিরলেও ঘুরাতে পারেনি ভাগ্যের চাকা। জীবন ধারনের তাগিদে অনেকে আবার বদলেছেন কাজের ধরন। তার ওপর করোনা মহামারি তাদের জীবনে মরার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দেখা দিয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বেশিরভাগ পরিবারেই উপার্জনক্ষম ব্যক্তি একজন, তার উপর করোনার প্রভাবে হ্রাস পেয়েছে উপার্জন। তাদের আয়ের চিত্রের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, এসব কাজ করে ১০.৫ শতাংশ শ্রমিক ৫ হাজার ৩০০ টাকার নিচে আয় করে। ৩৭.৫ শতাংশ শ্রমিক আয় করে ৫ হাজার থেকে ১০ হাজার ৩০০ টাকা। ২৯.৫ শতাংশ লোকের আয় ১০ হাজার ৩০০ টাকা থেকে ১৫ হাজার ৩০০ টাকার মধ্যে। উদ্বেগজনক হলেও সত্য ৯.৫ শতাংশ শ্রমিকের নেই কোনো আয়। অথচ এসব পরিবারে খাদ্য, বাড়িভাড়া, চিকিৎসা, বাচ্চাদের পড়াশুনা ইত্যাদি জরুরিখাতে ১০ হাজার টাকার বেশি ব্যয় হয়।

অন্যদিকে ৬৭ শতাংশ মানুষ কারখানাগুলোতে সঠিক নিয়মনীতি ও কর্মঘণ্টা বজায় রাখার কথা স্বীকার করলেও ৩৩ শতাংশ বলছেন কর্মক্ষেত্রে ঝুঁকি নিয়েই কাজ করেন তারা। কারখানাগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি তেমন মানা হচ্ছে না বলেও উদ্বেগ প্রকাশ করেন তারা।

এই ভার্চুয়াল সংলাপের উপস্থিত প্রধান অতিথি ও সংসদ সদস্য শিরিন আক্তার বলেন, ‘দেশে শ্রম আইনের বাস্তব প্রয়োগ হলে শ্রমিকদের সুযোগ-সুবিধা আদায় করা সম্ভব। তাছাড়া ক্ষতিপূরণ আইন স্বচ্ছভাবে তৈরি করা প্রয়োজন। কারখানায় সুন্দর কর্ম পরিবেশ, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহীতা তৈরি করার জন্য ট্রেড ইউনিয়ন, মালিকপক্ষ এবং সরকার পক্ষ একসাথে কাজ করতে পারে।’

পোশাক শ্রমিকদের জন্য সরকার থেকে করোনাকালীন প্রণোদনা ঘোষণা করেছে, সেটি শ্রমিকদের কাছে ঠিকমতো পৌঁছাচ্ছে কি না তা মালিকদের পাশাপাশি ট্রেড ইউনিয়নকেও এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।

সারাবাংলা/জেআর/এমও

করোনাভাইরাস পোশাক শ্রমিক

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর