আরমানিটোলার আগুনে লাশ বেড়ে ৪
২৩ এপ্রিল ২০২১ ১২:২১ | আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২১ ১৪:০০
ঢাকা: রাজধানীর আরমানিটোলায় হাজী মুসা ম্যানশনের পঞ্চম তলা থেকে আরও দুই মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। অগ্নিদগ্ধ হয়ে নিহত এই দুই জনই পুরুষ। এ নিয়ে ওই ভবন থেকে আগুনে দগ্ধ হয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো চার জনে।
শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) দুপুর পৌনে ১২টার দিকে এই দুই মরদেহ উদ্ধার করেছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। তাদের মধ্যে একজনের বয়স আনুমানিক ৬০ বছর। তিনি ওই ভবনে নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে কাজ করতেন। সকাল থেকেই নিখোঁজ ছিলেন। নিহত আরেকজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন-
- আরমানিটোলার আগুন নিয়ন্ত্রণে
- ‘সেহরির সময় প্রচণ্ড শব্দে বিস্ফোরণ হয়’
- আরমানিটোলায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত ২
- এখনও জ্বলছে কেমিকেল গোডাউন, বিস্ফোরণের আশঙ্কা
- আবারও পুরান ঢাকায় কেমিক্যাল গোডাউনে ভয়াবহ আগুন
এর আগে, সকালে ওই ভবনে আরও দু’জন অগ্নিদগ্ধ হয়ে নিহত হন। এর মধ্যে একজনের নাম রাসেল। তিনিও ওই ভবনের নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে কাজ করতেন। সকালে তার মরদেহ ওই ভবন থেকে উদ্ধার করা হয়।
এছাড়া অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় সুমাইয়া আক্তার (২২) নামে এক তরুণীকে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। সেখানে নেওয়ার পর জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সুমাইয়াকে মৃত ঘোষণা করেন। সুমাইয়া ইডেন কলেজে তৃতীয় বর্ষে পড়তেন।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপপরিচালক (ঢাকা মেট্রো) দেবশীষ বর্ধন সারাবাংলাকে বলেন, আরমানিটোলার ওই ভবন থেকে কিছুক্ষণ আগে আরও দু’জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে ওই ভবনের আগুনে এখন পর্যন্ত চার জনের মৃত্যু হলো। অগ্নিদগ্ধ আরও ১৭ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার মধ্যে আমাদের চার জন কর্মীও আছেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে আরমানিটোলার হাজী মুসা ম্যানশনে আগুন লাগে। একে একে ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিট সেখানে আগুন নেভাতে কাজ শুরু করে। প্রায় তিন ঘণ্টার চেষ্টায় শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) সকাল ৬টা ৮ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
আহতদের বরাত দিয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা জানান, ভবনটি হাজী মুসা নামে এক ব্যক্তির। তিনি দুই বছর আগে মারা যান। তার ছেলে মোস্তাক ভবনটি দেখাশোনা করেন। তবে তিনি নিজে ধানমন্ডিতে থাকেন।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আরও জানিয়েছেন, ভবনটির নিচ তলার একদিকে রাসায়নিক পদার্থের ছোট ছোট দোকান, অন্যদিকে এসব রাসায়নিক পদার্থের গোডাউন। গোডাউনে প্রচুর রাসায়নিক পদার্থ রাখা আছে। ভবনটির দ্বিতীয় তলায় একদিকে অফিস, অন্যদিকে দু’টি ফ্ল্যাট আবাসিক বাসা হিসেবে ভাড়া দেওয়া। তৃতীয় তলা থেকে ষষ্ঠ তলা পর্যন্ত সবগুলো ফ্ল্যাটেই আবাসিক বাসিন্দারা থাকেন।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, শেষ রাতে কেউ সেহেরি খেয়েছেন, কেউ খাচ্ছেন, কেউ সেহেরি খাওয়ার জন্য উঠেছেন— এমন সময়ে ভবনটিতে আগুন লাগে। ধোঁয়া আর কেমিকেল পোড়ার গন্ধে তারা বুঝতে পারেন নিচে আগুন লেগেছে।
সারাবাংলা/ইউজে/টিআর