Monday 25 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

অধ্যাপক ডা. শামসুজ্জামান তুষার আর নেই

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২৪ এপ্রিল ২০২১ ১৩:৩৭

ঢাকা: নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমিত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেলেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন অ্যান্ড রেফারেল সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল খায়ের মোহাম্মদ শামসুজ্জামান তুষার।

শনিবার (২৪ এপ্রিল) সকাল ৭টায় রাজধানীর মহাখালীর গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান বলে সারাবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. ফারুক আহমেদ।

বিজ্ঞাপন

অধ্যাপক ডা. ফারুক বলেন, তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ১২ এপ্রিল থেকে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

দেশে নভেল করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে শুরু থেকেই সম্মুখ সারির একজন নিবেদিত যোদ্ধা ছিলেন অধ্যাপক ডা. শামসুজ্জামান তুষার। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন অ্যান্ড রেফারেল সেন্টারের প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থায় কার্যকর ভূমিকা রাখতে কাজ করে যান অধ্যাপক তুষার। শুধুমাত্র একজন পরিচালক হিসেবেই নয়, প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে নিয়ে উৎসাহ দিয়ে একজন অভিভাবক হিসেবেই তিনি কাজ করে যেতেন। এককভাবে দেশে কোনো ল্যাবরেটরিতে সর্বোচ্চ সংখ্যক সাত লাখেরও বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে তার নেতৃত্বে। দেশে একদিনে সর্বোচ্চ সংখ্যক নমুনা পরীক্ষাও হয়েছে তার নেতৃত্বে।

শুধুমাত্র নমুনা পরীক্ষাতেই তার অবদান সীমাবদ্ধ ছিল না। অধ্যাপক ডা. শামসুজ্জামান তুষারের অবদান ছিল দেশের গবেষণা খাতেও। দেশের কোভিড-১৯ সংক্রমণের গতিবিধি বোঝার জন্য জরুরি জিনোম সিকোয়েন্সিংয়েও রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।

বিজ্ঞাপন

অধ্যাপক ডা. শামসুজ্জামান তুষারের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন অ্যান্ড রেফারেল সেন্টারে। একইসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদফতরসহ স্বাস্থ্য খাতে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ২ ডিসেম্বর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন অ্যান্ড রেফারেল সেন্টারের কার্যক্রম চালু করতে প্রশাসনিক অনুমোদন দেয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়।

রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে গড়ে ওঠা এ প্রতিষ্ঠানটির মাধ্যমে দেশের সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে সব ডায়াগনস্টিক ও ল্যাবরেটরির গুণগত মান নিশ্চিত হয়। পাশাপাশি দেশের দরিদ্র মানুষের জন্য এখানে সরকার নির্ধারিত মূল্যে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির সব ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার সুযোগ থাকবে। এছাড়া নতুন নতুন গবেষণার মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে প্রতিষ্ঠানটি।

এর আগে দেশে সরকারি পর্যায়ে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার সেবামূল্য নির্ধারিত থাকলেও, বেসরকারি পর্যায়ে তেমনটি ছিল না। ফলে বেসরকারি ডায়াগনস্টিক ও ল্যাবরেটরিগুলো তাদের ইচ্ছামতো সেবামূল্য নিয়ে থাকে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা দরিদ্র ও নিম্ন মধ্যবিত্তদের নাগালের বাইরে চলে যায়। তাছাড়া প্রায়ই দেখা যায়, অনেক প্রতিষ্ঠান অধিক সেবামূল্য নিয়েও মানহীন যন্ত্রপাতি ও রিএজেন্ট দিয়ে পরীক্ষা করে থাকে। এতে পরীক্ষার ফল সঠিক না হওয়ায় রোগীদের বিপাকে পড়তে হয়। এমনকি একজন রোগীর একই পরীক্ষার ফল একেক ল্যাবে একেক রকম পাওয়া যায়। তাছাড়া সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের ল্যাবগুলোর মান যাচাইয়ের কোনো ব্যবস্থা নেই। তাই সামগ্রিক দিক চিন্তা করেই এ ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।

এছাড়াও ল্যাবরেটরি মেডিসিনের ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রকারীর ভূমিকা পালন করার জন্যেও এই প্রতিষ্ঠানটি জাতীয়ভাবে রেফারেন্স ল্যাবরেটরি হিসেবে স্থাপন করা হয়।

সারাবাংলা/এসবি/এনএস

ডা. আবুল খায়ের মোহাম্মদ শামসুজ্জামান তুষার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন অ্যান্ড রেফারেল সেন্টার মৃত্যু

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর