Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শাশুড়ির সহযোগিতায় পুত্রবধূকে ধর্ষণের পর হত্যা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২৪ এপ্রিল ২০২১ ০৯:১৯

সুনামগঞ্জ: জেলার তাহিরপুর উপজেলায় গৃহবধূ আজমিনা আক্তার হত্যাকাণ্ডের চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে। শাশুড়ির সহযোগিতায় পুত্রবধূ আজমিনারকে ধর্ষণের পর হত্যা করেন আসামি গোলাপ মিয়া।

শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) আজমিনা হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনের পর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা র‌্যাব-৯ সিলেট সিপিসি-৩ সুনামগঞ্জ ক্যাম্পের উপ-পরিচালক লে. কমান্ডার সিঞ্চন আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেন। এর আগে গত মঙ্গলবার রাতে এই ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

বিজ্ঞাপন

জানা গেছে, হত্যাকান্ডের প্রধান আসামি গোলাপ মিয়ার সঙ্গে নিহত আজমিনার সম্পর্ক তৈরিতে সহযোগিতা করতেন তার শাশুড়ি হেলেনা বেগম। ছেলে শাহনুর মিয়া কৃষি শ্রমিক হিসাবে বাহিরে কাজ করতে গেলে গোলাপ মিয়াকে বাড়িতে ডেকে আনতেন হেলেনা বেগম। গত মঙ্গলবার রাতে হেলেনা বেগমের সহযোগিতায় ধর্ষিত হন আজমিনা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ধর্ষক গোলাপকে জুতাপেটা করেন আজমিনা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আজমিনার মাথায় টিউবওয়েলের (লোহার) হাতল দিয়ে আঘাত করেন গোলাপ। ফলে ঘটনাস্থলেই আজমিনার মৃত্যু হয়।

আরও জানা গেছে, এ সময় সেহরির সময় ঘনিয়ে এলে লাশগুমের চেষ্টা ব্যর্থ হয়। পরে শাশুড়ি হেলেনার সহযোগিতায় ওই রাতেই বাড়ির পাশে খড়খুটো দিয়ে আজমিনার মরদেহ ফেলে রেখে চলে যায় গোলাপ ও তার সহযোগিরা।

পুলিশ জানায়, এটি পূর্ব পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। মঙ্গলবার গভীর রাতে লোহার তৈরি টিউবওয়েলের ভারী হাতল দিয়ে আজমিনার মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে হত্যা করে ঘাতকরা। এরপর খড়খুটো দিয়ে লাশ ঢেকে রেখে যায়। আসামিরা তাদের অপরাধ স্বীকার করেছেন।

শুক্রবার সন্ধ্যায় লে. কমান্ডার সিঞ্চন আহমেদ বলেন, হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি গোলাপ গ্রামের প্রভাবশালী ও লাঠিয়াল। দারিদ্রতার সুযোগ নিয়ে আজমিনার শাশুড়িরকে টাকা-পয়সার লোভ দেখিয়ে এই সম্পর্ক তৈরি করে। শাশুড়ির সহযোগিতায় ইতিপূর্বে কয়েকবার দুই শিশু সন্তানের জননী আজমিনাকে ধর্ষণ করে গোলাপ। মঙ্গলবার আজমিনাকে হত্যার পর লাশ গুমের ঘটনায় সরাসরি সহযোগিতা করেন হেলেনা বেগম, গোলাপের সহযোগী সোহাগ মিয়াসহ আরও কয়েকজন।

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে এর আগেও ওই শাশুড়ি টাকা পয়সা খেয়ে বিভিন্ন মেয়ের সঙ্গে শারিরীক সম্পর্ক করার সুযোগ তৈরি করে দেয় গোলাপকে।

তাহিরপুর থানার ওসি মো. আব্দুল লতিফ তরফদার জানান, এই হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত আলামত জব্দ করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশ ও র‌্যাব চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

উল্লেখ্য, গত বুধবার সকালে উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের জামবাগ জৈতাপুর গ্রামের কৃষক শাহনুর মিয়ার স্ত্রী আজমিনার রক্তাক্ত লাশ খড়খুটো দিয়ে ঢাকা রাখা অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের শ্বশুর আমির হোসেন আমিরুল কয়েকজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে ওই দিন রাতে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলার একদিন পরেই তথ্য-প্রমাণাদির সাপেক্ষে আজমিনার শাশুড়িসহ তিন আসামিকে গ্রেফতার করে র‌্যাব।

গ্রেফতাররা হলেন— প্রধান আসামি উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের জামাবাগ জৈতাপুর গ্রামের মৃত নাজির হোসেনের ছেলে গোলাপ মিয়া, তার সহযোগী একই গ্রামের আকরম আলীর ছেলে সোহাগ মিয়া ও নিহত গৃহবধূর শাশুড়ি হেলেনা বেগম। শুক্রবার সন্ধ্যায় গ্রেফতারকৃতদের র‌্যাব তাহিরপুর থানায় সোর্পদ করেছে।

সারাবাংলা/এনএস

পুত্রবধূকে ধর্ষণের পর হত্যা শাশুড়ির সহযোগিতা

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর